1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২০ পূর্বাহ্ন

এমব্রয়ডারির কাজ শেখার পাশাপাশি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছে ‘ঐশী’

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৩
  • ২০৭ Time View

oishi newবন্ধুদের সঙ্গে ইয়াবা সেবন করে রঙিন দুনিয়ায় বিচরণ করত। তাই বাবা-মায়ের শাসনকে তার মনে হতো রঙিন দুনিয়ার সবচেয়ে বড় বাধা। আর তাই বাবা-মাকে নেশার ঘোরে -মাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার পর ঐশী আজ অনুতপ্ত। ড্যান্স পার্টি, ডিজে পার্টি আর রঙিন দুনিয়ার বন্ধুদের নিয়ে দিন-রাত আড্ডা দেয়া ঐশী রহমান এখন হঠাৎ করেই নামাজ পড়তে শুরু করেছে। ভুলে গেছে সে সেসব রঙ্গীন দিনের কথা। ভুলে গেছে ইয়াবা আর মাদকে কথা। ঐশী এখন পুরোপুরি বদলে গেছে। মাদকের কথা সে শুনতেই পারছে ঐশী।

যে ইয়াবা আর মাদক ঐশীর জীবনকে অগোছালো করে দিয়েছে, করেছে এতিম, আর এই নেশার কারনে সে আজ সমাজ তথা দেশের কাছে ঘৃনিত এক নারী। আজ সেই সমস্ত নেশাদ্রব্য থেকে দূরে থাকতে চায় ঐশী রহমান। ঐশী শপথ করেছে সে আর জীবনে কখনও মাদক সেবন তো দূরে থাক, মাদকের কাছেই যাবে না সে।

অনুতপ্ত ঐশী গতকাল থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে শুরু করেছে। গতকাল সোমবার কাউকে কিছু না জানিয়ে সবার অগচরে ফজরের নামাজ পড়তে শুরু করে ঐশী। তার নামাজ আদায়ে কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়করা ঐশীর এই কাণ্ডে বিস্মিত হন। শুধু তাই নয়, গতকাল পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে ঐশী।

এদিকে গত রবিবার রাতে খালা সুবর্ণার তত্ত্বাবধানে দেয়া হয়েছে ঐশীর একমাত্র ভাই অহিকে। আপাতত অহি সেখানেই থাকবে ।

গাজীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বেগম লুত্ফুন্নেছা জানান, হঠাৎ করেই কেমন যেন বদলে গেছে ঐশী। তাকে দেখলে আর চেনার উপায় নেই যে এই সেই ঐশী, যে তার জন্মদাতা পিতা-মাতাকে হত্যা করেছে। সোমবার সঠিক সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেছে, সবার সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করছে বলেও জানান লুৎফুন্নেছা। নিজের অপরাধবোধ আর এতিম হওয়ার বেদনা সে হাড়ে হাড়ে বুঝছে। তার রুমে থাকা অন্য মেয়েদের সে বলেছে, আর জীবনে কোনদিন মাদকের ধারে কাছেও যাবে না। এই মাদকই তার বাবা-মাকে খেয়েছে। কোনদিন সুযোগ পেলে ছোট ভাইকে মানুষের মতো মানুষ করতে চায় সে। ছোট ভাইয়ের জন্য তার মনও কাঁদে।

বেগম লুৎফুন্নেছা আরো জানান, আমাদের তত্ত্বাবধানে থাক অন্যান্যদের মতোই সে স্বাভাবিকভাবে দিন পার করছে। নিয়ম অনুযায়ী তাকে খাবার দেয়া হচ্ছে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত সে এমব্রয়ডারির কাজ শিখেছে। এরপর দুপুরের খাবারের পর বেলা ৩টা থেকে ৫টা একই কাজ শিখেছে। খুবই মনোযোগী ও সহজেই সে কাজ শিখতে পারছে। তার মধ্যে অনুশোচনা বোধও কাজ করছে। অন্যদিকে সুমি লেখাপড়া না জানায় তাকে গতকালই শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, ঐশীর ছোট ভাই অহিকে গত রবিবার রাতে পুলিশের হেফাজত থেকে খালা সুবর্ণার হেফাজতে হস্তান্তর করা হয়েছে।তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বড় মেয়ে ঐশীর হাতে বাবা পুলিশ ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও মা স্বপ্না রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী অহি রহমান। তদন্তের স্বার্থে তাকে রাখা হয়েছিল পুলিশের বিশেষ শাখার একজন কর্মকর্তার হেফাজতে। তার কাছ থেকে কৌশলে বাবা-মা হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করেছে তদন্তকারীরা। তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে অহি বলেছে, ‘আঙ্কেল! আপু ছুরি দিয়ে আম্মুর রক্ত বের করেছে’. এরপর আর কোন কথা বলতে পারেনি। পরে অহিকে গোপনে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে রেখেছিলেন তারা। সূত্রমতে, নিহত স্বপ্না রহমানের আপন বোন সুবর্ণা রাজধানীর উত্তরায় পরিবার নিয়ে থাকেন। আপাতত সেখানেই অহিকে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্রে আরো জানা যায়, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলার তিন সাক্ষী আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি দিয়েছেন। সাক্ষীরা হলেন কেয়ারটেকার আসাদুজ্জামান, গার্ড মো. আব্দুল মোতালেব ও শাহিনুর ইসলাম। গতকাল সোমবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবদুল হান্নান সাক্ষীদের আদালতে হাজির করে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন জানান। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার পৃথক তিন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কেশব রায় চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর ও রেজাউল করিমের খাস কামরায় আলাদা আলাদাভাবে জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আদালতসূত্রে জানা যায়, জবানবন্দিতে তারা বলেন, ঘটনার পরদিন সকালে ঐশী, কাজের মেয়ে সুমি ও ছেলে অহি কাপড় ভর্তি ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যায়। যাবার সময় জিজ্ঞাসা করলে ঐশী জানায়, এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ