1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন

কর্মীদের ১০০ কোটি টাকা তুলে নিচ্ছে বিমান

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১২
  • ৬১ Time View

সংস্থার অর্থসংকট সামাল দিতে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ এবার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর খাতের (রিটায়ারমেন্ট ফান্ড) তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা তুলে নিতে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের কর্মীদের চাকরি জীবন শেষে সাংবিধানিকভাবে সংরক্ষিত এই টাকা তুলে নেওয়ার এখতিয়ার বিমান কর্তৃপক্ষের নেই। তারপরেও বিমান সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এই টাকা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আর বিমানের এই পদক্ষেপে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, দেনা ও লোকসানের ভারে জর্জরিত বিমানের এখন দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। বিমান গত তিনটি অর্থবছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। সেই সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিমানের দেনা প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।

উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় তা দিয়ে কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু দিন দিন বিভিন্ন রুটে বিমানের যাত্রী সংখ্যা যেভাবে কমছে, তাতে সদ্য চালু করা ঢাকা-ম্যানচেস্টার, ঢাকা-লন্ডনের মতো রুটেও বিমানকে লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এ অবস্থায় বিমানের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গত বছর বিমানকর্মীদের বেতন দিতে ব্যাংক থেকে ২০ কোটি টাকা ঋণও নিয়েছিল। গতবারের ন্যায় এবারও ব্যাংক ঋণ নিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছিল বিমান। কিন্তু টানা তিনবার ব্যাপক পরিমাণে লোকসান দেওয়া প্রতিষ্ঠানকে কোনো ব্যাংক ঋণ দিতে আগ্রহী হবে না। এ বিষয়টি মাথায় রেখে বিমান কর্তৃপক্ষ অবসরখাতের তহবিলের ১০০ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার চিন্তা করেছে।

বিমান পরিচালান পর্ষদের ওই সদস্য বলেন, অবসরখাতের টাকা বিমান সাময়িকভাবে তুলে নিয়ে কাজ চালাবে। এতে দোষের কিছু নেই। কারণ, এই টাকা চিরতরে তুলে নেওয়া হচ্ছে না। এটি বিমানেরই টাকা।

এ বিষয়ে বিমানের বক্তব্য জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জাকীউল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বিমান পরিচালনা পর্ষদের ওই সদস্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে এয়ারলাইন্সের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন সময় বিমান অর্থ সংকটে পড়েছে। কিন্তু কেউই অবসরখাতের তহবিল থেকে অর্থ নেওয়ার মতো এত খারাপ পরিস্থিতি আগে কখনো তৈরি হয়নি। সাংবিধানিকাভাবে সংরক্ষিত তহবিল থেকে এভাবে অর্থ তুলে নেওয়া যায় না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

২০০৭ সালে বিমান কোম্পানি হওয়ার ভিআরএসর মাধ্যমে ১৮৭৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করেছিল। তখন প্রতিষ্ঠানের বেতন ছিল প্রায় ১২ কোটি টাকা। আর বর্তমানে বেতন বাবদ ব্যয় হয় ১৮ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ওভারটাইম ও ভাতা মিলিয়ে ব্যয় হয় আরো ৩ কোটি ৬১ লাখ টাকার বেশি।

বিমানের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৭ সালের জুনে ১৮৭৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাইয়ের পরেও তৎকালীন প্রশাসন প্রতিষ্ঠানের তহবিলে ৫০০ কোটি টাকা রেখে গিয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে আয় না বাড়িয়ে কর্মীদের বেতন -ভাতা বাড়ানো, তিন অর্থ বছরে ব্যাপক লোকসানের ফলে বিমান এখন দেউলিয়া প্রায়।

জানা গেছে, জ্বালানি তেল সরবরাহকারি কোম্পানি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কোম্পানি পদ্মার কাছে বিমানের দেনা ২৪৭ কোটি টাকা। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ পাবে ২৭০ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পাবে ৫৬ কোটি টাকা। অপরদিকে পাওনা টাকা না দেয়ায় বিদেশি পাওনাদার কোম্পানিগুলো বিমানের ইঞ্জিন-পার্টস আটকে রাখছে। মামলার হুমকি দিচ্ছে। স্পেয়ার পার্টসের অভাবে বহরের বেশিরভাগ উড়োজাহাজ বসে থাকে। চারটি বিদেশি কোম্পানির কাছে এ মুহূর্তে বিমানের দেনার পরিমাণ প্রায় ২শ’ কোটি টাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ