1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৩ অপরাহ্ন

ফিলিস্তিনে মাঝে মাঝে নাকবা ঘটানো দরকার : সাবেক ইসরায়েলি গোয়েন্দা প্রধান

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫১ Time View

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য গত বছর পদত্যাগ করেন ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান আহারন হালিভা। তার একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। সেখানে সাবেক প্রধান আহারন হালিভা বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনে মাঝে মাঝে নাকবা ঘটানো দরকার এবং গাজায় ক্রমবর্ধমান মৃত্যু সংখ্যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অপরিহার্য।’

গত শুক্রবার ইসরায়েলের চ্যানেল ১২–এর টিভি অনুষ্ঠান উলপান শিশিতে সম্প্রচারিত অডিও রেকর্ডিংয়ে হালিভাকে বলতে শোনা যায়, ‘গাজায় ইতোমধ্যেই ৫০ হাজার মানুষ মারা গেছে।
এটি প্রয়োজনীয় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে আবশ্যক।’ তবে চ্যানেল ১২ জানায়নি, কখন এই বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, মার্চে নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছিল। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৮৯০ জনে।
নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন হামলার প্রসঙ্গে হালিভা বলেন, ‘৭ অক্টোবর প্রতিটি (ভুক্তভোগীর) জন্য, ৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মরতে হবে।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘কোনো বিকল্প নেই। তিনি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র তৈরির জন্য জায়নিস্ট মিলিশিয়াদের দ্বারা ফিলিস্তিনের জাতিগত নির্মূলের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘মাঝে মাঝে নাকবা ঘটানো দরকার, যাতে তারা এর পরিণতি অনুভব করে।
আমি প্রতিশোধের কথা বলছি না, বরং এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বার্তা।’ গাজাকে তিনি আখ্যা দেন একটি ‘অস্থির পাড়া’ হিসেবে।

প্রতি বছর মে মাসের ১৫ তারিখ ফিলিস্তিনিরা পালন করে আল-নাকবা দিবস বা বিপর্যয়ের দিবস। এই দিন থেকেই ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িঘর হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়তে শুরু করে। এই নাকবা দিবসের উৎপত্তি ১৯৪৮ সালের ১৫ই মে শুরু হওয়া আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ থেকে।
তার একদিন আগে, ১৪ই মে ইসরায়েল নিজেদের ঘোষণা করে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে।

যে এলাকায় ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী সেখান থেকে বেশিরভাগ আরবকে বহিষ্কার করে, অথবা তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ১৯৪৮-১৯৪৯ এই দুই বছরের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে। ইসরাইল বানাতে যেয়ে ৫৩০ গ্রাম এবং শহরকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়। এ ধ্বংসের লীলায় জড়িত ছিলো ইহুদিবাদী আধাসামরিক বাহিনী এবং ইসরাইলের সেনাবাহিনী।

৭ অক্টোবর কতজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, অন্তত ১ হাজার ১৯৫ জন মারা যান। ইসরায়েলের সংবাদপত্র হারেৎজের মতে, ওইদিন ইসরায়েলি সেনারা বহুল আলোচিত ‘হানিবাল নির্দেশনা’ ব্যবহার করেছিল। যার মাধ্যমে বন্দি হওয়া ঠেকাতে প্রয়োজনে নিজেদের সেনাদেরও হত্যা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ে হালিভা আরো বলেন, ইসরায়েল সচেতনভাবে পশ্চিম তীরে রাজনৈতিকভাবে শত্রুভাবাপন্ন পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। যাতে হামাসের মতো গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় না যায়। এভাবে দুই রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। তিনি জানান, ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের পর হামাসকে ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সেটি কার্যকর করার কোনো ইচ্ছাই রাখেনি।

হালিভার বলেন, ‘আপনারা বুঝতে পারছেন না, এখানে বিষয়গুলো অনেক গভীর। ইসরায়েল–ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বই মূল সমস্যা। কারণ হামাস ইসরায়েলের জন্যই ভালো। এটি হলো স্মোটরিচের (অর্থমন্ত্রী বেজালেল) যুক্তি। তিনি চান ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ভেঙে দেওয়া হোক, আর পশ্চিম তীরেও হামাস নিয়ন্ত্রণ নিক, যেমনটা গাজায় ঘটেছিল।’

তিনি বলেন, ‘কেন? কারণ যদি পুরো ফিলিস্তিন অস্থিতিশীল হয়, তখন কারও সঙ্গে কোনো আলোচনাই সম্ভব নয়। ফলে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের চুক্তিও হবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আছে। কিন্তু হামাস এমন একটি সংগঠন, যাদের সঙ্গে অবাধে যুদ্ধ করা যায়। এর কোনো বৈধতা নেই, কোনো আন্তর্জাতিক মর্যাদা নেই—তাদের বিরুদ্ধে তলোয়ার চালানো যায়।’

এ বছরের জানুয়ারিতে ইসরায়েল ও হামাস তিন ধাপের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছিল। কিন্তু মার্চে ইসরায়েল কয়েকজন বন্দিকে ফেরত নেওয়ার পর আবারও গাজায় বোমাবর্ষণ শুরু করে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনার আগেই চুক্তি ভেঙে দেয়। এরপর থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গাজার ওপর ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনায় পূর্ণ সমর্থন দিয়ে আসছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ধারাবাহিক বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ২৩ লাখের বেশি অধিবাসী বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

সূত্র : মিডিল ইস্ট আই।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ