তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। তবে এ মামলার অন্যতম আসামি তারেক রহমানকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রোববার সোয়া ১২টার দিকে এ রায় দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেনের আদালত।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মামুনকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাকে বিচারকক্ষে আইনজীবীদর আসনে বসানো হয়। অফ হোয়াইট সুতির শার্ট পরা মামুনকে এসময় চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে দেখা যায়। এসময় মামুনের আইনজীবী মো. জাহেদুল ইসলাম ও খায়রুল ইসলাম লিটনও আদালতে উপস্থিত থাকেন।
২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলা দায়ের করে।
এদিকে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে পুরো বিচার প্রক্রিয়াতেই অনুপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।
২০১১ সালের ৬ জুলাই তারেক ও তার বন্ধু মামুনের বিরুদ্ধে এই মামলার বিচার শুরু হয়। ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলাটি করা হয়েছিল। গত বছরের জুলাই মাসে অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর বাদী ও আসামি পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষের পর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়, যা শেষ হয় বৃহস্পতিবার।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ নির্মাণ কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন মামুন।
সিঙ্গাপুরে লেনদেনের পর সেখানকার সিটি ব্যাংকে মামুনের হিসাবে জমা রাখা এই অর্থের মধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা তারেক খরচ করেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল মামলার শুনানিতে বলেন, “তারেকের সঙ্গে বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে মামুন অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে দেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করে বাংলাদেশের ব্যাংককে ফাঁকি দিয়ে অর্থ পাচার করে দেন।”
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পন্থায় ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার করা হয়।
মামলায় আরো অভিযোগ করা হয়, বনানীর নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কোম্পানির মালিক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে মামুন ওই অর্থ নিয়েছিলেন।
এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারেকের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা হলেও এই প্রথম কোনো মামলার নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছে।
জরুরি অবস্থা জারির পর ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেককে গ্রেপ্তার করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পরের বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তখন থেকে সেখানেই রয়েছেন তারেক। সম্প্রতি সেখানে দলীয় কয়েকটি অনুষ্ঠানেও তাকে অংশ নিতে দেখা গেছে।