1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৩ অপরাহ্ন

সরকারের কাছে এসআরও বহাল রাখার দাবি বিনিয়োগকারীদের

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩ জুন, ২০১২
  • ১১০ Time View

দেশীয় শিল্প রক্ষায় সরকার ঘোষিত নীতি সহায়তা (এসআরও-২১৩) বাতিল হলে পথে বসে যাবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। এর ফলে ঝুঁকির মুখে পড়বে কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। বেকার হয়ে যেতে পারেন ১০ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী। এ অবস্থায় ওই এসআরও বহাল রেখে দেশীয় শিল্প রক্ষা ও বিকাশে এগিয়ে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন এ খাতের বিনিয়োগকারীরা।

জানা গেছে, ২০১০ সালের ১০ জুন সরকার একটি এসআরও (স্ট্যাটটোরি রেগুলেটরি অর্ডার) বা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশীয় উদোক্তাদের ভ্যাট সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা জারি করা হয়। এর আওতায় মোটরসাইকেল, এয়ারকন্ডিশনার ও ফ্রিজের ম্যানুফ্যাকচারাররা উৎপাদন ও কাঁচামাল আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট সুবিধা পেয়ে থাকেন। ওই সুবিধা ২০১৪ সাল পর্যন্ত বহাল রাখার কথাও বলা হয়।

ওই এসআরও’র সুবিধা নিতে রানার, ওয়ালটন, রোড মাস্টার, গ্রামীন মোটরর্স, মাইওয়ান, বাটার ফ্লাইসহ বেশকিছু কোম্পানী ব্যাপক বিনিয়োগে এগিয়ে  এসেছে। যারা আগে আমদানি করতো তারাও এখন বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে চাইছেন।

বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, যারা এখাতে আদৌ বিনিয়োগ করবেন না এরকম কিছু আমদানিকারকের চাপে আগামী বাজেটে ওই সুবিধা বহাল না-ও থাকতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা এক্ষেত্রে বিদেশী মহল বিশেষের অপতৎপরতার অভিযোগ এনেছেন।

তারা বলেছেন, সরকারের ঘোষিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিনিয়োগকারীরা হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন চার বছরের কথা বলে একবছর পর সুবিধা তুলে নিলে সরকারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হবে। দেশের শিল্পায়নের জন্য সেটি হবে অশনি সঙ্কেত।

অটোমোবাইল ও ইলেক্ট্রনিক্স খাতের স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা বলছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক জারিকৃত এসআরও নং-২১৩-আইন/ ২০১০/৫৬২-মূসক বাতিল বা সংশোধন করা হলে জাতীয় শিল্পায়নের প্রয়াসকে পিছনের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে দেশীয় মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকারের ওই প্রজ্ঞাপনের কারণে আশাবাদী হয়ে মোটরসাইকেল উৎপাদনে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু এখন শুনছি আমদানিকারকদের দাবির মুখে সরকার ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে চাচ্ছে। যদি তাই হয় তাহলে বিনিয়োগের কি হবে? বিনিয়োগকৃত টাকার ভবিষ্যত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, উচ্চ ব্যাংক সুদে টাকা বিনিয়োগ করে এমনিতেই উদ্যোক্তারা চাপের মুখে। সরকারের নীতি সহায়তা পরিবর্তন হলে এ খাতের কারখানাগুলো রুগ্ন হয়ে যাবে। অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ সুরক্ষায় অবশ্যই আমদানি নিরৎসাহিত করা প্রয়োজন।

ওয়ালটনের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, ‘বর্তমান সরকারের শিল্পবান্ধব কিছু উদ্যোগ (এসআরও) দেখে ওয়ালটন বিশাল অংকের বিনিয়োগ করেছে। কারখানায় হাজার দশেক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। অনেক মেশিনারিজ সেট আপ এখনো শেষ হয়নি, উৎপাদনে যেতেও পারিনি। এ অবস্থায় এসআরও সুবিধা তুলে নিলে বিশাল অংকের ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আমাদের পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুবিধা ঘোষণা করে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তা বাতিল করলে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারাবে।

তিনি আরো বলেন, এর আগেও এ সেক্টরে কিছু শিল্প গড়ে উঠেছিলো। কিন্তু তারা টিকতে পারেনি সরকারের কোন প্রটেকশন না থাকায়। এখন এ সুবিধা প্রত্যাহার করলে বিদ্যমান শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে পরবর্তীতে প্রণোদনা দিলেও দেখা যাবে কোন বিনিয়োগকারী এগিয়ে আসছে না। এজন্যই সরবার আগে প্রয়োজন বিনিয়োগের সুরক্ষা।

গ্রামীণ মোটর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেসবাহউদ্দীন মামুন বলেন, এই বিধি বহাল রাখা উচিত। এটা বাতিল হলে স্থানীয় উৎপাদনকারীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। শিল্পায়নের সার্বিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। সরকারের উচিত দেশীয় উৎপাদনকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে অধ্যাদেশটি বহাল রাখা।

অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আমদানি নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বিদেশী পণ্যের ব্যবহার কমাতে সেগুলির উপর শুল্কহার আরো বাড়ানো উচিত। ক্ষুদ্র  শিল্পের বিকাশ দেশে ঘটলেও ভারি শিল্পে তেমন অগ্রগতি নেই। এসব শিল্প নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার কারনে দ্রুত গতিতে এগুতে পারছে না। এ ব্যাপারে সরকারি সহায়তা ও প্রণোদনা আরো বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, এনবিআরের সদস্য (ভ্যাট পলিসি) ফরিদ উদ্দিন কোন কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ট্যারিফ কমিশন চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে উদ্যোক্তারা বলেছেন, এসআরও বাতিল বা সংশোধন হলে এ খাতের বিনিয়োগকারীরা মারাত্মক ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। সরকারি পর্যায়ে এ ধরনের ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদে নিরুৎসাহিত করবে। সেইসঙ্গে আমদানি নির্ভরতা বেড়ে যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ