1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:২৪ অপরাহ্ন

ভারতকে দুশ্চিন্তায় রেখে ট্রাম্প ক্রমশ পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছেন কেন

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৮ Time View

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ভারতকে ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের হুমকি দিয়ে ঠিক কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের সঙ্গে এক বড় জ্বালানি চুক্তির ঘোষণা দেন। ভারতকে ‘শুল্ক বসানোর রাজা’ বলে কটাক্ষ করার পর ট্রাম্প জানান, পাকিস্তানের বিপুল খনিজ সম্পদকে কাজে লাগাতে যুক্তরাষ্ট্র সাহায্য করতে চায় এবং এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।

ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “কে জানে, একদিন হয়তো পাকিস্তান ভারতেও তেল বিক্রি করবে!”—যা ভারতের প্রতি তার বিদ্রুপাত্মক মনোভাব স্পষ্ট করে দেয়।

এই মন্তব্য এবং পদক্ষেপ ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি তার নতুন কূটনৈতিক অবস্থানকে চিহ্নিত করছে। প্রথম মেয়াদে পাকিস্তানকে ‘মিথ্যা ও প্রতারণার প্রতীক’ বললেও এবার তার প্রশাসন ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে।

কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে

ট্রাম্প জানান, পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে খনিজ তেল খাতে বিনিয়োগে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র, এবং কোন মার্কিন কোম্পানি নেতৃত্ব দেবে, তা নির্ধারণের কাজ চলছে। যদিও কোথায় এই খনিজ তেলের ভাণ্ডার রয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প।

সম্প্রতি পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও আলোচনা এগিয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানিয়েছেন, তারা চুক্তির প্রায় কাছাকাছি পৌঁছেছেন।

পাকিস্তানকে সামরিক সম্মান

সাম্প্রতিক এক অন্য নজিরবিহীন ঘটনায়, মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলাকে পাকিস্তান সরকার তাদের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’ প্রদান করে। সেই অনুষ্ঠানে তাকে সম্মান জানান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি স্বয়ং।

এর আগে, হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প, যা দুই দেশের মধ্যকার উষ্ণ সম্পর্কের স্পষ্ট ইঙ্গিত। পরবর্তীতে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর প্রধানও ওয়াশিংটনে গিয়ে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন।

অর্থনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থও প্রভাবশালী?

ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে ট্রাম্পের আচমকা ঘনিষ্ঠতার পেছনে অন্তত দুটি কৌশলগত কারণ থাকতে পারে:
১. পাকিস্তান ‘ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিনান্সিয়াল’ নামে ট্রাম্প পরিবারের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ক্রিপ্টোকারেন্সি খাতে রাষ্ট্রীয় অংশীদারিত্বে আগ্রহ দেখিয়েছে।
২. পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে।

যুদ্ধের মধ্যস্থতা ও ভূ-রাজনীতির প্রভাব

সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের সীমান্ত সংঘর্ষের সময় যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব ট্রাম্প নিজেকে দেন এবং দাবি করেন, এই শান্তির নেপথ্যে রয়েছে তার মধ্যস্থতা। পাকিস্তান এই দাবি সমর্থন করলেও ভারত তা অস্বীকার করেছে।

এ পরিস্থিতিতে স্পষ্ট হয়ে উঠছে, যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক কূটনীতিতে ভারতের ভূমিকা তুলনামূলকভাবে খাটো হয়ে যাচ্ছে। ‘কোয়াড’ জোটের (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া) অন্যতম শরিক ভারত চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হলেও, ট্রাম্প প্রশাসন এখন পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে আগ্রহী।

ভারতের জন্য সতর্ক সংকেত

ভারতের সাবেক কূটনীতিক কে সি সিং মন্তব্য করেন, “চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এক সময় ভারতের ভূমিকা চেয়েছিল, কিন্তু ট্রাম্প চাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি চীনের সঙ্গে ডিল করুক, ভারতের মাধ্যমে নয়।”

এই পরিবর্তনশীল কূটনৈতিক সমীকরণ ভারতের জন্য শুধু অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত ও সামরিক দিক থেকেও উদ্বেগজনক বার্তা বহন করছে। পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠতা যত বাড়বে, ভারতের নিরাপত্তা ও ভূ-কৌশলগত ভারসাম্য ততটাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ