1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন

ব্যাগে-বস্তায় সন্ধান মিলল কোটি কোটি টাকা!

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
  • ১১৯ Time View

টেনিস খেলোয়াড়দের কাঁধে এমন ব্যাগ দেখা যায়। নিউ আলিপুরের সাহাপুর কলোনির ১টি বাসাasduiasdsad থেকে ৩টি সিন্দুক ভেঙে তেমনই ১১টি টেনিস ব্যাগ পেয়েছেন আয়কর অফিসার এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। ব্যাগ খুলতেই তারা হতবাক! প্রতিটি ব্যাগেই থরে থরে সাজানো রয়েছে ৫০০-১০০০ টাকার নোট। সব মিলিয়ে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা!
একই সময়ে আয়কর দফতর ও গোয়েন্দাদের অন্য একটি দল হানা দেয় শরৎ বসু রোডের এক ঠিকানায়। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সেখানে ব্যাগ নয়, মিলেছে ৩০ বস্তা টাকা! আছে ৪০ কোটিরও বেশি। হাতে গোনা সম্ভব হয়নি। তাই আনা হয়েছিল তিন-তিনটি টাকা গোনার মেশিন। টাকা গুনতে গুনতে একটি যন্ত্র বিকল হয়ে যায়! নিউ আলিপুরের অন্য এক বাড়িতে মিলেছে ৬ কোটি টাকা।
সম্প্রতি বালি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার প্রণব অধিকারীর ঘুসুড়ির বাড়িতে হানা দিয়ে বস্তাভর্তি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল দুর্নীতি দমন শাখা। বৃহস্পতিবারের তল্লাশিতে বাজেয়াপ্ত টাকার পরিমাণ অনেক বেশি। রাত পর্যন্ত সব টাকা গুনে ওঠা যায়নি।
আয়কর দফতর সূত্র বলছে, এই টাকার সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের অনলাইন লটারি দুর্নীতির যোগ রয়েছে। যার সঙ্গে উঠে এসেছে চেন্নাইয়ের লটারি-মাফিয়া সান্তিয়াগো মার্টিনের নাম। তবে এই ঘটনায় সরাসরি ভাবে এখনও মার্টিনের নাম ঘোষণা করা হয়নি। গোয়েন্দারা বলছেন, ২০১২ সালে চেন্নাইয়ে ‘নাগরাজন’ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে ছিল মার্টিনের ডানহাত। কলকাতায় এই সম্পদের সঙ্গে নাগরাজনের ওতপ্রোত যোগ রয়েছে। সেই সূত্রে এসেছে তার ‘গডফাদার’-এর নামও। কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দাকর্তা বলেন, ‘মার্টিনের যোগসূত্র তো রয়েছেই। কিন্তু তার নাম এই মামলায় জড়াবে কি না, সেটা অন্য প্রশ্ন।’
নিউ আলিপুরের তিনটি বাড়ি, যশোর রোড, পর্ণশ্রী, বেহালাতেও এ দিন তল্লাশি চালানো হয়। আয়কর তল্লাশি চলে শিলিগুড়িতেও। সব মিলিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৮টি কম্পিউটার এবং ২টি ল্যাপটপ-সহ কম্পিউটারের প্রচুর এক্সটার্নাল হার্ড ডিস্ক আর ৪টি ডায়েরি। আয়কর দফতর সূত্রের খবর, রাত পর্যন্ত মালয়ালি ভাষায় লেখা ডায়েরি পড়ার ব্যবস্থা করা যায়নি। তবে তাতে ইংরেজিতে লেখা বেশ কিছু নম্বর মিলেছে। হার্ড ডিস্কগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে। নাগার্জুন, আলেকজান্ডার ওরফে অ্যালেক্স ও ডেভিড নামে তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কার্তিক নামে অন্য এক জনকে খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে অনলাইন লটারি কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু হয়েছে। সেই সূত্রেই এই আয়কর হানা। সম্প্রতি দিল্লি থেকে কলকাতার আয়কর দফতরে খবর আসে, নাগার্জুন, অ্যালেক্স, ডেভিড ও কার্তিকের কাছে লুকোনো রয়েছে কোটি কোটি টাকা। ওই চার যুবক কলকাতায় বসে কোটি কোটি টাকার বেআইনি ব্যবসা চালাচ্ছেন। বেআইনি লটারির পাশাপাশি দেশ-বিদেশের ক্রিকেট ম্যাচ ফিক্সিং অর্থাৎ ক্রিকেট-জুয়ার সঙ্গেও ওই যুবকদের যোগাযোগ থাকতে পারে।
আয়কর অফিসারেরা এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ সাহাপুর কলোনিতে হানা দেন। সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাক্স ফোর্স ও ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার অফিসারেরা। ছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর দলও। সেখানে অ্যালেক্স, নাগার্জুন, ডেভিডকে পাওয়া যায়নি। পরে শরৎ বসু রোডে হানা দিয়ে অ্যালেক্সকে এবং বেহালায় ডেভিডকে আটক করা হয়। দুপুরে আয়কর অফিসার ও গোয়েন্দারা হানা দেন শিলিগুড়ির একটি ঠিকানায়। সেখানে পাওয়া যায় নাগার্জুনকে।
শরৎ বসু রোডে যে-বাড়িতে হানা দেওয়া হয়েছিল, তার একতলায় অনলাইন লটারির প্রধান সার্ভারটি রাখা ছিল বলে গোয়েন্দারা জানান। ৩ বছর আগে ওই বাড়িটি ভাড়া নেন নাগার্জুন-অ্যালেক্সরা। হাজরায় তাদের অফিসের খোঁজ মিলেছে। সেখানে রাতে তল্লাশি চালানো হয়। শরৎ বসু রোডে আটক অর্থের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ১০ ও ৫০ টাকার নোট। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বস্তায় রাখায় সেগুলোয় ছাতা পড়ে গিয়েছে।
টাকা বাজেয়াপ্ত করায় মুষড়ে পড়েছেন নিউ আলিপুর সাহাপুর কলোনির অনেকে। তাদের এক জন বলেন, ‘স্থানীয় পুজায় ওই বাড়ির লোকেরা মোটা টাকা চাঁদা দিতেন। এ বার সেই চাঁদা আর মিলবে না।’
সূত্র: আনন্দবাজার

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ