ডিসিসির মেয়র হতে চান চিত্রনায়ক ফারুক

ডিসিসির মেয়র হতে চান চিত্রনায়ক ফারুক

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি) মেয়র নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক চিত্রনায়ক ফারুক (হাজী আকবর হোসেন পাঠান) । মনোনয়ন পেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হবেন তিনি।

শনিবার বাংলানিউজকে একথা জানিয়েছেন ফারুক।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান মেয়র সাদেক হোসেন খোকা মিডিয়াতে বলেছেন, সরকার নাকি তার ভয়ে নির্বাচন দিচ্ছে না। তার বিশ্বাস, তিনি বারবার মেয়র হবেন। আমি সরকারকে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, আমাকে একটিবার তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিয়ে দেখুক। আল্লাহর রহমতে তার দেমাগ আর থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান মেয়র আপ টু মার্ক না। তিনি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আছেন। আমি শুধু অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় নই বরং সবসময় মানুষের পাশে থাকি। পুরান ঢাকার মানুষও আমাকে অনেক ভালোবাসে। নগরপিতার মানে হলো পুরো শহরেই তার লোক থাকবে। ঢাকার প্রত্যেকটি এলাকায় আমার কাছের মানুষ আছেন। তারা আমাকে নির্বাচন করার ব্যপারে চাপ দিচ্ছে । তারাই বিভিন্ন স্থানে আমাকে ঢাকার মেয়র দেখতে চায় বলে পোস্টারিং করেছে ।’

ফারুক জানান, ৫০ বছরেরও বেশি সময় তিনি ঢাকা শহরে আছেন। এই শহরের জন্য তিনি কাজ করতে চান। তবে নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করবেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘দল চাইলে নির্বাচন করবো। না চাইলে নয়। আমি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটোর সহ-সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আছি। আমি বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রাখি।’

নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, ‘তার ডাকেই মুক্তিযুদ্ধ করেছি। দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছে আছে। রাজনীতি থেকেই অভিনয় জগতে আমার আসা। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করি।’

ডিসিসির বিভক্তি নিয়ে চিত্রনায়ক ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, ‘যারা ডিসিসি ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা আমার চেয়ে ভালো বোঝেন। রাজধানীর উন্নয়নের স্বার্থে ও জনসেবা বাড়াতে ডিসিসির বিভক্তি ইতিবাচক বলে মনে করি।’

চিত্রনায়ক ফারুক বলেন, ‘আমি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছি শত্রু সেনাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে। কিন্তু স্বাধীনতার এতোগুলো বছর পার হয়ে গেলেও আমরা মুক্তিযোদ্ধারা কি যথাযথ সম্মান পেয়েছি? না, আজো তা আমরা পাইনি। তবুও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমি সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি।’

শিল্পী-অভিনেতাদের রাজনীতি দেশে দেশে

জনপ্রিয় অভিনেতাদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়।

অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর পরপর দু’বার সংসদ সদস্য হয়েছেন। সংসদ সদস্য হয়েছেন- অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী, অভিনেত্রী তারানা হালিম ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ।

চলচ্চিত্র অভিনেতা রাজীব ছিলেন জাসাসের নেতা।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করা রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালে আমেরিকার বৃহত্তম অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

হলিউডের `ওয়েস্টার্ন হিরো` খ্যাত ক্লিন্ট ইস্টউড ১৯৮৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন ।

ইরাক যুদ্ধবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে আলোচিত অভিনেত্রী গেন্ডা জ্যাকসন ১৯৮২ সালে লেবার পার্টির এমপি নির্বাচিত হন।

এছাড়া, টার্মিনেটর খ্যাত আরনল্ড শোয়ার্জনেগার মার্কিন রাজনীতিতে আলোচনার ঝড় তুলেছেন । তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বলিউডের বিগ বি অমিতাভ বচ্চন কংগ্রেসের টিকেটে সংসদে গেলেও এখন রাজনীতির ময়দান থেকে বিদায় নিয়েছেন। কিন্ত এখন তার স্ত্রী অভিনেত্রী জয়া বচ্চন সমাজবাদী দলের সদস্য এবং বিধানসভার সাবেক সদস্য।

সঞ্জয় দত্তের বাবা প্রয়াত সুনীল দত্ত, রাজেশ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহা ভারতের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সুনীল দত্ত মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কংগ্রেস দলীয় সাংসদ ছিলেন। নির্বাচনে জিতে লোকসভার সদস্য হয়ে আলো ছড়িয়েছেন রাজ বাব্বর, বৈজয়ন্তীমালা এবং জয়াপ্রদা।

বিনোদ খান্না ১৯৯৭ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ হন । ২০০২ সালে সংস্কৃতি এবং পর্যটনমন্ত্রী হন তিনি।

২০০৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য হন অভিনেতা গোবিন্দ।

পশ্চিমবাংলায় রাজ্যসভাতে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছেন তাপস পাল।

অভিনেতা ধর্মেন্দ্র বিজেপির টিকেটে বিকানারের এমপি হয়েছিলেন। হেমা মালিনীর স্বামী ধর্মেন্দ্রর পথ ধরে হেমাও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

তামিল ছবির তারকাদের রাজনীতিতে সাফল্য বেশ আলোচিত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের অনেকে। অন্ধ্রপ্রদেশে এনটি রামা রাও এবং তামিলনাড়ুতে এমজি রামচন্দ্র, জয়ললিতারা মুখ্যমন্ত্রী তো ছিলেনই, তাছাড়া তারা গঠন করেছেন জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল।

ফিলিপাইনের অভিনেতা জোসেফ এস্ত্রাদা মেয়র থেকে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।

বিনোদন রাজনীতি