ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার বলেছেন, গাজার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে তিনি ‘শিগগিরই’ অগ্রসর হওয়ার আশা করছেন।
দুই নেতার বৈঠকের পর জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মেৎসের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা গাজায় হামাসের শাসনের অবসান কিভাবে ঘটানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছি… আমরা প্রথম অংশটি শেষ করেছি এবং এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে যাচ্ছি, যা আরো কঠিন।’
নেতানিয়াহু আরো বলেন, এই অঞ্চলে ‘শান্তির সুযোগ’ নিয়ে আলোচনা করতে তিনি চলতি মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা হামাসের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর চালানো হামলায় আটক করা জীবিত ও মৃত ৪৭ জন বন্দিকে মুক্তি দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।
এ পর্যন্ত এক ইসরায়েলি পুলিশ কর্মকর্তার মরদেহ ছাড়া বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
নেতানিয়াহু আরো বলেন, ‘এখন আমাদের সামনে রয়েছে দ্বিতীয় ধাপ, যা কোনো অংশেই কম ভীতিকর নয়—আর তা হলো হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং গাজাকে সামরিকীকরণমুক্ত করা। তৃতীয় একটি ধাপও রয়েছে, আর তা হলো গাজাকে উগ্রবাদমুক্ত করা—যা অনেকেই একসময় অসম্ভব বলে মনে করতেন। কিন্তু এটি জার্মানিতে করা হয়েছে, জাপানে করা হয়েছে, উপসাগরীয় দেশগুলোতে করা হচ্ছে, গাজাতেও করা সম্ভব।
’
চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও গাজার যুদ্ধবিরতি এখনো ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে, দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে এটি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় একাধিক ধাপ রয়েছে : প্রথমে যুদ্ধবিরতি, এরপর ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার ও গাজার জন্য একটি নতুন প্রশাসন গঠন এবং সবশেষে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে ধ্বংস হওয়া বিস্তীর্ণ এলাকার পুনর্গঠন।
মেৎস শনিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলে পৌঁছন, দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম সফর। গাজা যুদ্ধের কারণে দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহ্যগতভাবে দৃঢ় সম্পর্ক নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার পর তিনি বার্লিনের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
মে মাসে ক্ষমতায় আসা মেৎস এর আগে ইসরায়েলের অবিরাম সামরিক অভিযানের বারবার সমালোচনা করেছেন।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মেৎস বলেন, ইসরায়েলের সমালোচনা ‘সম্ভব এবং কখনো কখনো হয়তো প্রয়োজনীয়ও’।
তিনি আরো বলেন, ‘জার্মানি ও ইসরায়েলের মধ্যকার সম্পর্ক এটি সহ্য করতে পারে। কিন্তু ইসরায়েলি সরকারের নীতির সমালোচনাকে ইহুদিবিদ্বেষের অজুহাত হিসেবে অপব্যবহার করা যাবে না।’