1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৬ অপরাহ্ন

ভূতের ভয়ে জনশূন্য পশ্চিমবঙ্গের পুরো একটি গ্রাম

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
  • ১০২ Time View

vootস্রেফ ভূতের ভয়ে জনশূন্য আস্ত একটি গ্রাম। রাত-বিরেত তো পড়ে মরুক, দিনের বেলাতেও আজ আর ওই গ্রামমুখো হন না কেউই।

বছরের পর বছর ধরে ভূতের ভয়ে জনশূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল শহর থেকে মাত্র বারো কিলোমিটার দূরে নিয়ামতপুরের বেলাগ্রাম। আজ শুনশান এই বর্ধিত বেলাগ্রাম। বেশ কয়েকবছর আগেই ভূতের ভয়ে মানুষজন বাড়ি-ঘর ছেড়ে গ্রামটিকে পরিত্যক্ত করে চলে গিয়েছেন আশপাশের গ্রামে কিংবা অন্য কোথাও। গ্রামে ঢুঁ মারলে আজও দেখা যায়, বড় বড় পাকা দোতলা বাড়ি, পুকুর ঘাট, কালী মন্দির, কুয়োতলা, রাস্তাঘাট সবই জনশূন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। একটি লোকেরও গতাগম্য নেই বেলাগ্রামে। শুধু একদা জনপদের সাক্ষী হয়ে রয়েছে পাকা দোতলা বাড়িগুলি। দীর্ঘদিনের অব্যবহারে সেগুলিরও আজ জরাজীর্ণ দশা। ঠিক কী হয়েছিল বেলাগ্রামে?

আশপাশের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, হঠাৎই ভূতের উপদ্রব শুরু হয় বেলাগ্রামে। দিনে দুপুরে লোকের বাড়িতে ঢিল পড়তে শুরু করে। রাতে শোনা যেতে থাকে প্রেতনীর কান্না। গভীর রাতে কারা যেন এসে এই গ্রামের বাসিন্দাদের দরজায় কড়া নেড়ে যেতে থাকে। অথচ দরজা খুললে দেখা যেত না কাউকেই। এরইমধ্যে হঠাৎ করে একদিন এক অজানা অচেনা তরুণীর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা। তারপরেই গ্রামের বিভিন্ন গাছতলায় পর পর দেখা মিলতে থাকে অচেনা বেশ কয়েকটি ঝুলন্ত তরুণীদের মৃতদেহ। পুলিশ পর্যন্ত সেই সমস্ত তরুণীদের শনাক্ত করতে পারে না। ভয়ঙ্কর ভেবে গলার নলি কেটে যেন রক্ত চুষে খাওয়া হয়েছে সেই সমস্ত তরুণীর মৃতদেহ থেকে। যে দৃশ্য দেশে কার্যত রাতারাতি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বেলাগ্রামের মানুষের মধ্যে।

বিদ্যুৎবিহীন বেলাগ্রামে এরপর থেকেই শুরু হয় তীব্র আতঙ্কের পরিবেশ। গভীর রাতে শোনা যেতে থাকে পায়ের শব্দ। শোনা যায় চুরির ঠূং ঠাং আওয়াজ। সব মিলিয়ে প্রতিরাতেই অশরীরী আত্মার আনাগোনা শুরু হয়ে যায় বেলাগ্রামে। মানুষের মুখে মুখে ভূতের গ্রাম হিসাবে পরিচিতি পেয়ে যায় বেলাগ্রাম। আস্তে আস্তে লোকজন বেলাগ্রাম ছাড়তে আরম্ভ করে। পাকাবাড়ি, জমি-জায়গা ফেলে বেলাগ্রাম ছেড়ে পালাতে থাকে স্থানীয় বাসিন্দারা। এইভাবেই একদিন পরিত্যক্ত জনশূন্য হয়ে গেলো বেলাগ্রাম।

আজ দিনের আলোতেও বেলাগ্রামে ঢূকলে সারি সারি নিঝুম বাড়িগুলি থেকে শুধু শোনা যাবে ঘুঘুর ডাক। শোনা যাবে পাখ-পাখালির ডানার ঝাপটা। আর সন্ধ্যা নামলেই চামচিকে আর বাদুরের কিচির মিচির আওয়াজে ভয়াল হয়ে উঠতে থাকে বেলাগ্রামের আবহ।

তবে ভূতের ভয়ে জনশূন্য হয়ে যাওয়া বেলাগ্রাম নিয়ে বলতে গিয়ে আশপাশের গ্রামের অনেকেই আজ মনে করেন, ভূত নয়, দুর্জন মানুষই নাকি এই ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়েছে বেলাগ্রামে। কিছু সমাজবিরোধীরাই নাকি তাদের কাজের সুবিধার জন্য বেলাগ্রামকে ভূতের ভয় দেখিয়ে জনশূন্য করে দিয়েছে। এই বেলাগ্রামের পাশ দিয়েই গিয়েছে ট্রেনের হাওড়া-দিল্লি মেন লাইন। এই লাইন দিয়ে শুধু যাত্রীবাহি ট্রেনই নয়, চলে মালবাহী ট্রেনও। ওয়াগান ব্রেকাররা নাকি ওয়াগান থেকে কয়লা সরানোর জন্যই এই গ্রামটিকে ভূতের আখ্যা দিয়ে পরিত্যাক্ত করে দিয়েছে। রাতে এখানে ট্রেন দাঁড়ালে নাকি বেলাগ্রামের ভিতর দিয়ে কয়লা সরানো হয়, হয় নানা ধরনের অসামাজিক কাজও। আর তার জন্যই কি বেলাগ্রামকে ভূতের ভয় দেখিয়ে আজ পরিত্যক্ত করে দেওয়া হয়েছে? তবে ভূতের ভয়ে পরিত্যক্ত বেলাগ্রামের নেপথ্য কারণ যাই হোক না কেন, আজও কিন্ত বেলাগ্রামে ঢূকলে আধিভৌতিক গা ছমছমে পরিবেশে আপনি শিউরে উঠবেন। হ্যাঁ, উঠবেনই। একথা আজ  হলফ করেই বলা যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ