1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০৩ অপরাহ্ন

প্রার্থী বাছাইয়ের পদ্ধতি এখনো ঠিক করেনি আ.লীগ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫
  • ১৬০ Time View

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই ও মনোনয়নের কোনো পদ্ধতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী 11লীগের গঠনতন্ত্রে নির্ধারণ করা নেই। সে জন্য এই মনোনয়ন কীভাবে হবে, তা ঠিক করতে শিগগিরই দলের কার্যনির্বাহী সংসদ সভা করবে। এদিকে, দলীয় পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের পরই সরকারি দলের আগ্রহী প্রার্থীরা মন্ত্রী, নেতা ও সাংসদদের পেছনে ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছেন। প্রতিটি পৌরসভায় পাঁচের অধিক দলীয় নেতা নির্বাচন করতে চাওয়ায় এবার প্রার্থী বাছাই করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা, সাংসদ ও মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় আওয়ামী লীগ এককভাবেই এ নির্বাচন করতে চায়। জাতীয় নির্বাচনের মতো জোটগতভাবে এ নির্বাচন করতে গেলে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।
ওই নেতারা মনে করেন, সব ধরনের নির্বাচনই রাজনৈতিক দলে গতি আনে। স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে চাঙাভাব এসেছে। সাত বছর ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার কারণে দলীয় কার্যক্রম দিবসভিত্তিক হয়ে পড়েছিল। অনেকে টাকা বানানোর পেছনে ছুটেছেন। এখন স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে সবাই তৎপর হয়ে উঠেছেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন আমাদের কাজ হচ্ছে কোন পদ্ধতিতে প্রার্থী বাছাই হবে এর রূপরেখা ঠিক করা। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে শিগগিরই এটা ঠিক করা হবে।’ স্থানীয় নির্বাচন জোটগতভাবে হবে নাকি আলাদা হবে—জানতে চাইলে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি।
দলের নীতিনির্ধারণী একটি সূত্র জানিয়েছে, দলীয়ভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়ে দলে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিগগিরই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক করে প্রার্থী বাছাইয়ের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে। সূত্র আরও জানায়, প্রতীক ও দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের মাধ্যমে নির্বাচনের বিষয়টি সরকারের অনেক ভাবনার ফসল। এ জন্য দলীয় প্রার্থী বাছাই এবং সেসব প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য দল থেকে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকেই সারা দেশের মেয়াদোত্তীর্ণ ২৪৫টি পৌরসভায় নির্বাচন শুরু হয়ে যাবে। এরপর মার্চ-এপ্রিল থেকে শুরু হবে ৪ হাজার ৫৫৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এসব নির্বাচন এত দিন নির্দলীয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় প্রতীক ও প্রার্থী বাছাই পদ্ধতি ঠিক করার জন্য সাংগঠনিক প্রস্তুতির বিষয় আছে। দলীয় ফোরামে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে। দলের মধ্যে মনোনয়নের জন্য সুস্থ প্রতিযোগিতা সব সময় থাকে। এবার হয়তো প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে। সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থীটাই যাতে দলীয় মনোনয়ন পান, সেই পদ্ধতিই অবলম্বন করা হবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতা বলেন, দলীয় প্রতীক ও দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকেই বাসায় এসে দোয়া ও সমর্থন চাইছেন। একজন সাংসদ বলেন, সম্ভাব্য প্রার্থীরা পারলে সকাল-বিকেল পা ধরে সালাম করেন। অনেকে তাঁদের ডিঙিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। আরেক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে নালিশও দিচ্ছে।
রাজশাহী জেলার সম্ভাব্য এক পৌর মেয়র পদপ্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনানুষ্ঠানিক হলেও সব সময় দলীয় প্রার্থী বাছাই করা হয়। তবে এবার নতুন পদ্ধতিতে প্রার্থী বাছাই হবে। কীভাবে, কাকে ধরলে মনোনয়ন পাওয়া যাবে এটা নিয়ে তিনি কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। স্থানীয় নেতা ও সাংসদকে পক্ষে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি। ওই জেলার আরেক সম্ভাব্য পৌর মেয়র প্রার্থী বলেন, দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে অনেকে টাকাওয়ালা ও পেশিশক্তির অধিকারী হয়েছেন। মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এঁদেরই তোড়জোড় বেশি। দল নিশ্চয় টাকা নয়, ত্যাগী নেতা দেখে মনোনয়ন দেবে। ময়মনসিংহ জেলার এক সম্ভাব্য পৌর মেয়র প্রার্থী বলেন, জেলা থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত নানা বলয় আছে। একজনের আনুকূল্য চাইলে অন্যজন বেজার হন। এরপরও সবার সঙ্গেই যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছেন। আগামী সপ্তাহে ঢাকায় এসে কিছু কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তিনি।
একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট হলে প্রার্থী বাছাইয়ে সাংসদদের ভূমিকা কিছুটা কমে আসবে। কারণ, সাংসদ সব পৌরসভা ও ইউনিয়নে নিজের লোকদের বসাতে পারতেন। এখন একটি কমিটি বা বোর্ডের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করা হবে। এ ক্ষেত্রে সাংসদ বোর্ড বা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবেন। তাই সব সিদ্ধান্ত নিজের পক্ষে হয়তো নিতে পারবেন না।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচনের জন্য ১১ সদস্যের একটি সংসদীয় বোর্ড থাকে। দলীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সংসদীয় দলের নেতা পদাধিকার বলে সদস্য। অন্যরা কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। কিন্তু তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কমিটি কেমন হবে, তা গঠনতন্ত্রে নেই।
কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, এ মাসে বা আগামী মাসের শুরুতে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হবে। এ বৈঠকে স্থানীয় নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া এবং কমিটি কেমন হবে, এর রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে। কার্যনির্বাহী সংসদে নেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে গঠনতন্ত্রে কোনো কিছু যোগ করার থাকলে তা পরবর্তী কাউন্সিলে অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে সংসদীয় বোর্ডের আদলে জেলা পর্যায়ে কমিটি করে দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব, সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি রাখা হতে পারে। চূড়ান্তভাবে তালিকা কেন্দ্রীয় সংসদীয় কমিটি থেকে অনুমোদন করা হবে।
বর্তমানে পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু আছে। বর্তমানে জেলার নেতা, স্থানীয় সাংসদ, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ক্ষেত্রবিশেষে অঞ্চলভিত্তিক বড় নেতারা এ কাজ করেন। কিছু কিছু স্থানে তৃণমূলের ভোটের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় নেতারা সমঝোতার ভিত্তিতে একজনকে নির্বাচন করেন। তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মনোনয়ন ঠিক করা হয় না।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ