জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যুক্ত না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করলেও বর্তমান বাস্তবতায় নিজের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অবস্থান বজায় রাখাকেই তিনি বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে মাহফুজ আলম এই অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেন। ‘আমার রাজনৈতিক অবস্থান’ শিরোনামে দেওয়া পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই আন্দোলনের সময় নাগরিক কমিটি ও এনসিপির নেতৃত্বে যারা সক্রিয় ছিলেন, তাদের অনেকেই তার সহযোদ্ধা। সে কারণে গত দেড় বছরে প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি পরামর্শ, দিকনির্দেশনা ও নীতিগত সহায়তা দিয়ে এসেছেন।
পোস্টে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো, ফ্যাসিবাদবিরোধী সাংস্কৃতিক সংগ্রাম, সামাজিক ফ্যাসিবাদের মোকাবিলা, সমঝোতা এবং মানবিক সমাজ গঠনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে তিনি ধারাবাহিকভাবে কথা বলে আসছেন। এসব ধারণা এনসিপি ও নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকেও উঠে এসেছে, তবে সেগুলো কতটা গভীরভাবে ধারণ করা হয়েছে—তা নিয়ে তার প্রশ্ন রয়েছে।
মাহফুজ আলম আরও জানান, এনসিপিকে একটি বৃহৎ ‘জুলাই প্ল্যাটফর্ম’ হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে দাঁড় করানোর জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়েছিলেন, কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, সহযোদ্ধাদের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্ব অটুট থাকবে, তবে তিনি এনসিপির আনুষ্ঠানিক অংশ হচ্ছেন না। জামায়াত-এনসিপি জোট থেকে প্রস্তাব না পাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, কোনো একটি আসনে জোটের প্রার্থী হওয়ার চেয়ে নিজের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখাই তার কাছে বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
বর্তমান পরিস্থিতিকে তিনি এক ধরনের ‘শীতল যুদ্ধের’ সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এই সময়ে নির্দিষ্ট কোনো পক্ষ না নিয়ে নিজস্ব বক্তব্য ও নীতিতে অবিচল থাকাই বুদ্ধিমানের। তিনি মনে করেন, বিকল্প ও তরুণ নেতৃত্বনির্ভর জুলাই শক্তির সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি।
শেষে মাহফুজ আলম জানান, ভবিষ্যতেও তিনি তার বিশ্বাস ও নীতির জায়গা থেকে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবেন।