ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ওডেসাতে হামলা আরো জোরদার করেছে রাশিয়া। সাম্প্রতিক এসব হামলার ফলে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট সৃষ্টি হয়েছে এবং অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক অবকাঠামো মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওলেক্সি কুলেবা জানিয়েছেন, রাশিয়া ওডেসা অঞ্চলে ‘পদ্ধতিগত (সিস্টেম্যাটিক) হামলা’ চালাচ্ছে। তিনি গত সপ্তাহে সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়তো এখন ওডেসার দিকে সরে এসেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, এই ধারাবাহিক হামলার উদ্দেশ্য হলো ইউক্রেনকে সামুদ্রিক লজিস্টিকস ও বাণিজ্যিক নৌপথ থেকে বিচ্ছিন্ন করা।
চলতি ডিসেম্বরের শুরুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’-এর ট্যাংকারে ড্রোন হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইউক্রেনের সমুদ্রপথে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বলতে রাশিয়ার এমন শত শত ট্যাংকারকে বোঝানো হয়, যেগুলো ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল পরিবহনে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যায় ওডেসার বন্দর অবকাঠামো লক্ষ্য করে নতুন হামলা চালানো হয়।
এতে একটি বেসামরিক জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অঞ্চলটির গভর্নর। এটি সাম্প্রতিক কয়েক দিনে চালানো শতাধিক হামলার সর্বশেষ ঘটনা, যার ফলে ওডেসা অঞ্চলে দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে এবং বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।
রবিবার রাতে চালানো হামলায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে একটি প্রধান বন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যেখানে ময়দা ও ভোজ্যতেলের ডজনখানেক কনটেইনার পুড়ে যায়।
এর আগের সপ্তাহে ওডেসার পূর্বে অবস্থিত পিভদেননি বন্দরে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৮ জন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হন।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে আরেকটি হামলায় তিন সন্তানসহ গাড়িতে ভ্রমণরত এক নারী নিহত হন। একই সঙ্গে সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ওডেসা অঞ্চলের ইউক্রেন ও মলদোভাকে সংযুক্তকারী একমাত্র সেতু।
বিশ্লেষকদের মতে, ওডেসাকে লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করা ইউক্রেনের অর্থনীতি ও রপ্তানি ব্যবস্থার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ এই অঞ্চল দেশটির অন্যতম প্রধান সমুদ্রবন্দর কেন্দ্র।