মুম্বাই হামলা কাসাবের ফাঁসি কার্যকর

আলোচিত মুম্বাই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি তরুণ পাকিস্তানি জঙ্গি আজমল কাসাবের (২৫) ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে পুনের ইরাওয়াদা জেলে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

গত ৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছে কাসাবের প্রাণভিক্ষা চেয়ে করা আবেদনটি নামঞ্জুর হওয়ার পর এ রায় কার্যকর করা হলো।

রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে প্রাণভিক্ষ‍ার আবেদন খারিজ হওয়ার পর লস্কর-ই-তাইয়্যেবার এ সদস্যকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মুম্বাইয়ের আর্থার রোডের জেল থেকে পুনের কারাগারে আনা হয়। হয়। ইরাওয়াদা জেলে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত আসামিদের রাখার জন্য মহারাষ্ট্রের দুটি জেলের মধ্যে এটি একটি।

২০০৮ সালে গ্রেফতারের পর থেকেই কাসাবকে মুম্বাইয়ের আর্থার রোডের জেলের বুলেটপ্রুফ সেলে রাখ‍া হয়েছিলো।

ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই, হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গত বছরের অক্টোবরে মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

কাসাব ন্যায়বিচার পায়নি দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও চলতি বছরের আগস্ট মাসে তার আবেদনটি খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

রায়ে বলা হয়, কাসবকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না, কেননা তার অপরাধ ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শামিল।

রায় ঘোষণার পর বিচারক আফতাব আলম ও সিকে প্রাসাদ বলেন, “তার অপরাধের গুরুত্ব ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়ার বিষয় বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।”

আজমল কাসাব তার প্রাণভিক্ষার আবেদনটি প্রথম করে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে, যেটি চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে খারিজ হয়ে যায়। পরে এটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর অক্টোবর মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তার আবেদনটি নাকচ করে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর কাসাব ও তার অস্ত্রধারী সঙ্গীরা মোবাইল ফোন, বোমা ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুম্বাই আক্রমণ করেছিলো। মুম্বাইয়ের বিলাসবহুল হোটেল তাজমহল ও ওবেরয় ট্রাইডেন্ট, শহরের মূল রেলস্টেশন ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস ও একটি ইহুদি কেন্দ্রে হামলা করে তারা। এ ঘটনায় ১৬৬ জন নিহত হয়। কাসাব ও তার সঙ্গীরা প্রায় তিনদিন ধরে মুম্বাই নগরী অবরোধ করে রাখে, সৃষ্টি হয় এক নারকীয় পরিস্থিতি।

এই ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে একমাত্র জীবিত আজমল কাসাবের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে মে মাসে হত্যা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়া সহ ৮০টি অভিযোগ আনা হয়। মামলা চলাকালে কাসাবের ডিএনএ, আঙুলের ছাপ পরীক্ষা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ থেকে প্রমাণিত হয় যে তার ছুঁড়ে মারা এলোপাতাড়ি গুলি ও বোমায় বহু মানুষের করুণ মৃত্যু হয়েছে।

অন্যান্য আন্তর্জাতিক