1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন

লিবিয়া ইস্যুতে রুশ-মার্কিন দ্বন্দ্ব চরমে

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১১
  • ১৪৩ Time View

লিবিয়ায় ন্যাটোর বোমা হামলায় বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘের তদন্ত দাবি করেছে রাশিয়া। গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ দাবি উত্থাপন করে তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার এই দাবিকে সস্তা স্টান্টবাজি অভিহিত করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।

সিরিয়ার সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের নিহত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানাতে অনাগ্রহী মস্কো এখন বিশ্বের দৃষ্টি অন্য দিকে সরাতে এই প্রস্তাব তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতাধারীর এই দুই সদস্যের তীব্র বাদানুবাদ, লিবিয়ায় গাদ্দাফিকে উৎখাতে বিদ্রোহীদের সাহায্যার্থে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিমান হামলার বৈধতা প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদেশগুলোর মতবিরোধকে নতুন করে আলোচনায় আনল।

গত ফেব্রুয়ারি লিবিয়াতে সশস্ত্র বিক্ষোভ শুরুর পর বেসামরিক লোকজনের নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা ন্যাটোর নেতৃত্বে অভিযান চালায়। কিন্তু রাশিয়া, চীন এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন এই অজুহাতে লিবিয়া অভিযানের তীব্র সমালোচনা করে।

রাশিয়া এবং তার সমর্থক রাষ্ট্রগুলোর দাবি, জাতিসংঘ অনুমোদিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে ন্যাটো লিবিয়ার পশ্চিমাবিরোধী গাদ্দাফি শাসনের পতন ঘটাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে।

লিবিয়ায় জাতিসংঘের নো ফ্লাই জোন কার্যকরের পর গাদ্দাফি বাহিনীর ওপর ন্যাটোর ব্যাপক বিমান হামলা এবং বিদ্রোহীদের প্রতি ন্যাটোর সক্রিয় সহযোগিতার মুখে দেশটির ৪২ বছরের শাসক মোয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হন এবং অক্টোবর মাসে বিদ্রোহীদের হাতে ধৃত হয়ে নিহত হন।
জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভিতালি চারকিন নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বলেছেন, লিবিয়ায় ন্যাটোর অভিযানের ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের তত্ত্বাবধানে নতুন করে তদন্ত করা জরুরি।

তিনি বলেন, ‘ন্যাটো নেতাদের প্রচারণার কারণে বিশ্ববাসী বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিল লিবিয়ায় ন্যাটো হামলায় কোনও বেসামরিক মানুষ নিহত হয়নি। এখন সময় এসেছে সত্য উদ্ঘাটনের।’

বৈঠকে চারকিনের বক্তব্যের পরপরই জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি সুসান রাইস মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে চারকিনের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘যতো সব মিথ্যা আর ভুয়া অভিযোগ।’

তিনি বলেন, ‘সিরিয়ার বর্তমান অত্যাচারী শাসকদের হাতে বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার প্রতিবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়ে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি সিরিয়া থেকে অন্য ইস্যুতে ঘোরাতেই রাশিয়ার এই সস্তা স্টান্টবাজি।’

এ জন্য রাশিয়া গাদ্দাফির অত্যাচারের হাত থেকে লিবিয়ার সাধারণ মানুষকে রক্ষায় ন্যাটো এবং এর মিত্রদের সফলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

লিবিয়ায় ন্যাটো অভিযানের প্রধান সহযোগী ফ্রান্সের জাতিসংঘে নিযুক্ত প্রতিনিধি জেরার্দ আরুদ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে সর্মথন করে বলেন, ‘লিবিয়া অভিযানের ব্যাপারে জাতিসংঘের অধীনে দু’টি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার গঠিত একটি কমিটি আগামী মার্চের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে । আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তত্ত্বাবধানেও একটি কমিটি গঠিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘লিবিয়ার ব্যাপারে তৃতীয় তদন্ত কমিটির যৌক্তিকতা নেই যেখানে সিরিয়ায় গত ৩-৪ দিনে ২৫০ জন মানুষ নিহত হওয়া সত্ত্বেও জাতিসংঘ কোনও তদন্ত কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

বিশ্লেষকদের মতে, লিবিয়ায় ন্যাটোর অভিযানে অসন্তুষ্ট চীন এবং রাশিয়া প্রতিশোধ নিতেই বিক্ষোভকারীদের দমনে নির্যাতনের অভিযোগ সত্ত্বেও সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অবরোধ আরোপের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

তবে গত সপ্তাহে হঠাৎ করে সিরিয়ায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নীপিড়ন ও সহিংসতা বন্ধের জন্য নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার প্রস্তাব উত্থাপন পশ্চিমাদের অবাক করেছে।

রাশিয়ার অবস্থানকে স্বাগত জানালেও একে যথেষ্ট নয় বলে অভিহিত করেছে তারা। কারণ এই প্রস্তাবে সিরিয়ার শাসকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কোনও প্রস্তাব রাখা হয়নি।

জাতিসংঘের হিসাবে, সিরিয়ায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে গত ৯ মাসে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০০ মানুষ নিহত হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ