1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন

পুঁজিবাজার থেকে এক মাসে উধাও তিন হাজার কোটি টাকা!

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৩১ মে, ২০১৪
  • ৯৪ Time View

Stock exগত এক মাসে দেশের পুঁজিবাজার থেকে উধাও হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি। এ সময়ে অনেক বিনিয়োগকারী ফের হতাশায় বাজার থেকে বেরিয়ে গেছেন। তবে বাজারের এমন করুণ অবস্থায়ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনো বিকার নেই। আর এ অবস্থার জন্য বিনিয়োগকারীদের অভিযোগের তীর সেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার দিকে।

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তা, বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, আইসিবি, মার্চেন্ট ব্যাংক, উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নীরব ভূমিকায় আবারও ভয়াবহ সঙ্কটে পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এর ফলে পুঁজিবাজার থেকে গত এক মাসে উধাও হয়েছে তিন হাজার ৩১২ কোটি টাকা। সূচক কমেছে সাড়ে ৭৪ পয়েন্ট। যদিও মাসের প্রথম বিশ দিনে সূচক কমেছিল ১৪১ পয়েন্ট।
 
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশ কিছু কারণে বাজারের এমন অবস্থা। বাজার মনিটরিং সার্ভিলেন্স সফটওয়্যার থেকে ডাটা পাচারের মতো ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠেছে। কারসাজিকারীদের হাত নিয়ন্ত্রক সংস্থার সার্ভিল্যান্স বিভাগ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। যেখানে কমিশনের সদস্যদেরও প্রবেশের অনুমতি নেই। এছাড়া নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অহরহ মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুঁজিবাজারে কারসাজি করছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহ কমছে। পুঁজিবাজারে নগদ টাকার সঙ্কট বেড়েছে। সামনে বাজেট নিয়ে এক শ্রেণীর কারসাজিকারকরা বাজারা নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। যদিও বাজারে সরাসরি বাজেটের তেমন কোনো প্রভাব পড়ার কথা নয়।
 
গত এক মাসের (০৪ মে ২৯ মে পর্যন্ত) বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পুঁজিবাজারে মোট ১৯ দিন লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ছয়দিন উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে আর ১৩ দিন দরপতন হয়েছে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত ০৪ মে লেনদেন হয়েছিল ৩২৯ কোটি টাকা। আর সর্বশেষ ২৯ মে বৃহম্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৩২৩ কোটি টাকা। লেনদেনের রেশিও অনুযায়ী টাকার অংক খুব বেশি কম না হলেও কমেছে বাজার মূলধন। লেনদেনের পাশাপাশি ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই ব্রড ইনডেক্স চার হাজার ৫০৪ পয়েন্টে থেকে ৭৪ পয়েন্ট কমে চার হাজার ৪৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন ও সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর বাজার মূলধন তিন হাজার ৩১২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা কমে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকায় চলে এসেছে। যা গত ০৪ মে ছিল ২ লাখ ৯১ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বিএসইসির সার্ভিলেন্স সফটওয়্যার থেকে ডাটা পাচার পুঁজিবাজারে একটি ভয়ানক কাণ্ড। এটি বাজারের জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয়। বিএসইসির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত ছিল। কিন্তু আজ পযর্ন্ত তার কোনো বিচার হয়নি। ফলে বাজারে দিনদিন কারসাজি বাড়ছে আর বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস ভঙ্গ হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি।
 
এ ব্যাপারে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজিব উদ্দিন বলেন, গত দুই বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশে বিনিয়োগ অনেক কমে গেছে। এতে তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয়ও আগের চেয়ে কমেছে। ফলে কোম্পানিগুলো ভালো লভ্যাংশ দিতে পারছে না।
 
আয় কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশীয় বিনিয়োগকারীরাও অনেক ক্ষেত্রে তাদের নিজ কোম্পানিতেও নতুন করে বিনিয়োগ করেননি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। তিনি আরও বলেন, টানা দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে।
 
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হওয়া ভয়াবহ দরপতনের বৃত্ত থেকে এখনও বের হতে পারেনি পুঁজিবাজার। ভয়াবহ দরপতনের পর বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের খবরে গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার দিকে ধাবিত হলেও তা স্থায়ী হয়নি। ফলে লোকসানের কবল থেকে বের হতে পারেননি বিনিয়োগকারীরা। বরং প্রতিশ্রুতির কারণে বাজার স্থিতিশীল হবে-এ আশায় অপেক্ষায় থাকা বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ