সকালের ভিড়ে ঠাসা মাদ্রিদের ব্যস্ততম রাস্তা প্লাজা দে কালাওয়ে। ধূসর রংয়ের জ্যাকেট, ট্রাউজার্স, পায়ে স্নিকার্স। অবিন্যস্ত, ভবঘুরে লোকটার মুখে এক গাল দাড়ি। কেউ সে রকম পাত্তাও দিচ্ছিল না। মোটা লোকটার দাড়ি ও নোংরা জামাকাপড় দেখে অনেকে তো রীতিমতো এড়িয়েই চলছিল তাকে। হঠাৎ কোথা থেকে একটা বল চলে এলো লোকটার পায়ে। কয়েক বার জাগলিং করতে দেখা গেল তাকে। এ বার দু’এক জন ঘুরে ঘুরে তাকাতে শুরু করলেন। হঠাৎই দাড়ি আর পরচুলাটা সরে গেল। রাস্তার প্রতিটা মানুষ তখন স্তম্ভিত। ভবঘুরে লোকটা তো তাদের দারুণ চেনা!
এ তো আর কেউ নন, স্বয়ং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো!
বিখ্যাত স্প্যানিশ গায়ক হুয়ান পেনার মোবাইল ফোনে তোলা পুরো ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ঝড় বয়ে যায়। টুইটার থেকে ফেসবুক- সমর্থকদের অবিশ্বাস্য প্রতিক্রিয়ায় ভরে যায়। বলা হতে থাকে, ভক্তদের জন্য মেসি যা কোনও দিন করার কথা ভাবতেও পারেন না, সেটাই করে দেখালেন রোনাল্ডো।
খুদে এক সমর্থক যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না নিজের চোখকে। রোনাল্ডো যখন জড়িয়ে ধরেন তার খুদে ভক্তকে, বিস্ময় মাখানো উচ্ছ্বাসে তার মুখে শুধু ছিল হাসি। সিআর সেভেনও প্রমাণ করলেন, ব্যালন ডি’অরের সোনার বলটার মতোই তার হৃদয়টাও সোনার। সাধারণ মানুষ তখনও ভাবতে পারছেন না, যাকে তারা ভবঘুরে ভেবে এতক্ষণ পাশ কাটিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন, তিনিই বিশ্বের সেরা ফুটবলার! তবে বুঝতে পারার জন্য যতটুকু সময় লাগল। তার পরেই শুরু হয়ে যায় সেল্ফি তোলার আব্দার। কেউ রোনাল্ডোর সই নিতে হুড়োহুড়ি ফেলে দেন, তো কেউ আবার মোবাইলে ক্যামেরা-বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন আম জনতার সঙ্গে মহাতারকার এমন চমকপ্রদ আদান-প্রদানটা।
সাম্প্রতিক কালে রোনাল্ডো শুধুই বিতর্কিত কারণে শিরোনামে উঠে এসেছেন। ইরিনা শায়েকের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার জন্যই হোক কিংবা ব্যালন ডি’অরে ভোট রিগিংয়ের জন্য, সিআর সেভেন নিয়ে শুধুই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তবে অভিনব এই ঘটনার পরে রোনাল্ডো প্রমাণ করলেন ইরিনাকে হারালেও, সমর্থকদের ভালোবাসা এখনও হারাননি তিনি।
পাশাপাশি আবার শনিবার রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে খেলতে চলেছে কর্দোবা। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর টি-শার্ট কে নেবে, তার জন্য এখন থেকেই লেগে গিয়েছে লম্বা লাইন।
কর্দোবার এক ফুটবলার অবশ্য ফাঁস করলেন, নিজের জার্সি বিপক্ষ ফুটবলারের সঙ্গে বদলাতে গেলে কী ঝামেলায় পড়তে হবে তাদের। নিয়ম হচ্ছে বিপক্ষের কোনো ফুটবলারের শার্ট নিলে নিজের শার্টও তাকে দিতে হয়। কিন্তু কর্দোবার কোনো ফুটবলার জার্সি বদল করতে গেলে তাকে গচ্চা দিতে হবে ৫০ ইউরো!
কেন? কারণ মাঠে জার্সি বদলানোর পর ৫০ ইউরো দিয়ে নতুন জার্সি ক্লাবের কাছ থেকে কিনতে হবে যে কর্দোবার ফুটবলারদের!