1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫১ অপরাহ্ন

কারা গানম্যান পান, আবেদন করতে হয় যেভাবে

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১০ Time View

বাংলাদেশে গানম্যান বা সশস্ত্র দেহরক্ষী পাওয়া কোনো সাধারণ অধিকার নয়। এটি মূলত ব্যক্তির নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং রাষ্ট্রীয় প্রটোকলের ভিত্তিতে সরকার বিশেষ বিবেচনায় দিয়ে থাকে। অর্থাৎ, কারও প্রতি হুমকি বা ঝুঁকি যদি বাস্তব ও গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলেই সরকার এ ধরনের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অনেক সময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গুরুত্বপূর্ণ মামলার সাক্ষী হওয়া কিংবা বিশেষ ঝুঁকির কারণেও রাষ্ট্র নিজ উদ্যোগে গানম্যান বরাদ্দ দেয়।

পুলিশ সদরদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাধারণ কোনো ব্যক্তি যদি নিরাপত্তার প্রয়োজন অনুভব করেন, তাহলে তাকে লিখিতভাবে পুলিশের কাছে বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হয়। আবেদন পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা স্পেশাল ব্রাঞ্চ বিষয়টি তদন্ত করে দেখে আবেদনকারীর নিরাপত্তা ঝুঁকি বাস্তব কি না, নাকি প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে আবেদন করা হয়েছে। এই যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া দীর্ঘ এবং বেশ কঠোর।

সাধারণত মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রোটেকশন ইউনিট বা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে গানম্যান বা বডিগার্ড নিয়োগ দেওয়া হয়। বডিগার্ডরা সাধারণত প্রোটেকশন ইউনিট থেকে এবং গানম্যানরা বিশেষ শাখা থেকে দেওয়া হয়ে থাকে।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহাম্মেদের ভাষ্য অনুযায়ী, সব ধরনের যাচাই শেষে প্রশিক্ষিত পুলিশ সদস্যকে গানম্যান হিসেবে নিয়োজিত করা হয়। যদিও নিয়োগটি রাষ্ট্রীয়ভাবে হয়, তবে যাকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে তার মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। কারণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সমন্বয় ও বিশ্বাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

একজন সরকারি গানম্যান রাষ্ট্রীয় অস্ত্র ব্যবহার করেন এবং তার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ গুলি বরাদ্দ থাকে। যেহেতু তিনি সরকারি দায়িত্বে নিয়োজিত, তাই তার সব ব্যয় সরকারই বহন করে। তবে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আনসার ভিডিপির সদস্যদের নির্ধারিত পারিশ্রমিকে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

কারা সাধারণত গানম্যান পান

রাষ্ট্রীয় প্রটোকলের আওতায় কিছু পদে থাকা ব্যক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরকারি গানম্যান বা সশস্ত্র নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। এই তালিকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, সচিব বা সমপর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানরা।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা বলেন, কেউ চাইলে পুলিশের কাছে নিরাপত্তার আবেদন করতে পারেন, তবে ব্যক্তিগত গানম্যান বা বডিগার্ড দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই নেয়। বিশেষ করে নির্বাচনের সময় বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকির বাস্তবতা অবশ্যই নিশ্চিত করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, আদালতের কাছেও পুলিশি নিরাপত্তা বা গানম্যান চেয়ে আবেদন করা যায়। কোনো নাগরিক যদি মনে করেন তার জীবন হুমকির মুখে, তাহলে তিনি রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চাইতে পারেন। সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব, তবে কাকে কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে সে সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নেয়।

এছাড়া কেউ চাইলে ব্যক্তিগত খরচে নিজস্ব লোককে গানম্যান হিসেবে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির নিজের নামে আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধ লাইসেন্স থাকতে হবে অথবা নিয়োগকর্তার অস্ত্রের লাইসেন্সে তাকে ব্যবহারকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সরকার অনুমোদিত বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানি থেকেও নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে গানম্যান নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

উল্লেখ্য, অতীতেও বিভিন্ন সময় নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সরকার বিশেষ বিবেচনায় বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি, লেখক, বুদ্ধিজীবী ও গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকের জন্য গানম্যান বা দেহরক্ষী নিয়োগ দিয়েছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ