1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিটে আসামের রুট বাদ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১২
  • ১৬৩ Time View

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের পণ্য পরিবহনের ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্টে আসাম রাজ্যের রুটগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে ১৫টি রুটের প্রস্তাব বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে প্রতিবেশী ত্রিপুরা রাজ্যের ৬টি, পশ্চিমবঙ্গের ৪টি, মেঘালয়ের ৪টি এবং মিজোরামের ১টি রুট রয়েছে।

ভারতীয় সংসদ ‘লোকসভা’য় আসামের শিলচর থেকে নির্বাচিত এমপি কবীন্দ্র পুরকায়স্থ সোমবার বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান।

ভারতের পক্ষ থেকে ট্রানজিটে আসামকে বাদ দেওয়া হলেও বাংলাদেশের ট্রানজিট ফি নির্ধারণের কোর কমিটি অবশ্য আসাম সীমান্ত দিয়ে ৫টি রুটের প্রস্তাব করে।

সংসদ সদস্য কবীন্দ্র পুরকায়স্থ বলেন, ‘আসামের করিমগঞ্জের সুতারকান্দি স্থলবন্দর ও বাংলাদেশের সিলেটের শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ’ ট্রাক যাতায়াত করে।’

‘এছাড়া আসামের বরাক উপত্যকার সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে’, বলেন তিনি।

আসামের বিশেষত বরাক উপত্যকার রাজনীতিতে সত্তোরর্র্ধ্ব এই প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ আরও বলেন, ‘ট্রানজিটে আসামের রুট নেই এটা জানার পর গত সপ্তাহেই আমি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে চিঠি দিয়েছি।’

আসাম সরকারের বাণিজ্য, শিল্প ও বিদ্যুৎমন্ত্রী প্রদ্যুৎ বরদলৈ ট্রানজিটে আসামের রুট বাদ দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত।

প্রদ্যুৎ বরদলৈ গত সপ্তাহে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন করিমগঞ্জ জেলা সফরে এসে সুতারকান্দি স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিটে আসাম বিশেষ করে বরাক উপত্যকাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

এদিকে উত্তরপূর্ব ভারতের ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘সাউদার্ন সেভেন সিস্টার্স চেম্বার অব কমার্স’র সেক্রেটারি নীলোৎপল চৌধুরী ট্রানজিটে আসামের রুট বাদ দেওয়ার খবরে হতাশা প্রকাশ করেন।

নীলোৎপল চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘করিমগঞ্জের সঙ্গে সিলেটের ভেতর দিয়ে ভারতের অন্য অংশের যোগাযোগ সহজ হবে।’

তিনি বলেন, ‘বরাক উপত্যকার শিলচর শহর দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের ৪টি রাজ্যে যোগাযোগ করতে হয়। এক কথায় বলতে গেলে, নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরায় যেতে গেলে শিলচরের ভেতর দিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।’

নীলোৎপল চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটের শাহজীবাজার থেকে মহিশাসন সীমান্ত দিয়ে আসামে প্রবেশের পর এখনও রেলপথ রয়েছে। ব্রিটিশ আমলেই এ রেল নির্মিত হয়।’

তিনি বলেন, ‘ট্রানজিট থেকে কেন আসাম বাদ গেল তা আমরা বুঝতে পারছি না।’

আসামের সঙ্গে কয়লা, সিমেন্ট, চুনাপাথরসহ নানা ধরনের আন্তঃবাণিজ্য বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ীরা করছেন বলেও জানান তিনি।

আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রানজিট রুট বাদ যাওয়ার খবর প্রকাশের পর আসামের দক্ষিণাঞ্চল বিশেষত বরাক উপত্যকার ব্যবসায়ী ও রাজনীবিদসহ সুশীল সমাজের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে।

সংসদ সদস্য কবীন্দ্র পুরকায়স্থ জানান, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে দেওয়া চিঠিতে তিনি আসামের কয়েকটি ট্রানজিট রুটের প্রস্তাব দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে করিমগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর এবং আসামের মহিশাসন হয়ে সিলেটের শাহজীবাজার রেলপথের মাধ্যমে ঢাকার যোগাযোগের কয়েকটি রুটের প্রস্তাব দিয়েছে। এই পথ দিয়ে রুটগুলো কলকাতা বন্দর পর্যন্ত যাবে।’

বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলা বিজেপি’র যুব সংগঠন ‘ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা’র পক্ষ থেকে এ নিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রীসহ নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে বলে জানান কাছাড় যুব মোর্চা’র সভাপতি গোপাল কান্তি রায়।

ভারতের প্রস্তাবিত ১৫ ট্রানজিট রুট:

আসাম সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভারতের ট্রানজিটের ১৫টি রুটের ত্রিপুরার ৬টি, পশ্চিমবঙ্গের ৪টি, মেঘালয়ের ৪টি এবং মিজোরামের ১টি।

ত্রিপুরার ৬টি রুট হলো: আখাউড়া-আগরতলা, সাবরুম-রামগড়, বিবির বাজার-শ্রীমান্তপুর, বিলোনিয়া (দক্ষিণ ত্রিপুরা)-বিলোনিয়া (ফেনী), বেতুলি-রাঘনা বাজার।

মেঘালয়ের ৪টি রুট হলো: তামাবিল-ডাউকি, বড়ছড়া (বাংলাদেশ)-বড়ছড়া (ভারত), হালুয়াঘাট-ঘাসুয়াপাড়া, সুনামগঞ্জ-শেলবাজার।

পশ্চিমবঙ্গের ৪টি রুট হলো: দর্শনা-গেদে, রোহনপুর-সিঙ্গাবাদ, বিরল-রাধিকাপুর এবং বেনাপোল-পেট্রাপোল।

মিজোরামের সঙ্গে একমাত্র রুটটি হলো দেমাগিরি ও ঠেঙ্গামুখ (বাংলাদেশ)।

বাংলাদেশের কোর কমিটির প্রস্তাবিত রুট:

ট্রানজিটের ফি নির্ধারণে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত কোর কমিটি কয়েকটি রুটের প্রস্তাব করে। এর মধ্যে আসামের ৫টি রুট রয়েছে।

আসামের রুট পাঁচটি হলো, শিলচর-সুতারকান্দি-মাওয়া-যশোর-বেনাপোল- পেট্রাপোল-কলকাতা; শিলচর-সুতারকান্দি-চট্টগ্রাম বন্দর; শিলচর-মহিশাসন-শাহবাজপুর-ঢাকা-গেদে-কলকাতা (রেলপথ); শিলচর-মহিশাসন-শাহবাজপুর-চট্টগ্রাম বন্দর (রেলপথ) এবং কলকাতা-নামখানা-শেখবাড়িয়া-মংলা-কাউখালী-বরিশাল-চাঁদপুর-আশুগঞ্জ-জকিগঞ্জ-করিমগঞ্জ (নদীপথ)।

এছাড়া আসামের উত্তর-পূর্বের একটি নদীপথের প্রস্তাবও রয়েছে। এটি হলো কলকাতা-নামখানা-শেখবাড়িয়া-মংলা-কাউখালী-বরিশাল-চাঁদুপর-মাওয়া-পাটুরিয়া-সিরাজগঞ্জ-চিলমারী-ডাইকহাওয়া-ধুবড়ী-পাণ্ডু-শিলঘাট।

কোর কমিটি এ প্রস্তাব করলেও ভারতের পক্ষ থেকে অবশ্য এ রুটগুলো গণ্য করা হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ