1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন

আদিবাসীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ও শঙ্কায় ভরা : সন্তু লারমা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫
  • ৩৩ Time View

আদিবাসীদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)।

তিনি বলেছেন, ভূমি থেকে উচ্ছেদ, নারী নিপীড়ন, বৈষম্য, বিচারহীনতাসহ নানা কারণে প্রান্তিক থেকে আরো প্রান্তিক হচ্ছে আদিবাসী জনগণ। সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমেও আদিবাসী নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি। কাজেই আদিবাসীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ও শঙ্কায় ভরা।

শনিবার (৯ আগস্ট) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন সন্তু লারমা।

শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত সন্তু লারমার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পল্লক চাকমা। লিখিত বক্তব্যে সন্তু লারমা বলেন, ‘পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীরা এখনো হুমকির মধ্যে জীবন যাপন করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে তারা ক্রমে ভূমিহীন ও দেশান্তরী হচ্ছে।
পাহাড়ের আদিবাসীদের সমস্যা সমাধানে সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তি দীর্ঘ ২৮ বছরেও এই রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বরং নতুন নতুন সমস্যা-সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে। আর সমতলের আদিবাসীদের অবস্থা আরো নাজুক। এই অবস্থায় আত্মনিয়ন্ত্রণের লড়াই জোরদার এবং গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে প্রগতিশীল আদর্শের কোনো বিকল্প নেই।

ঐক্য ও সংহতি সুদূঢ়করণে আদিবাসী তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ বছর আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যৎ গঠনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বার্থক প্রয়োগ’। আমি মনে করে, এই প্রতিপাদ্য ব্যবহারের মাধ্যমে জাতিসংঘ যে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে তা হলো, তথ্য-প্রযুক্তি বিপ্লবী নতুন মাত্রা হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শুরু হয়েছে, তা আদিবাসী জনগণের জন্য নতুন সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নেতিবাচক দিকগুলো কাটিয়ে উঠে তার সার্থক প্রয়োগের মাধ্যমে আদিবাসী জীবনের সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, গণঅভ্যুত্থানের পর এক বছরেও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সঙ্গে রাষ্ট্রের বিমাতাসুলভ আচরণের পরিবর্তন হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হলেও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ প্রক্রিয়ায় ৫০টিরও বেশি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে উপেক্ষা করা হচ্ছে।
অতীতে আদিবাসীরা যেভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এখনো সেভাবেই চলছে। তবুও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রতি চলমান বৈষম্য নিরসন করে তাদের অধিকার সংরক্ষণে আন্তরিক হবে রাষ্ট্র, এমনটাই প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপনের দাবি জানিয়ে জানিয়ে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। এ লক্ষ্যে সময়সূচিভিত্তিক রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। সমতল অঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সম্পর্কে বিকৃত, খণ্ডিত বা মিথ্যা তথ্য প্রচার করা সব গণমাধ্যম বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ওপর সব নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধ করাসহ সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ২০০৭ সালে গৃহীত ‘আদিবাসীবিষয়ক ঘোষণাপত্র’ ও আইএলও ১৬৯ নম্বর কনভেনশন অনুসমর্থন ও আইএলও কনভেনশন ১০৭ বাস্তবায়ন করতে হবে।

আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। সকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ঢাকাস্থ জুম্ম জনগোষ্ঠির প্রতিনিধি ড. অজয় চাকমা, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ