1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
গাজা যুদ্ধবিরতি দ্বিতীয় ধাপ শুরুর ঘোষণা দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল কোনো ছাড় নয়, ইউক্রেনকে ডনবাস ছাড়তে হবে নয়তো শক্তি প্রয়োগে স্বাধীন করব কেউ কেউ জুলাইয়ের স্পিরিটকে বিক্রি করে দিচ্ছে : শিবির সভাপতি ঢাকায় পৌঁছেছেন ডা. জুবাইদা বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আজ সারা দেশে দোয়া প্রার্থনা ফাঁকা আরো ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল বিএনপি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইজিপিকে অপসারণে আইনি নোটিশ জুবাইদা রহমান কাল সকালে দেশে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন : মাহদী আমিন মধুপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালিদের ৮৮টি বন মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

ম্যাডাম কেন বিচার বন্ধ করতে চান?

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১১
  • ১৬৫ Time View

সর্বশেষ বিবিসি’র ইন্টারভ্যুতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে আরও কথা বলেছেন খালেদা জিয়া। এমন যত কথা বলবেন ভালো। আর তা স্বাস্থ্যকরও। পেটের সব বেরুলে অনেক কিছু খোলাসা হয়ে যায়।

সেখানে খালেদা জিয়া আবারও বলেছেন, বিচার তিনিও চান। তবে বিচার হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের। নিরপেক্ষ। পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীদের ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নটি তিনি আবার সামনে নিয়ে এসেছেন। বিচার যেহেতু চান, ক্ষমতায় থাকতে তা কেন করেননি বা আবার ক্ষমতায় গেলে পাকিস্তান থেকে সেই যুদ্ধবন্দীদের আবার ফিরিয়ে এনে বিচারের উদ্যোগ নেবেন কিনা খালেদা জিয়া তা অবশ্য বলেননি।

খালেদা জিয়ার বক্তব্যের একটি স্ববিরোধিতা হলো তিনি বিচার চান, আবার এখনকার চলমান বিচার বন্ধ করতে বলেন। কেন ম্যাডাম? বিচার তো একটি চলমান প্রক্রিয়া। আজ আওয়ামী লীগ যেটা শুরু করেছে, নিয়ত সাফ থাকলেতো তিনি আগামী দিনেও তা চালিয়ে যেতে পারবেন।

আজ আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে না। যেখানে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলেতো তাদের বিচার করতে পারবেন। তাহলে এখন এই বিচার বন্ধ করতে বলা কেন?

অনেক প্রশ্ন আছে- খালেদা জিয়ার বক্তব্যে। তা ম্যাডাম কবে থেকে এর বিচার চান? আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার কারণে হঠাৎ করে তো দেশের মানুষ, বিশেষ করে শহীদ পরিবারের সদস্য, মিডিয়ার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষেরা এই বিচার চাচ্ছেন না।

বিএনপি-জাতীয় পার্টির আমলেও আমরা এই বিচার চেয়েছি। আওয়ামী লীগ যখন কৌশলগত আন্দোলনের নামে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের সঙ্গে লিয়াজোঁ করছিল, তখনও-এর বিরোধিতা নিন্দা করেছি। তা খালেদা জিয়া কবে থেকে এর বিচার চান?

বিচার চাইলে কী তিনি শহীদ জননী জাহানারা ইমামসহ গণ আদালতের সঙ্গে জড়িত চব্বিশ জন বিশিষ্ট নাগরিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিতে পারেন? বিচার চাইলে কী স্বাধীনতা বিরোধীদের দল জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক ছত্রছায়া দিতে তাদের সঙ্গে জোট করতে পারেন?

বা আত্মস্বীকৃত ২ স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদকে মন্ত্রী করে তাদের গাড়ি শহীদের রক্তে রঞ্জিত জাতীয় পতাকা দিতে পারেন? এখন যখন এ বিচার তিনিও চান বলছেন, এ প্রশ্নগুলোর উত্তরতো খালেদা জিয়াকেই দিতে হবে।

স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর এসে দেশের মানুষকে কী তার কাছে জানতে, শিখতে হবে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীর সংজ্ঞা? ম্যাডাম কী আমাদের বলে দেবেন গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান বা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এরা যদি স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী না হয়, তাহলে এরা কোথায় কোন সেক্টরে বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ করেছে?

মুক্তিযুদ্ধে এরা জিয়াউর রহমানের পক্ষে না বিপক্ষে ছিল? একাত্তরে তারা কী করেছে, না করেছে তারাতো বরাবর নিজের নিজের জবানিতেই বলেছে। দেশের মানুষজন, তাদের এলাকার লোকজনই সব জানে। দৈনিক সংগ্রামের একাত্তরের ফাইলে এসবের সবিস্তার বর্ননা আছে। হঠাৎ করে খালেদা জিয়া আমাদের বলতে চাইবেন না, সে সব মিথ্যা, সংগ্রাম পত্রিকার রিপোর্ট মিথ্যা, এরাই সবাই মুক্তিযোদ্ধা ছিল। আমার স্বামীর সঙ্গে থেকে যুদ্ধ করেছে। এ কথাগুলোও কী বুকে হাত দিয়ে সাফ বলতে পারবেন খালেদা জিয়া? যদি না পারেন তাহলে এই বিচার বন্ধের আবদার কেন?

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দী ও যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দেবার কথা তুলেছেন খালেদা জিয়া। অবশ্যই সেটি ছিল জাতির সঙ্গে অন্যায় একটি সিদ্ধান্ত। মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যাপারে জাতিসংঘের সংজ্ঞায় সুস্পষ্ট উল্লেখ করা আছে, কোনও ব্যক্তি বা রাষ্ট্র এ ধরণের অপরাধীদের ক্ষমা করতে পারে না।

কিন্তু সেই অন্যায়ের সঙ্গে কী জিয়াউর রহমানসহ সেনাবাহিনীর তৎকালীন শীর্ষ অফিসাররাও জড়িত নন? সেই ১৯৫ জনের বিনিময়ে কী তখন পাকিস্তানে বন্দী বাঙ্গালি সেনা অফিসার-জওয়ানদের সপরিবারে দেশে ফেরত আনা হয়নি? এখানে আনার পর তাদের সবাইকে কী সেনাবাহিনীতে অঙ্গীভূত করা হয়নি?

তেমন একজন সেনা অফিসার এরশাদের কাছ থেকে কী খালেদা জিয়া গ্রহণ করেননি সেনানিবাসের সেই বাড়িটি? তাহলে কী দাঁড়ায়? অন্যায় যে করে- আর অন্যায় যে সহে! ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনাকে ছেড়ে দিয়ে সেদেশে আটক স্বদেশী সেনা কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনার অপরাধে তো পরবতী সময়ে তাদের সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্রে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।

আর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কারণেই তো জিয়া হয়েছেন দেশের রাষ্ট্রপতি। জিয়ার পর খালেদা হয়েছেন বিএনপি’র চেয়ারপার্সন আর দেশের প্রধানমন্ত্রী। কই জিয়া বা ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াতো কোনদিন প্রশ্নটি তোলেননি বা তাদের ফিরিয়ে এনে বিচারের উদ্যোগ নেননি। সে কারণেইতো এখনকার জ্বলজ্বলে প্রশ্ন, খালেদা জিয়া কবে থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান? অথবা কবে থেকে খালেদা জিয়ার হঠাৎ বোধোদয় হলো যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া দরকার?

চলতি বিচারকে আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ করতে বলেছেন খালেদা জিয়া। আন্তর্জাতিক মানের বিচারের জন্যে জেনেভায় আন্তর্জাতিক আদালতে এদের সোপর্দ করার কথা। জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকা আসার পর খালেদাতো তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কই তার কাছেও তিনি কী বলার চেষ্টা করেছেন- এদের এখানে নিরপেক্ষ বিচার হবে না। এদের জেনেভার আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যান।

বিচারকের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খালেদা জিয়া। এই প্রশ্নের জবাবটিও তার বিরুদ্ধে যায়। এরশাদের সঙ্গে ক্যাসেট কেলেংকারিতে ধরা পড়ার পর জানা গেল সংশ্লিষ্ট বিচারপতি ছিলেন বাগেরহাট বিএনপি’র সভাপতি। খালেদা জিয়া কী তেমন একজন বিচারপতিকে এই আদালতে চেয়েছিলেন?

নিরপেক্ষতার সংজ্ঞা তার কাছে কী? নিরপেক্ষতার বিষয়ে তার জনপ্রিয় তত্ত্বটিতো হচ্ছে: ‘পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ হতে পারে না।’ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারক প্যানেলের জন্যে তেমন একদল নিরপেক্ষ পাগল ও শিশুর নাম প্রস্তাব করবেন খালেদা জিয়া?

বিরোধীদলের নেত্রী হিসেবে দেশের ছায়া প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ৩ বার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। হয়তো আগামীতেও আবার হবেন। কিন্তু দেশের শহীদ পরিবারগুলো এত ভাগ্যাহত যে কোনদিন তার কাছে জবাবটি পেল না যে, স্বজনহত্যার বিচার পাবার অধিকারটি তাদের আছে, না নেই?

এই প্রশ্নের জবাব কী তার কাছে আছে? না কোনদিন দিতে হবে না?

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ