ধ্বংস হোক সকল অপশক্তি, জয় হোক মানবতার

মাহবুব-উল-আলম খান :

নরসিংদির জনপ্রিয়  মেয়র লোকমান হোসেন হত্যা একটা জঘন্যতম, বর্বরতম হত্যা। সকল আসামীদের পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। এই বর্বরতম হত্যার নিন্দা জানানোর ভাষা জানা নেই। এভাবে যদি জনপ্রিয়, জনকল্যাণকারী ও সৎ নেতাগণ হত্যা হন এর জবাব কি? বিগত জোট সরকারের কুকর্ম যদি বর্তমান সরকারের সময়ও সংঘটিত হয় তাহলে আমরা যাব কোথায়? মানুষ আইনের শাসন, সুশাসনের জন্য পরিবর্তন এনেছে। মানুষের প্রত্যাশা যদি ব্যহত হয় এদেশের শান্তি প্রিয় মানুষের ঠিকানা কোথায় হবে? ১৯৭৫ সনে জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে যে হত্যার রাজনীতি তখনকার ক্ষমতাসীনরা, হত্যার সুবিধাভোগীরা চালু করেছে এর শেষ কোথায়? জাতির জনক হত্যার পর জেল খানায় আটক জাতীয় চার নেতাকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শত শত মুক্তিযোদ্ধা সেনানী, সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়। গোপনে, প্রকাশ্যে নির্বিচারে হত্যা চলে। জিয়াউর রহমান নির্বিচারে এইসব হত্যা করেছেন নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য। ইতিহাসের দুই মীরজাফর (খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান) বাংলার ইতিহাসকে কলংকিত করেছে, রক্তাক্ত করেছে। ১৯৭১ সনে যুদ্ধ করে বর্বর পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাজিত করে একটি স্বপ্ন-সুখের বাংলাদেশের জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। স্বাধীনতার তিন বছরের মাথায় পরাজিত শক্তির দোসররা ক্ষমতসীন দলে লুকিয়ে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের লক্ষ্য অর্জনে সাফল্য লাভ করে। তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতার মূল্যবোধ, মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা, চেতনা, শ্লোগান ও স্বপ্নকে নির্বাসনে পাঠানো হয়। জাতি হতচকিত, স্তম্ভিত। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে মোশতাক ও জিয়া ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ফেলল। মুক্তিযুদ্ধের অমিততেজ শ্লোগান ‘জয়বাংলা’ হয়ে গেল ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’, বাংলাদেশ বেতার হয় রেডিও বাংলাদেশ। এমনিভাবে মুক্তিযুদ্ধের বাঙালীর চেতনাকে ধাবিত করা হল পাকিস্তানী চেতনায়, মুক্তিযুদ্ধের অমিততেজ  গান গুলি নির্বাসনে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হল। জাতির জনকের অর্জনগুলি মুছে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হল। বুটের তলায় পিষ্ঠ হল গণতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা আর স্বাধীনতার সুমহান অর্জন। হাজার বছরের বাঙালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, আবহমান বাংলার প্রবহমান গতিধারাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হল। সামরিক শাসনের যাতাকলে পিষ্ঠ হতে লাগল এদেশের জনগণ। নিজের লোকের হাতে নিহত হলেন জিয়াউর রহমান, কিন্তু ক্ষমতা রয়ে গেলে একই ধারায়। একে একে সাত্তার, এরশাদ, খালেদা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেন। স্বাধীনতার সিংহভাগ সময় সামরিক চিন্তা-চেতনায় ধাবিত হল এদেশ। একাত্তুরে এদেশের মুক্তি পাগল মানুষ পাকিস্তানী শাসন শোষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল সামরিক শাসনের অত্যাচার হতে মুক্ত হয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার জন্য। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস স্বাধীনতার মাত্র তিন বছরের মধ্যে দেশ ও জাতি আবার সেই অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত হল। সুজলা, সুফলা শষ্যশ্যামলা সোনার বাংলাকে ধাবিত করা হল পাকিস্তানী ধ্যান-ধারনায়। লক্ষ শহীদের রক্তে অর্জিত সুমহান স্বাধীনতাকে অপমানিত করা হল। কতিপয় বিপথগামী ষড়যন্ত্রী সেনা সদস্য শিশু রাষ্ট্রকে অংকুরেই বিনাশ করতে চাইল।

দীর্ঘ ২১ বছর জাতি ধুকে ধুকে চলছে আলোর হাতছানির জন্য। অবশেষে অনেক রক্ত, ত্যাগ ও সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সনে স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারল। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেল। সামগ্রিক ক্ষেত্রে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালানো হল। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে সরকার একটি সুষ্ঠুধারা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হল। কিন্তু ২০০১ এর সালসা নির্বাচনে জাতিকে আবার অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত করা হল। ২০০১-২০০৬ এর সরকার দেশকে আইয়ামে জাহেলিয়াতে নিয়ে গেল। রাজনীতিতে, প্রশাসনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বক্ষেত্রেই ধ্বংসের খেলা চলল। হত্যা, সন্ত্রাস, লুন্ঠন, ধর্ষণ, বোমাবাজী, জঙ্গী তৎপড়তায় ছেয়ে গেল দেশ। হাওয়া ভবন, বাংলা ভাই ইত্যাদি জাতীয় অপশক্তির, অপতৎপড়তায় ছেয়ে গেল দেশ। জাতি অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করল মুক্তিযুদ্ধের সুমহান অর্জনের ধ্বংসের। অত্যন্ত চতুরতার সাথে জিয়াউর রহমান রাজনীতিকে ধ্বংস করতে লাগলেন। ও রিষষ সধশব ঢ়ড়ষরঃরপং ফরভভরপঁষঃ ভড়ৎ ঃযব চড়ষরঃরপরধহং এই বাক্য উচ্চারণ করে দেশ ও জাতিকে পেছনে ধাবিত করার সকল প্রকার প্রক্রিয়া চালালেন। তার পদাংক অনুসরণ করেই এরশাদ ও খালেদা জিয়া এদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা ভোগ করলেন। দেশ ও জাতি ৭১ এর চিন্তা-চেতনা হতে অনেক দূরে নিক্ষিপ্ত হল। এদেশের বহু বাম ও ডান রাজনীতিবিদগণ বিশেষ করে জামাত, মুসলিমলীগ মাওলানা ভাসানীর শিষ্যগণ সামরিক শাসনের পদলেহনের প্রতিযোগিতায় নামলেন। কতিপয় সামরিক বেসামরিক দূর্নীতিবাজ আমলারা তাদের সঙ্গী হলেন। আয়ূব ইয়াহিয়ার প্রেতাত্মারা মহাসমারোহে এগিয়ে চলল। এভাবেই দীর্ঘ ত্রিশ বৎসর এই অপশক্তি জাতির উপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসল। বাঙালী জাতির হাজার বছরের অর্জনকে ধূলিস্যাৎ করার প্রচেষ্টা চলল। এই অপশক্তির অবিচার, অত্যাচার, অন্যায় শাসন, শোষন ও লুণ্ঠনে দেশবাসী অতিষ্ঠ হয়ে দূর্বার গণ আন্দোলন সৃষ্টি করল। গণ জোয়ারে ঐক্যবদ্ধ হল দেশবাসী। চারদলীয় জোটের অপকর্মের দোসর রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন শত চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারলেননা খালেদা নিজামির সরকারকে। চারদলীয় জোট সরকার আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন সৃষ্টি করেছিল। বিচারপতিদের বয়স বৃদ্ধি করে নিজদলীয় বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করতে চেয়েছিল। সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছিল। হত্যা, সন্ত্রাসে সাড়া দেশ ছিল জর্জরিত। নিবেদিত প্রাণ সৎ মানুষদের হত্যা করে জাতিকে মেধা শূন্য করার প্রক্রিয়া চলছিল। হাওয়া ভবনের হস্তক্ষেপে প্রশাসন, রাজনীতি, অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছিল। দূর্নীতিতে চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। শেষ ছোবল মারল রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদ নিয়োগের সকল ধাপকে উপেক্ষা করে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন নিজেই এই পদ গ্রহণ করে বসলেন। বেশিরভাগ উপদেষ্টাই চার দলীয় জোট সরকারের আজ্ঞাবহ ছিল। মতিন, মঈনুল, ফজলুল হক ইত্যাদি জাতীয় লোকেরা হলেন উপদেষ্টা। নানা প্রকার ফন্দিফিকির করেও খালেদা-নিজামী ইয়াজউদ্দিন চার দলীয় জোট সরকারের ব্লুপ্রিন্ট বাস্তবায়ন করতে পারলেন না। ১/১১ এর ঘটনা তাদের সকল স্বপ্ন সাধ ধুলিস্যাাৎ করে দিল।

এই পটভূমিতে সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হলো। ফখরুদ্দিন আহম্মদ চার দলীয় জোট সরকারের বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণরকে প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োজিত করা হলো। কিছু দিন পর শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হলো, তারপর খালেদা জিয়াও গ্রেফতার হলো। অনেক রাজনীতিবিদ গ্রেফতার হলো। ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ত্রাসের সৃষ্টি করা হলো। ইয়াজদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বে এক আজব সরকার দেশ শাসন করল প্রায় দুই বছর। ইতোমধ্যে ড. মোঃ ইউনুস, ফেরদৌস আহম্মেদ কোরেশি, জেনারেল ইব্রাহিম ইত্যাদিগণ নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়া করলেন। অনেকে বিভিন্ন দলে যোগ দিলেন। নানাবিধ কর্মকান্ড ষড়যন্ত্র ইত্যাদির মধ্যে দেশ চলল বিশৃঙ্খলভাবে। ড. এ.টি.এম. শামসুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত হলো নির্বাচন কমিশন। ভোটার তালিকা তৈরি হলো। খালেদা-নিজামী প্রণীত প্রায় দেড় কোটি ভুয়া ভোটার বাতিল হলো। অবশেষে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের পর দুই নেত্রীকে মুক্তি দিতে বাধ্য হলেন ফখরুদ্দিন সরকার। নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হলো। প্রায় দুই বছর পর ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় নির্বাচন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার আজ ক্ষমতাসীন। ষড়যন্ত্র শেষ হয়ে যায়নি। ষড়যন্ত্রের নীল নকসায় ২৫ ফেব্র“য়ারী ২০০৯ বিডিআর হত্যা দিয়ে সরকারকে বিপদে ফেলার প্রচেষ্টা হলো। সরকার শক্ত হাতে এই ষড়যন্ত্র সামলে নিলেন। পরপর চলল নানাবিধ অপকর্ম। পরাজিত শক্তি তাদের সকল ক্ষমতা, অপকর্ম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এই সরকারকে ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বর্তমান সরকার উহা বুঝতে পারছেন কিনা বোধগম্য নয়। বুঝতে না পারলে পতন ঠেকানো যাবে কি? তাই সরকারকে দ্রুত নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। মানুষের মৌলিক চাহিদার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। সকল মন্ত্রণালয়ের কর্মকান্ডে গতি আনতে হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা বজায় রাখতে হবে। প্রশাসনকে গতিশীল করতে হবে। উপযুক্ত কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত করতে হবে। ২০০১ সালে চাকুরিচ্যুত, পদোন্নতি বঞ্চিতদের মূল্যায়ন করতঃ দ্রুত এদের পদায়ন প্রয়োজন। ২০০১-২০০৬ সনের সুবিধাভোগীরা স্যাবোটেজ করে যাচ্ছে। সর্বোপরি মন্ত্রীসভার আশু পরিবর্তন একান্ত অপরিহার্য্য। অনেক মন্ত্রী ব্যর্থ, তাদের অবিলম্বে বাদ দিয়ে অভিজ্ঞ, দক্ষ রাজনীতিবিদদের মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভূক্তি এখন সময়ের দাবী। তিন বছর চলে গেছে। বাকী দুই বছরে নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে না পারলে সাধারণ মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেবে। সরকার প্রধানকে যদি সব কাজে হাত দিতে হয় তাহলে দেশ চলতে পারেনা। স্ব স্ব দায়িত্ব সংশ্লিষ্টগণ নিজ দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবেন উহাই প্রত্যাশা। উপদেষ্টাদের নিয়েও নানাবিধ কথা উঠেছে। সরকার প্রধানকে এদের ব্যাপারে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে। যে আশা নিয়ে, স্বপ্ন নিয়ে মহাজোটকে এদেশের জনগণ মহাবিজয়ী করেছে, উহার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। মানুষের আশা আকাঙ্খার বাস্তবায়ন করতে হবে। নানাবিধ অপকর্ম ও অঘটন সংঘটিত হচ্ছে নিত্য দিন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিও যদি খালেদা-নিজামী জোট সরকারের ভাবধারায় অপকর্মে রত হয় তাহলে মানুষ কোথায় যাবে? সর্ষের ভিতর লুকিয়ে থাকা ভুতদের তাড়াতে হবে অবিলম্বে। এখনো সময় আছে সকল ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে জনগণকে দিতে হবে সুশাসন, আলোকিত প্রশাসন। এখন প্রধান কাজ নির্বাচনী অঙ্গীকার দ্রুত বাস্তবায়ন।

নরসিংদিতে যে মর্মান্তিক হত্যাকান্ড ঘটল এর দ্রুত বিচার সকল মানুষের দাবী। দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান দেশবাসীর দাবী। বিরোধীদল এসবের ফায়দা লুটছে। সরকার এসব বুঝতে পারছেন কি? নিজেরা মারামারি, হত্যা, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি করলে পরাজয় ডেকে আনা হবে। ২০০১-২০০৬ এর করুন স্মৃতি দেশবাসী ভুলে যায়নি। সেইভুল সরকার করবেন না উহাই কামনা ও প্রার্থনা। নরসিংদির ঘটনা দিয়ে সরকার সাবধান হোন এবং দ্রুত এর বিহিত ব্যবস্থা করুন। দায়ী ব্যক্তি নিজ দলের হলে তাকে চরম শাস্তি দিন এবং দেশবাসীকে সতর্ক করে দিন। মেয়র লোকমান হোসেনের মতো আহসান উল্লাহ মাস্টারের মতো, কিবরিয়ার মতো, গোপালকৃষ্ণ মুহুরীর মতো এমনসব বিগত খালেদা-নিজামী জোট আমলে শত হত্যার মতো আর কোন হত্যা যেন এদেশে আর না হয়। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার মতো হত্যা আর যেন না ঘটে। দুঃশাসনের অবসান হোক। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক। সর্বক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক। সরকার সকল ভুল-ভ্রান্তি কাটিয়ে এগিয়ে চলবেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। মানুষ চায় সুখ ও শান্তি। বর্তমান সরকার জনগণমন-নন্দিত সরকার। বিপুল ভোটে জয়ী এই সরকার এ কথা যেন ভুলে না যান। সকল ক্ষেত্রে সফলতা আসুক। সৎ মানুষ লোকমান হোসেনের মর্মান্তিক হত্যা সরকারকে জাগ্রত করুক। জনতার দাবী হত্যার বিচারের অবিলম্বে   বাস্তবায়ন। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখার জন্য দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সকল দুঃশাসন কাটিয়ে সরকার এগিয়ে যাবে সামনের দিকে সাধারণ মানুষের উহাই কামনা। সার্বিক ক্ষেত্রে হযবরল অবস্থা কাটিয়ে মহাজোট সরকার এদেশের মানুষকে একটি জনকল্যাণকামী সরকার উপহার দেবে উহাই প্রার্থনা। হত্যার রাজনীতির অবসান হোক, কল্যাণের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হোক এই প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত হয়ে সরকার সকল বাধা বিপত্তি কাটিয়ে এগিয়ে যাবেন সামনের দিকে এই আশায় মানুষ চেয়ে আছে অধীর আগ্রহে। মানুষে মানুষে দলে দলে রচিত হোক ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন। একাত্তুরের চেতনায় আমরা গড়ে তুলি সুখী ও সমৃদ্ধশালী এক ডিজিটাল বাংলাদেশ। মেয়র লোকমান  হোসেনের আত্মার শান্তি কামনা করি। সকল ষড়যন্ত্র কাটিয়ে সরকার এগিয়ে চলুক কল্যাণের পথে। সরকার হবে জনকল্যাণে। জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হোসেনের অকাল ও মর্মান্তিক মৃত্যু সরকারকে নাড়া দিক। এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে ফুটে উঠুক অনাবিল হাসি। ধ্বংস হোক সকল অপশক্তি, জয়হোক মানবতার।

(লেখক: সাবেক সচিব)

পাঠক মতামত