1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৩ অপরাহ্ন

বিমানে সাফল্য দেখিয়েও আক্রোশের শিকার!

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ মে, ২০১২
  • ৬৭ Time View

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রাজস্ব আয় বাড়িয়ে রেকর্ড সফলতা এনে দিয়েছিলেন তিনি। তারপরেও এয়ারলাইন্সের সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীউল ইসলামের রোষানলের শিকার হতে হয় বিমানের পরিচালক (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজকে।

শাহ নেওয়াজ বিমানের মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক হিসেবে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়কালে তিনি রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের রাজস্ব আয় ৩০০ কোটি টাকায় উন্নীত করেন। বিমানের প্রতিটি ফ্লাইটে ৭৬ শতাংশ যাত্রী পরিবহন (কেবিন ফ্যাক্টর) করতে সক্ষম হন। এর মাধ্যমে এয়ারলাইন্সের মোট রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করেন ৩০ শতাংশ।

এরকম ঈর্ষণীয় সফলতা দেখানোর পরেও শাহ নেওয়াজকে বিমানের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীউল ইসলামের আক্রোশের শিকার হতে হয়। তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। শাহ নেওয়াজ পুরোদস্তুর একজন পেশাদার মার্কেটিং কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তাকে পাঠানো হয় ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগের মতো ডাম্পিং পদে।

রোববার পুনরায় তিনি আগের পদে (মার্কেটিং পরিচালক) বদলি হন। ক্যাপ্টেন শেখ নাসিরউদ্দিন আহমেদ বিমানের নতুন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদানের তৃতীয় কর্মদিবসেই শাহ নেওয়াজকে আগের পদে ফিরিয়ে আনেন।

বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জাকীউল ইসলামের অপকীর্তির এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য সফলতা সত্ত্বেও শাহ নেওয়াজকে বদলি করার পেছনের ঘটনা ছিল ভিন্ন। শাহ নেওয়াজ বিমানের খেলোয়াড় কোটায় ঢাকা-লন্ডন, ঢাকা-জেদ্দার মতো গুরুত্বপূর্ণ রুটে খেলোয়াড়-টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ লং রুটে বিনামূল্যের টিকিটে বিমানের আর্থিক ক্ষতি বেশি হয়। এক হিসাব থেকে দেখা গেছে, বিগত ১০ বছরে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক হিসেবে এ ধরনের ‘বিনামূল্যের’ টিকিটে বিমানের প্রায় ৮০ কোটির টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে (শাহ নেওয়াজের বিরোধিতায় খেলোয়াড় কোটার টিকিট তখন বন্ধ না হলেও পরে এটি বন্ধ করা হয়।

ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন ও টেবিল টেনিসে বিমান দল গঠন করে থাকে। আর এজন্য নগদ টাকার পরিবর্তে বিমান একাধিক টিকিট দিয়ে থাকে।

শাহ নেওয়াজের দায়িত্বকালে বিমানের রেকর্ড রাজস্ব আয়ের (৩০০ কোটি) পরেও বিমানকে ওই অর্থ বছরে লোকসান দিতে হয়েছে ১৯৯ কোটি টাকা। রাজস্ব আয় বাড়ার পরেও লোকসানের জন্য শাহ নেওয়াজকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান বিমানের সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীউল ইসলাম। এছাড়া সংস্থার সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারক ফোরাম পরিচালনা পর্ষদে শাহ নেওয়ারজকে হেয় করার চেষ্টা করা হয়। জাকীউল ইসলামের ইন্ধনে পর্ষদ এ সময় শাহ নেওয়াজের কাছে জানতে চায়, এত রাজস্ব আয়ের পরেও বিমানে লোকসান কেন?

সাধারণত, ফ্লাইটপ্রতি যাত্রী পরিবহন ৬৫ শতাংশ হলেই যেকোনো এয়ারলাইন্স লাভ করে থাকে। অথচ বিমানের যাত্রী পরিবহন ৭৬ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও লোকসান হয়।

শাহ নেওয়াজ পর্ষদের কাছে লোকসানের ফিরিস্তি দিতে গিয়ে বলেছিলেন, মার্কেটিং বিভাগ শুধু প্রতিষ্ঠানের আয় বৃদ্ধির কাজ করে থাকে। কিন্তু ব্যয়ের সঙ্গে বিমানের খোদ ব্যব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অন্যান্য বিভাগ ও এর পরিচালককরা জড়িত। তাই আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যয় বাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানকে লোকসানি হিসেবে দাঁড় করানোর দায়ভার মার্কেটিং পরিচালকের নয়।

তার এ বক্তব্যে বিমানের পরিচালনা পর্ষদ সন্তুষ্ট হলেও জাকীউল ইসলাম হননি। তিনি সবকিছু জেনে-শুনে নিজের ব্যর্থতার সব দায় চাপান মার্কেটিং পরিচালকের ওপর। খেলোয়াড়দের বিনামূল্যের টিকিট ও আয় বৃদ্ধি সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানের লোকসানের ব্যাখ্যার কারণে জাকীউল প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন শাহ নেওয়াজের ওপর। যার ফলে জাকীউলের আক্রোশের বশে  ডাম্পিং পোস্টিং হিসেবে তাকে বদলি করা হয় ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীউল ইসলামের সঙ্গে পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি এখন আর বিমানে নেই। তাই এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।“

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ থেকে মার্কেটিং বিভাগের ওপর মাস্টার্স শেষ করে ১৯৮৪ সালে তিনি বিমানের প্রধান কার্যালয়ে যোগ দেন কমার্শিয়াল অফিসার হিসেবে। এরপর আবুধাবিতে কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে চার বছর সফলভাবে দায়িত্ব পালন ও টোকিওতে কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন। অবশেষে ২০০২ সালে তিনি উপ-মহাব্যবস্থাপক হিসেবে পুনরায় বিমানের প্রধান কার্যালযে যোগ দেন। যোগ দিয়েই তিনি ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব নেন। ২০০৩ সালে মহাব্যবস্থাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৯ সালে পরিচালক (মার্কেটিং) হিসেবে পদোন্নতি পান। আন্তরিকতা ও সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য বিমানে তার সুনাম রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ