1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন

নামমাত্র বোনাসে বাড়ির পথে অনেক শ্রমিক

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
  • ২১১ Time View

বকেয়া বেতনের জন্য অপেক্ষার পর বোনাস মিললেও তার পরিমান ছিল আংশিক। আর নগণ্যasoudjasdas সংখ্যক কারখানার অগ্রিম বেতন পরিশোধ। বরাবরের মতো এই ঈদেও একই দৃশ্য। আংশিক বোনাস বা বোনাস ছাড়াই এবারো বাড়ি ফিরতে হচ্ছে অনেক শ্রমিকদের।
৭০০ শ্রমিকের কর্মস্থল মিরপুরের সাকিব গার্মেন্টস। গতকাল বিকাল পর্যন্ত চলে আগস্টের বেতন পরিশোধ। তবে বোনাসের বিষয়ে কোনো আশ্বাস পাননি শ্রমিকরা। গতকাল শেষ কর্মদিবসেও আগস্টের বেতন পাননি গাজীপুরের কেবি সোয়েটারের শ্রমিকরা। আর আশুলিয়ার জিরানীতে টেন স্টারের শ্রমিকরা অপেক্ষায় ছিলেন জুলাই-আগস্ট দুই মাসের বকেয়া একসঙ্গে পাওয়ার। শেষ পর্যন্ত তা মেলেনি।
শিল্প পুলিশ ও শ্রম মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিরা বলছেন, শ্রমিক-মালিক সমঝোতার ভিত্তিতেই বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তি না হলেও এ নিয়ে বিরূপ কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
শ্রমিক প্রতিনিধিদের অভিযোগ, বরাবরের মতো এবারো মালিকরা আইন লঙ্ঘন করেই বেতন-বোনাস পরিশোধে বিলম্ব করেছেন। বিলম্বের কারণ ছিল মূলত শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শ্রমিকদের কাজে ধরে রাখা। মালিক-শ্রমিক সমঝোতার নামে শেষ মুহূর্তের তড়িঘড়িতে বেতন-বোনাস আংশিক বা কমও দেয়া হয়েছে।
শিল্প পুলিশের গতকাল বিকাল পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে পোশাক কারখানাগুলোর ৬৫ শতাংশ বোনাস পরিশোধ করেছে। আর অন্যান্য খাতের কারখানাগুলো বোনাস পরিশোধ করেছে ৭৫ শতাংশ। এ হিসাবে পোশাক খাতে বোনাস পরিশোধ করেনি ৩৫ শতাংশ কারখানা। বোনাস পরিশোধে ব্যর্থ অন্যান্য খাতের কারখানা ২৫ শতাংশ।
শিল্প পুলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, বেতন-বোনাস নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি ঘটনা ঘটলেও তাতে বড় ধরনের কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি। কারণ এসব কারখানার শ্রমিক সংখ্যা ৫০ থেকে ২০০। শিল্প পুলিশের আওতাভুক্ত সব কারখানা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা হবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস।
শিল্প পুলিশের অঞ্চলভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, আশুলিয়া এলাকায় আগস্টের বেতন পরিশোধ করেছে, এমন কারখানা ৯৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আর বোনাস পরিশোধ করেছে ৮৪ শতাংশ কারখানা। অন্যান্য খাতের ৯৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ কারখানা আগস্টের বেতন পরিশোধ করলেও বোনাস পরিশোধ করেছে ৫৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ। অর্থাৎ ৪০ শতাংশের বেশি কারখানায় বোনাস পরিশোধ হয়নি।
গাজীপুর অঞ্চলে আগস্টের বেতন পরিশোধ করেছে পোশাক খাতের ৯৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর বোনাস পরিশোধ হয়েছে ৫৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কারখানায়। এ অঞ্চলে অন্যান্য খাতের ৭২ দশমিক ৭৩ শতাংশ কারখানা বোনাস পরিশোধ করেছে। ছুটির আগে বোনাস পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে ২৭ শতাংশের বেশি কারখানা।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে আগস্টের বেতন পরিশোধ করেছে ৯৬ দশমিক ৫১ শতাংশ কারখানা। তবে বোনাস পরিশোধ হয়েছে মাত্র ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ কারখানায়। এ অঞ্চলে অন্যান্য খাতের ৯৮ শতাংশ কারখানা আগস্টের বেতন পরিশোধ করলেও বোনাস দিয়েছে ৬৮ শতাংশ কারখানা।
নারায়ণগঞ্জে ৯৭ দশমিক ২৭ শতাংশ পোশাক কারখানায় আগস্টের বেতন দিলেও বোনাস পরিশোধ হয়েছে ৭৮ শতাংশ কারাখানায়। এ শিল্পাঞ্চলে অন্যান্য খাতের প্রায় ৭৮ শতাংশ কারখানা বোনাস পরিশোধ করতে পেরেছে।
শ্রমিক প্রতিনিধিরা বলছেন, শিল্প পুলিশের পরিসংখ্যান থেকেই শ্রমিক বঞ্চিত হওয়ার চিত্রটি স্পষ্ট। মাসের ১০ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও শেষ দিন পর্যন্ত তা টেনে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যই হলো শ্রমিককে বঞ্চিত রাখা।
বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের পর্যবেক্ষণ বলছে, পোশাক খাতের কারখানাগুলো ৯৯ শতাংশই আগস্টের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছে একেবারে শেষ মুহূর্তে। বোনাস পরিশোধ হয়েছে ৮৫ শতাংশ কারখানায়। আর সেপ্টেম্বরের অগ্রিম বেতন পরিশোধ করেছে ৬০ শতাংশ কারখানা। অর্থাৎ সরকারের সঙ্গে বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অগ্রিম ১৫ দিনের বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও ৪০ শতাংশ পোশাক কারখানাই তাতে কর্ণপাত করেনি। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কারখানার মধ্যে অগ্রিম বেতন পরিশোধ করেছে মাত্র এক হাজারটি।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, ১ হাজার ২২৭টি কারখানার সবাই বোনাস পরিশোধ করেছে। সেপ্টেম্বরের বোনাস পরিশোধ করেছে ৯৫৮টি বা ৭৮ শতাংশ কারখানা। আগস্টের বেতন পরিশোধ করেছে ৯৯ শতাংশ কারখানা।
বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া সার্বিক বেতন-বোনাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো যেখানে ঘটেছে, সেখানকার শ্রমিকদের দাবি ছিল অযৌক্তিক। কারণ সেপ্টেম্বরের পুরো মাসের বেতন দাবি করেছেন তারা।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক সৈয়দ আহমেদ বলেন, দুটি কারখানার জটিলতা বিষয়ে জানতে পেরেছি। এর মধ্যে একটি বাড্ডার, অন্যটি বিকেএমইএর সদস্য কারখানা। এ দুটি ছাড়া বেতন-বোনাস নিয়ে আর কোনো অসন্তোষ নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ