1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন

গৌরব ও ঐতিহ্যে ৯৫ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১ জুলাই, ২০১৫
  • ১৫২৩ Time View

du1১৯২১ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করে সৌরভে, গৌরবে ও ঐতিহ্যে ৯৪তম বছর পেরিয়ে ৯৫ বছরে পা রাখলো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বুধবার তার ৯৫তম জন্মদিন। এ বছর প্রতিষ্ঠাবর্ষিকীর মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে নেয়া হয়েছে ‘উচ্চশিক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন’।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুদীর্ঘ এই পথ চলায় নিজস্ব আলোয় আলোকিত দেশসেরা এই শিক্ষালয়টি। অর্জনও রয়েছে অনেক। দুর্বার গতিতে চলতে গিয়ে নির্ভর করতে হয়নি কারো উপর। কর্তৃত্ব চালিয়েছে দেশের সীমানা ভেদ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।

নিজেকে করেছে ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশ তিন যুগের সাক্ষী। অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা জাতি গঠনে ব্যয় করেছে যৌবন। বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের প্রতিটি অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে। ৫২`র ভাষা আন্দোলন, ৬৬`র ছয় দফা, ৬৯`র গণঅভ্যুত্থান এবং ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল নেতৃত্বের অগ্রভাগে।

একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর বুকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই তো কৃর্তিমান লেখক আহমদ ছফা বলেছিলেন, ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই দেশটির যা কিছু আশা-ভরসার, তার সবটাই তো ধারণ করে এই (ঢাকা) বিশ্ববিদ্যালয়।’

ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন তৎকালীন পূর্ব বাংলার জমিদার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের নির্দেশে ১৯১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে নাথান কমিটি গঠন করা হয়।

সুদীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে ৬০০ একর জমি নিয়ে মনোরম পরিবেশে বিশাল তরুছায়া সুনিবিড় পরিবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। যদিও এখন কমতে কমতে এর আয়তন দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৬০ একরে। ব্রিটিশরা অক্সফোর্ডের আদলে এর পঠন-পাঠন ও শিক্ষাদান কার্যক্রম পদ্ধতি তৈরি করেছিলো বলেই এটিকে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হতো।

এরপর থেকেই জ্ঞান-বিজ্ঞান ও বিদ্যাচর্চার খ্যাতিতে এই উপমহাদেশের একটি শ্রেষ্ঠ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষাদান, বিদ্যাচর্চা, শিক্ষকদের গবেষণা ও পান্ডিত্যের খ্যাতি শুধু এ উপমহাদেশে নয়, অর্জনের প্রভাব পড়ে পূর্ব বাংলা পেরিয়ে ইউরোপ, আমেরিকাসহ নানা দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও।

অন্যদিকে এর আবাসিক ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল উপমহাদেশের প্রাচীনতম এবং তৎকালীন শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান ভারতের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে। উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন, পাঠ নেবেন ও জ্ঞানার্জনের নানা প্রয়োজনে লাইব্রেরিসহ শিক্ষকের সাহচর্য লাভ করবেন।

প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে তিনটি অনুষদ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা করলেও বর্তমানে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। ১২টি বিভাগ থেকে এখন ৭৪টি বিভাগ চালু রয়েছে। এছাড়া রয়েছে- ১২টি ইনস্টিটিউট, ৪৪টি গবেষণা ব্যুুরো ও কেন্দ্র।

সূচনাকালে এর আবাসিক ছিল তিনটি। বর্তমানে ৫টি ছাত্রী হলসহ সর্বমোট হল সংখ্যা ১৯টি। এছাড়াও রয়েছে একটি ছাত্রীনিবাস ও তিনটি হোস্টেল।

প্রতিষ্ঠাকালে শিক্ষক ছিলেন মাত্র ৬০ জন। বর্তমানে শিক্ষক সংখ্যা ১ হাজার ৮০৯ জন। ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা করেছিল আজ তার শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮২৭ জন। এছাড়া সান্ধ্যকালীন বিভিন্ন কোর্সে শিক্ষার্থী রয়েছেন ৫ হাজার ৩০৮ জন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা রয়েছেন- ৮৬৬ জন, ৩য় শ্রেণির কর্মচারী ১ হাজার ৯৮ জন ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে ২ হাজার ৬৮ জন।

প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ পর্যন্ত ঢাবি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন ১ হাজার ৯৯ জন আর এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেছেন ১ হাজার ১৫২ জন।

সুদীর্ঘ ৯৪ পেরিয়ে ৯৫ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশকে দিয়েছে অনেক কিছু। দিয়েছে দেশ-বিদেশে অনেক খ্যাতি ও গৌরব। অর্জন করেছে অনেক দুর্লভ সম্মান। তৈরি করেছে দেশ-বিদেশে আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান পন্ডিত ও গবেষক। আজ দেশটির রাজনীতি, প্রশাসন থেকে শুরু করে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ৯৪ বছর পেরিয়ে ৯৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। বুধবার সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মসূচীর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ