1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন

লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলা করছে দুদক

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০১৫
  • ৮৮ Time View

latiffএকক ক্ষমতাবলে জুটমিলের জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগে সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বৃহস্পতিবার কমিশন এ মামলার অনুমতি দিয়েছে। শিগগির মামলাটি দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের এক কর্মকর্তা। গত সোমবার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী। দুদক সূত্র জানায়, লতিফ সিদ্দিকী মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নেত্রকোনা জেলা সদরের সাতপাই মৌজায় বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের (বিজেসি) ০.৯৮ একর জমি ৬০ লাখ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ওই সময় পাট সচিব সরকারি মালিকানাধীন ওই জমি বিক্রি করা যাবে না বলে এ-সংক্রান্ত ফাইলে সুপারিশ করেছিলেন। সাবেক ওই মন্ত্রী সুপারিশ আমলে না নিয়ে ওই জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

মন্ত্রীর সিদ্ধান্তে ওই জমি কেনার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ী তারেক সালমান এবং সুধেন্দু শেখর রায় সরকারি কোষাগারে ৬০ লাখ টাকা জমাও দিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত তাদের জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়নি। বিজেসির দখলেই রয়েছে পুরো জমি।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, নেত্রকোনা জেলা সদরের সাতপাই মৌজায় তিনটি খতিয়ানে রয়েছে ০.৯৮ একর জমি। ওই জমিতে তিনটি গোডাউন রয়েছে, যা স্থানীয় তারেক সালমান এবং সুধেন্দু শেখর রায়ের কাছে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। এই দু’জন ওই জমি কেনার আবেদন করেছিলেন। মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অন্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জমি বিক্রি না করার সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী তাদের সুপারিশ উপেক্ষা করে এককভাবে ৬০ লাখ টাকায় ওই জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০১২ সালের জুলাইতে।

সূত্র জানায়, কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি বিক্রির সিদ্ধান্তটি অনুসন্ধান করা হয় দুদকের ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে। অনুসন্ধানকালে সাবেক মন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে ওই জমি বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সব ধরনের নথিপত্র পাওয়া গেছে। চূড়ান্তভাবে ওই জমি বিক্রি করা হলে সরকারের ক্ষতিসাধন হতো বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়। ওই জমি বিক্রির প্রক্রিয়ায় লতিফ সিদ্দিকীর একক ভূমিকা ছিল বলে কমিশন মামলায় শুধু তাকেই আসামি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা অফিসের সহকারী পরিচালক পাল কমল চন্দ্র অভিযোগটি অনুসন্ধান করেছেন। তদারকি করেছেন উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই জমির গোডাউন তারেক সালমান এবং সুধেন্দু শেখর রায়ের কাছে ভাড়া দিয়েছিল বিজেসি। প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ বিজেসি পেত ৭২ হাজার টাকা। এ অবস্থায় উভয়েই জমিটুকু ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৯ টাকায় কেনার জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাবেক মন্ত্রী।

জমি বিক্রির সিদ্ধান্তের ফাইলে মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী লিখেছেন, বিক্রিতে সময়ক্ষেপণের ফলে ০.৮৫ একর জমি বেদখল হলে অবশিষ্ট জমি বেদখল হতে সময় লাগবে না। যে তিনটি গুদাম ৭২ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে তদারকির অভাবে এক সময় ভাড়াটিয়া যে বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে এগুলোর মালিক বনে যাবেন না, তার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারবেন না। ফলে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভাড়াটিয়াই উলি্লখিত ০.৯৮ একর জমি ক্রয় করতে চাইলে যৌক্তিক কারণে ভাড়াটিয়াই ক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে পারেন। এ ব্যাপারে ফাইলে মন্ত্রণালয়ের সচিব ওই জমি বিক্রি না করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। পরে মন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে জমি বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
আপাতত চুপ থাকছেন লতিফ সিদ্দিকী মন্ত্রিসভা থেকে বাদ ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত আবদুল লতিফ সিদ্দিকী আপাতত চুপচাপই থাকছেন। কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও তিনি স্বস্তিতে নেই। নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ নানা কারণে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন। ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, আপাতত তিনি বাসায় বিশ্রামে থাকবেন। রাজনৈতিক অনুষ্ঠান তো নয়ই, সামাজিক অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত সোমবার কারাগার থেকে মুক্তিলাভের পর থেকেই তিনি অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে চলাফেরা করছেন। নিকটাত্মীয় ছাড়া কারও সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করছেন না। আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্ফৃ্কত হলেও এখনও টাঙ্গাইল-৪ আসনের এমপি তিনি। নির্বাচনী এলাকা থেকেও অনেকে ঢাকায় এসে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক এই সদস্যের সঙ্গে ঢাকার কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ নেই। নেতারাও তাকে এড়িয়ে চলছেন।

লতিফ সিদ্দিকীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী ও কালিহাতী উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মোল্লা সমকালকে জানিয়েছেন, লতিফ সিদ্দিকী বর্তমানে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন। আপাতত বাসার বাইরে তিনি বের হচ্ছেন না। বই পড়ে সময় কাটাচ্ছেন। সংসদের চলতি অধিবেশনেও তার যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
আনোয়ার হোসেন জানান, গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি। নির্বাচনী এলাকা থেকে অনেকেই তার মাধ্যমে সাবেক এই মন্ত্রীর খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তবে এ পর্যন্ত তিনি কালিহাতীর দু’জন আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কালিহাতী উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম তালুকদার ঠাণ্ডু এবং কালিহাতী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী বিকম।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ