1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৫ অপরাহ্ন

নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হবে, নির্বাচনী মিছিলে আপনাদের সঙ্গে থাকব

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১১ Time View

নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বারবার ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে প্রমাণিত হয়েছে, ২০২৪ সালে প্রমাণিত হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে প্রমাণিত হয়েছে, জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে জনতার বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। আমি দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে গ্রামেগঞ্জে, নগরে-বন্দরে, বাজার-মহল্লায়, অলিগলিতে-রাজপথে জনগণের নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকব ইনশাআল্লাহ।

গতকাল সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নিজের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক নিবন্ধটি আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দলিল বলে জানান তারেক রহমান।

সবাইকে একটি বিষয় স্মরণ করে দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের রং-রূপ-চেহারা হয়তো পাল্টেছে, চরিত্র কিন্তু পাল্টায়নি। একটি বিষয় আমাদের সবার স্মরণে রাখা দরকার, সতর্ক থাকা দরকার।
সেটি হলো, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশি-বিদেশি অপশক্তি তখনো যেমন সক্রিয় ছিল, এখনো সক্রিয়।’

ক্ষমতায় থাকাকালে শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে বলে অভিযোগ করে তারেক রহমান বলেন, ‘পতিত পলাতক একটি চক্র স্রেফ নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে দলীয় ইতিহাসে পরিণত করার অপরিণামদর্শী অপচেষ্টার কারণেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত একটি চক্র বিজয়ের নতুন ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা করছে।

স্বনির্ভর সমৃদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পরাজিত চক্রকে মোকাবেলায় প্রতিশোধ প্রতিহিংসার পরিবর্তে বিজয়ের সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্বনির্ভর-সমৃদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই হোক এবারের বিজয় দিবসের অঙ্গীকার।
আমি মনে করি, বিএনপি মনে করে, যত দিন পর্যন্ত এই রাষ্ট্রে জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা যাবে না, ততদিন পর্যন্ত স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে না।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে আজ পর্যন্ত যতবার দেশে গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন হয়েছে আমরা দেখেছি ততবারই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর কিংবা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে এর সত্যতা প্রমাণিত। জনগণকে ক্ষমতাহীন করে রাষ্ট্রযন্ত্র কখনো ক্ষমতাশীল হয়ে উঠতে পারে না।’ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সব সময় রাষ্ট্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই যেকোনো মূল্যে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।
দেশের জনগণ সাক্ষী, অকারণ শর্তের পর শর্তজুড়ে দিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একাধিক চক্র নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বারবার নানা রকম বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ, সব রকম বাধা উপেক্ষা করে প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় পর নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জনগণের সেই কাঙ্ক্ষিত সেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করেছে।’

ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু এখনো থেমে নেই জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদিকে গুলি করা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। কী ছিল হাদির অপরাধ? আমি মনে করি, কয়েকটি প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে ঘাতকদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে। নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বহাল রাখা গেলে কারা লাভবান হবে? দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের লাভ? আমি বিশ্বাস করি, এসব প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই হাদির ঘাতকরা লুকিয়ে রয়েছে। স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের শত্রুরা ঘাপটি মেরে রয়েছে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘যারা স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে ইনশাআল্লাহ। ভয়ের কিছু নেই, মানুষের জয়-পরাজয় ও জীবন-মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর হাতে নির্ধারিত। সুতরাং আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি, ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই পিছু হটতে বাধ্য হবে।’

তারেক রহমান বলেন, “আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেবল ‘এক্সপেরিমেন্ট আর এক্সপেরিয়েন্স’ অর্জনের নির্বাচন নয়। আমি বারবার বলেছি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অতীতের যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ। এবারের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন-সাধ-আশা-আকাঙ্ক্ষা-স্বার্থ ও সম্ভাবনা। সর্বোপরি এবারের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব সুসংহত রাখার প্রশ্ন।”

আগামী দশকটি হবে রূপান্তরের দশক জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আমাদের ‘দেশ গড়ার কর্মসূচি’ বাস্তবায়নের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছি। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, চার কোটির বেশি তরুণ, কোটি কোটি কৃষক-শ্রমিক, কর্মক্ষম এই জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বিজয়কে সুসংহত করাই বিএনপির লক্ষ্য। একটি স্বনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার মাধ্যমেই আমার-আমাদের আগামীর প্রতিটি বিজয় দিবসকে আরো গৌরবান্বিত এবং আরো অর্থবহ করে তুলতে চাই।”

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ, ২০২৪ সালের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে শহীদ এবং ৭১ থেকে আজ পর্যন্ত দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন তারেক রহমান।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ