সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরের হারাম শরিফে ক্রেন ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা
বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৭ জনে। আহত হয়েছেন ২৩৮ জন। আহতদের মধ্যে ৪০ বাংলাদেশী রয়েছেন।
আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মক্কার স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিশালাকারের ক্রেনটি নির্মাণকাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
সৌদি আরবের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রচণ্ড ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মাগরিবের নামাজের আগে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষের প্রধান জেনারেল সুলেইমান আল-আমর বলেন, হতাহত সবাইকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে আর কোনো হতাহত ব্যক্তি নেই। শক্তিশালী ঝড় ও ভারী বৃষ্টিতে গাছ উপড়ে পড়ায় ক্রেনটি আছড়ে পড়েছে।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ্ বলেন, দুর্ঘটনায় ৪০ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে পাঠানোর পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কেউ গুরুতর আহত হননি।
গতকাল জুমার দিন হওয়ায় হারাম শরিফে মুসল্লিদের ভিড় স্বাভাবিকভাবেই অন্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল। হজের উদ্দেশে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখো হাজিও এরই মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন সেখানে।
আল আরাবিয়া টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবল ঝড়ের কারণে ক্রেইন উল্টে পড়লে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। গত কয়েক দিন ধরে সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী বালু ঝড় বইছে।
টুইটারে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, হজের ইহরাম পরিহিত রক্তাক্ত বহু মানুষের দেহ কংক্রিটের স্তূপের মধ্যে পড়ে আছ। ছাদ ভেঙে নেমে আসা লাল রঙের একটি বিশাল ক্রেইনের অংশবিশেষও এসব ছবিতে দেখা যাচ্ছে।
একসঙ্গে ২২ লাখ হাজির স্থান সঙ্কলানের জন্য গতবছর মসজিদের এলাকা ৪ লাখ বর্গমিটার সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে সৌদি সরকার। এই নির্মাণ কাজের জন্য ভারী কয়েকটি ক্রেনও সেখানে রাখা ছিল বলে রয়টার্সের এক ছবিতে দেখা যায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, পৌনে ৬টার দিকে একটি ক্রেইন মসজিদের পূর্ব অংশের চতুর্থ তলার ওপর আছড়ে পড়ে। হজে আসা মুসল্লিরা মাগরিবের নামাজের আগে জড়ো হওয়ায় সে সময় ওই অংশটি ছিল বহু মানুষে পূর্ণ।
সৌদি আরবের সিভিল ডিফেন্সের প্রধান এক বিবৃতিতে জানান, হতাহত সবাইকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
২০০৬ সালে কাবা শরিফের কাছে একটি বহুতল হোটেল ভবন ধসে ৭৬ জন নিহত হন। ১৯৯০ সালের ২ জুলাই একটি সুড়ঙ্গে পদদলিত হয়ে ১ হাজার ৪২৬ জনের মৃত্যু হয়।
প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ লাখ মুসলমান হজ পালন করতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই মসজিদে সমবেত হন। এবার প্রায় এক লাখ বাংলাদেশির হজে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।