আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী দিকনির্দেশনা দিতে সারাদেশের নেতাদের ডেকেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়ে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে দলকে পরিচালনার জন্য যারা মূখ্য ভূমিকা পালন করেন, মূলত তাদেরই নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও করণীয় বিষয়ে একটি ‘গাইড লাইন’ দেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
সভায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, জাতীয় পরিষদ সদস্যবৃন্দ, দলীয় মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, সকল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দপ্তর ও উপ-দপ্তর সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদকগণ উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি সর্বশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দলের সিনিয়র নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর করে দলকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করা, দলের প্রচারণার কৌশল কী হবে, সরকারের উন্নয়নের চিত্র এবং বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াওয়ের তথ্য কীভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
পাশাপাশি এসব কাজে নেতাকর্মী ও দলীয় সমর্থকদের কীভাবে কাজে লাগানো যায় এ বিষয়ে বিস্তর নির্দেশনা দেয়া হবে। নতুন নতুন তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের মধ্যে কীভাবে প্রচারণা চালানো যায় সেসব বিষয়েও তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকদের নির্দেশনা দেয়া হবে বৈঠকে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, শনিবার থেকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হবে। আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতির সর্বাত্মক অগ্রযাত্রা শুরু করব আমরা।’
দলীয় সূত্র জানায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রতিযোগিতা না হওয়ায় ওই ভোট নিয়ে নেতাকর্মীদের খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি। এবারের নির্বাচনে বিএনপিসহ অন্যান্য দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ফলে এ নির্বাচনে প্রচারণায় নতুন মাত্রা থাকতে হবে। শুধু তাই নয়, নিত্য-নতুন প্রযুক্তিরও ব্যাপক ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের ফর্মুলায় তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দলীয় প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হবে। এবারও এ পরিকল্পনার রূপকার প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বিশেষ বর্ধিত সভায় দেশের আটটি বিভাগ থেকে আটজন জেলা নেতাকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এরই মধ্যে আট সাংগঠনিক সম্পাদককে নিজ বিভাগের একজন নেতাকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, বর্ধিত সভায় নির্বাচনী ইশতেহার তৈরিতে তৃণমূল নেতাদের পরামর্শ চাওয়া হবে। অঞ্চলভেদে কোথায় কোন বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে হবে, তারও একটা খসড়া ধারণা তুলে আনার চেষ্টা করা হবে। একই সঙ্গে সংগঠনের কোথায় কী ধরনের সমস্যা রয়েছে তা নিয়েও মতামত চাওয়া হবে তৃণমূল নেতাদের কাছে। সে হিসেবেই সমাধানের কাজ করা হবে আগামীতে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।