1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন

জ্ঞান অর্জন করা মুসলমানের অপরিহার্য দায়িত্ব

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১২
  • ১৮৫ Time View

জ্ঞান হল মানুষের জীবন চলার পথে আলো। আলো ছাড়া যেমন কেউ পথ  চলতে পারে না, তেমনি জ্ঞান ছাড়াও প্রকৃত মানুষ হিসেবে জীবনযাপন করা যায় না।

ঈমানদার ব্যক্তি জ্ঞানী হবে-এটাই ঈমানের দাবি। পবিত্র কোরানের বহু আয়াতে জ্ঞানার্জনের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হাদীসের বিশুদ্ধ  যত কিতাব রয়েছে তার সবগুলোতে কিতাবুল ইলম্ বা জ্ঞানার্জন বিষয়ক অধ্যায় রয়েছে। যাতে উপস্থাপিত হয়েছে এই বিষয়ের ওপর আল্লাহর নবীর (সা.) মুখ নিঃসৃত শত শত হাদীস।

ইসলামী আইন শাস্ত্রের যত গ্রন্থ রয়েছে তার সবগুলোতে জ্ঞানার্জন বিষয়ক অধ্যায় কিতাবের অগ্রভাগে সন্নিবেশিত হয়েছে। পবিত্র কোরানে এরশাদ হয়েছে, ‘‘পাঠ করুন আপনার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন” (সূরা আলাক, আয়াত-১)।

জ্ঞানী ব্যক্তিদের প্রশংসায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন, “আর আমি ওই দৃষ্টান্তগুলো মানুষের উপদেশ গ্রহণের উদ্দেশে বর্ণনা করে থাকি। বস্তুত ওইসব দৃষ্টান্ত কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই বোঝে” (সূরা আনকাবুত, আয়াত-৪৩)।

মহান আল্লাহ আরও এরশাদ করেন, ‘‘আপনি বলুন, যারা জ্ঞানী এবং যারা জ্ঞানী নয় তারা কি সমান হতে পারে?” (সূরা যুমার, আয়াত-৯)।

কোরানে পাকের অপর স্থানে জ্ঞান ও অজ্ঞতা সম্পর্কে এভাবেই পার্থক্য নির্ণয় করা হয়েছে “হে নবী বলুন, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান লোক কি এক হতে পারে? আলো ও অন্ধকার কি এক ও অভিন্ন হতে পারে?” (সূরা রাদ, আয়াত-১৬)।

জ্ঞানী লোকদের আল্লাহ তায়ালা উচ্চ মর্যাদা দান করবেন। যেমন এরশাদ হচ্ছে, “তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদের সুউচ্চ মর্যাদা দান করবেন”(সূরা মুজাদালাহ, আয়াত-১১)।

জ্ঞান অর্জন সম্পর্কে প্রিয় নবী (সা.) বর্ণনা করেন, “প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জ্ঞান অর্জন করা ফরজ” ইবনে মাজাহ।

উল্লেখ্য, এখানে জ্ঞান বলতে ইসলামী জ্ঞান বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, একজন মুসলমানের ওপর আল্লাহর কি কি হুকুম রয়েছে এবং তা রাসূল (সা.) এর নিয়ম অনুযায়ী কিভাবে পালন করা যায় তা জানতে হবে। না জানলে গুণাহ হবে।

আল্লাহর রাসূল (সা.) এর পবিত্র মুখ থেকে আরও উচ্চারিত হয়েছে, ‘‘রাতের কিছু সময় জ্ঞান চর্চা করা পূর্ণ রাত্রি (এবাদতে) কাটানো অপেক্ষা উত্তম” (দারেমী)। আরেকটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যার মৃত্যু এমন সময় এসে পৌঁছেছে যখন সে ইসলামকে সমুন্নত রাখার প্রয়াসে জ্ঞান চর্চায় লিপ্ত বেহেশতে তার ও নবীদের মাঝে মাত্র এক ধাপ পার্থক্য থাকবে। (দারেমী)।

বিখ্যাত সাহাবী হযরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জ্ঞান অনুসন্ধানে বের হয়েছে সে আল্লাহর রাস্তায় রয়েছে সে পর্যন্ত না ফিরে আসবে (তিরমিযী)। অর্থাৎ, জ্ঞান চর্চায় লিপ্ত থাকা আল্লাহর রাস্তায় থাকারই নামান্তর।

জ্ঞান অর্জনের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহর নবী আরও বলেন, জ্ঞানী ব্যক্তির মর্যাদা (জ্ঞানহীন) ইবাদতকারীর ওপর এরূপ যেরূপ আমার মর্যাদা তোমাদের সবার ওপর। অতপর রাসূল (সা.) বললেন, যে ব্যক্তি মানুষকে ভাল কথা শিক্ষা দিয়ে থাকে তার জন্য স্বয়ং আল্লাহ তালা, তাঁর ফেরেশতাগণ, আসমানবাসী, জমিনবাসী, এমনকি গর্তের পিপীলিকা পর্যন্ত দোয়া করে (তিরমিযী শরীফ)।

বিখ্যাত হাদীসগ্রন্থ মুসলিম শরীফে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণিত হয়েছে, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জ্ঞান লাভের উদ্দেশে কোনো পথ অবলম্বন করলো আল্লাহ তায়ালা এর দ্বারা তার বেহেশতের পথ সহজ করে দিবেন।

যখনি কোনো একটি দল আল্লাহর ঘরসমূহের কোনো একটি ঘরে (মসজিদ, মাদ্রাসায়) একত্রিত হয়ে আল্লাহর কিতাব পাঠ করতে থাকে এবং তা পরস্পর আলোচনা করতে থাকে তখনি আল্লাহর পক্ষ হতে তাদের ওপর স্বস্তি ও শান্তি অবতীর্ণ হতে শুরু করে, আল্লাহর রহমত তাদের ঢেকে ফেলে, ফেরেশতারা তাদের ঘিরে ফেলে এবং আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের কাছে এসব বান্দার আলোচনা (প্রশংসা) করেন। যার কর্ম তাকে পিছিয়ে দেয় তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে দিতে পারে না (মুসলিম শরীফ)।

হযরত মুআবিয়া (রা.) বলেন, প্রিয় রাসূল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তালা যার কল্যাণ কামনা করেন তাকে দ্বীনের (ইসলামের) সুষ্ঠু জ্ঞান দান করেন (বুখারী, মুসলিম)। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে জ্ঞান অর্জন করার তৌফিক দান করুন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ