1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

মহাসংকটে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৫
  • ২১০ Time View

ঝুঁকিতে ৫০ ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। নাজুক অবস্থায় চলে গেছে ব্যাংকবহির্ভূত এ সব আর্থিক 10প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল্যায়নে ৩১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টিই ‘রেড’ জোনে চলে গেছে; অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা খারাপ। আর ১২টির অবস্থান মাঝামাঝি মানের। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত এপ্রিল-জুন ‘ত্রৈমাসিক আর্থিক ঝুঁকি মূল্যায়ন’ প্রতিবেদনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর এমন মূল্যায়ন করা হয়। প্রতিবেদনের বিভিন্ন সূচকে দেখা যায়, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ৭১ শতাংশ বেড়ে গেছে। গত বছরের জুনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল এক হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ১৬০ কোটি টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সূত্র জানিয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তদারকি করতে তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে যারা ভাল করছে তাদেরকে গ্রিন জোনে, যারা মাঝারি মানের তাদেরকে ইয়েলো জোনে এবং যাদের অবস্থা খারাপ তাদেরকে রেড জোনে রাখা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে ৮টি প্রতিষ্ঠান রেড জোনে ছিল। আর ১৯টি প্রতিষ্ঠান ছিল ইয়েলো জোনে। কিন্তু মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে অর্থাৎ মার্চ শেষে রেড জোনের প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ৮ থেকে বেড়ে ১৫ তে চলে যায়। প্রতিষ্ঠানের অবস্থা মাঝারি মান থেকে খারাপে বা রেড জোনে চলে যায়। ইয়েলো জোনের প্রতিষ্ঠান সংখ্যা সাতটি কমে দাঁড়িয়েছে ১২টিতে। মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান গ্রিন জোনে রয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, রাজনৈতিক অবস্থায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ কমে গেছে। এর ফলে বিনিয়োগ থেকে আয় কমে গেছে। ব্যবসা মন্দা থাকার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে যারা ঋণ নিয়েছিলেন তাদের বেশির ভাগই পরিশোধ করতে পারছেন না। ফলে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে। আর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় খাত থেকে অর্থ এনে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। ফলে নিট আয় কমে গেছে।এর পাশাপাশি ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে যে ভয়াবহ ধস নামে তার ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেনি এসব প্রতিষ্ঠান। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান থেকে নিট আয় প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানের মূল প্রতিষ্ঠানের আয় থেকে সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের লোকসান সমন্বয় করা হচ্ছে। এর বাইরে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়ম বেড়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা নামে-বেনামে ঋণ নিচ্ছে। কিন্তু ওই ঋণ আর ফেরত দিচ্ছেন না। বরং কাগুজে আদায় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের ওপর দায় চাপাচ্ছে। সব মিলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এ অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে ৩১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩টি সরকারি, ২০টি বেসরকারি ও ৮টি দেশী-বিদেশী মালিকানায় পরিচালিত। সারা দেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০০টি শাখা রয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের মতো সরাসরি আমানত সংগ্রহ করতে পারে না। কখনো পারলেও তিন মাসের অধিক নয়। তিন মাসের কম সময়ের জন্য সরাসরি আমানত সংগ্রহ করতে পারে না। সে কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যাংকেই আমানত রাখে বেশি। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কেউ আমানত রাখলেও ব্যাংকের চেয়ে বেশি মুনাফা দাবি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সমপ্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের মধ্যে বিধিবিধান ও নীতিমালা লঙ্ঘনের প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। বিশেষত, পরিচালকদের অনুকূলে নামে-বেনামে সীমাতিরিক্ত ঋণ প্রদান, এসব ঋণের অর্থ ভিন্ন খাতে ব্যবহার, বিরূপ শ্রেণীকৃত ঋণকে অশ্রেণীকৃত হিসেবে প্রদর্শন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিচালক নন এমন ব্যক্তি কিংবা কোন কোন ক্ষেত্রে সাবেক পরিচালক বা ঋণগ্রহীতা পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থিত থেকে নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের মতো গুরুতর অনিয়ম ধরা পড়েছে। এসব নানা অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক একজন চেয়ারম্যান, কয়েকজন পরিচালক, প্রধান নির্বাহীসহ একটি বহিঃনিরীক্ষক ফার্মকে বহিষ্কার করেছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অনিয়ম ও জালজালিয়াতি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ভিজিল্যান্স উইংও গঠন করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ