1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন

দেড় হাজার যাত্রীর প্রাণ বাঁচালেন ট্রেনচালক

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৪
  • ৮৬ Time View

অবরোধকারীদের নিক্ষেপ করা পেট্রোলবোমা হাত দিয়ে আটকিয়ে নিজে দগ্ধ হলেও ট্রেনের ইঞ্জিন ও দেড় হাজার যাত্রীকে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবল থেকে বাঁচালেন মাহবুবুর রহমান বুলবুল। সরকারী সম্পদ আর যাত্রীদের প্রাণ বাঁচিয়ে নিজে দগ্ধ হয়ে এখন রাজশাহী রেলওয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন তিনি। মাহবুবুর রহমান বুলবুল পশ্চিমাঞ্চল রেলের সহকারী ট্রেন চালক (লোকমোটিভ মাস্টার) পদে কর্মরত। বুধবার রাতে দায়িত্ব পালনকালে চলন্ত ট্রেনে পেট্রোলবোমা হামলার শিকার হন তিনি।
রেলওয়ে হাসপাতাল সূত্র জানায়, অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোলবোমায় তাঁর কোমরের নিচে, পেট এবং বাম হাতের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কমরের নিচের অংশ। রেলওয়ে হাসপাতালর চিকিৎসক হামিদুল হক জানান, রেলওয়ে হাসপাতালেই তাঁকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মাহবুর রহমান বুলবুল জানান, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী সিল্কসিটি ট্রেনটি কমলাপুর থেকে যাত্রা শুরু করে। ঘন কুয়াশার কারণে ইঞ্জিনের ডান পাশের জানালা খুলে লাইনের সঙ্কেত (সিগ্যনাল) দেখছিলেন তিনি। আর চালকের আসনে ছিলেন প্রধান চালক আব্দুল লতিফ। রাত ১০টার দিকে ট্রেনটি সিরাজগঞ্জের জামতৈল স্টেশন ছেড়ে আসামাত্র জানালার ভিতরে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে অবরোধকারী দুর্বৃত্তরা।
বোমার আগুন সঙ্গে সঙ্গে সহকারী চালক বুলবুলের গায়ে লেগে যায়। তবে বোমাটি পুরো বিস্ফোরণের আগেই বুলবুল সেটিকে হাত দিয়ে ধরে জানালার বাইরে ছুড়ে মারেন। এরই মধ্যে চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনের ভিতর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সহকারী ট্রেন চালক বুলবুল উপায় না পেয়ে নিজের জ্যাকেট খুলে আগুনের ওপর গড়াগড়ি শুরু করেন। এতে তাঁর পরনের প্যান্ট ও জ্যাকেট পুড়ে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এ অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে যান ট্রেনের প্রধান চালক আব্দুল লতিব।
আব্দুল লতিব জানান, তিনি বুলবুলকে রক্ষা করবেন, না কি আগুন নেভাতে সহায়তা করবেন ঠিক করতে পারছিলেন না। অবশেষে চালকের আসন থেকে উঠে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। তবে দগ্ধ শরীর নিয়ে চার ঘন্টা ইঞ্জিনেরর মধ্যেই কাটাতে হয় বুলবুলকে। রাত দুইটার দিকে রাজশাহী স্টেশনে আসার পরে ইঞ্জিন থেকে বুলবুলকে নামিয়ে রেলওয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সহকারী ট্রেন চালক বুলবুল বলেন, আমার লক্ষ্য ছিল ট্রেন আর যাত্রীদের বাঁচানো। নিজের জন্য তখন কোন ভাবনা হয় নি। তবে ইঞ্জিনসহ দেড় হাজার যাত্রীকে রক্ষা করতে পেরেছি এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া।
রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান মেকানিক্যাল প্রকৌশলী দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, ‘বুলবুল যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে তা নজিরবিহীন। তাঁর জন্য রক্ষা পেয়েছে সরকারী সম্পদ আর হাজার মানুষের প্রাণ। মাহাবুর রহমান বুলবুল ২০০৫ সালে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে খালাসি পদে চাকরি পান। ২০১০ সালে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী রেলচালক হন। তিনি নাটোরের লালপুরের আজিমপুর গ্রামের মৃত ওসমান গনির ছেলে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ