একবিংশ শতাব্দীতে পৌঁছে আজও ভারতের অনেক বাড়িতে শৌচাগার নেই। গ্রাম থেকে শহর প্রায় সকলের হাতে হাতে মোবাইল ফোন ঘুরলেও বাড়িতে আজও তৈরি হয়নি অতি প্রয়োজনীয় এই শৌচাগার।
তাই লজ্জা নিবারণ করতে বাড়ির মহিলারা রাত থাকতেই মাঠে-ঘাটে বেরিয়ে পড়েন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে। অথবা অপেক্ষা করেন কখন আঁধার ঘনাবে তার জন্য।
এতে হয়তো তাদের লজ্জা নিবারণ হয়, কিন্তু খোলা মাঠে যত্রতত্র মল, মূত্র পরিত্যাগের ফলে ছড়ায় নানা অসুখ, ছোঁয়াচে জীবাণু। যার ফলে গোটা সমাজ তথা দেশ।
সবার আগে মহিলাদেরই উচিত এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো। কিন্তু সামাজিক কারণে মহিলারা সেভাবে সরব হতে পারেন না। তবে ব্যতিক্রমও আছে।
সম্প্রতি ভারতের উত্তরপ্রদেশের খুশিনগর জেলার সদ্য বিবাহিত ছয় মহিলা স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে এসেছেন। কারণ শ্বশুর বাড়িতে শৌচাগার নেই।
আশা পরভীন নামে এক স্থানীয় সমাজকর্মী জানিয়েছেন, গত দু’মাসে খুশিনগর জেলার খেসিয়া গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে শৌচাগার না থাকায় ছয় সদ্য বিবাহিত মহিলা বাপের বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
এসব সাহসী মহিলাদের নাম নিলম, কলাবতী, শাকিনা, নিরঞ্জন, গুড়িয়া ও সীতা। এদের সকলেরই বক্তব্য এক। শৌচাগার তৈরি না হওয়া পর্যন্ত কিছুতেই স্বামীর ঘরে ফিরবেন না। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
‘সুলভ ইণ্টারন্যাশনাল’ নামে একটি স্বেচছাসেবী সংস্থার প্রধান বিন্ধেশ্বর পাঠক ঘটনার খবর পেয়ে ওই ছয় মহিলার শ্বশুর বাড়িতে বিনামূল্যে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
একই সঙ্গে ওই ছয় মহিলার সিান্তকে সাহসী ও ব্যতিক্রমী বলে উল্লেখ করেছেন৷ তার মতে, এ ঘটনা থেকে বোঝা যাচেছ যে, শৌচাগারের বিষয়ে গ্রামের মহিলাদের মধ্যেও একটা সচেতনতা গড়ে উঠেছে।
প্রত্যেকেই শৌচাগার নির্মাণের গুরুত্বটি বুঝতে পেরেছেন৷ সাহসী ওই ছয় মহিলাকে পুরস্কৃত করার কথাও বলেছেন পাঠক। স্কুলে মেয়েদের জন্য পৃথক শৌচাগার তৈরিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্যোগী হবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।–ওয়েবসাইট।