1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন

ভাইয়া, সেভ মি, আমি মরতে চাই না এভাবে: পরীমণি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১
  • ১৯ Time View

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নিজেই এমন অভিযোগ করেন। রোববার (১৩ জুন) নিজ ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি প্রথম জানান। এর দুই ঘণ্টা পর বনানীর নিজ বাসায় গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে অভিযোগের বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেন পরীমণি।

তিনি বলেন, উত্তরার বোট ক্লাবে (ঢাকা বোট ক্লাব) তার সঙ্গে ঘটনাটি ঘটে। নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী) নামে একজন নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ঘটনার দিন রাত ১২টার পর পরিচিতজনদের নিয়ে ওই ক্লাবে যান নায়িকা। সেদিন চার মদ্যপ ব্যক্তি তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। চড়-থাপ্পড় মারেন। গায়ে আঘাত করেন। একপর্যায়ে একজন তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে ধর্ষণের চেষ্টাও করেন।

পরীমণি বলেন, ‘আমি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, আপনারা (সাংবাদিক) বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব। আমার সাথে অন্যায় করা হয়েছে। আমার সাথে অন্যায় হয়েছে, বিচার চাই। আমি আজকে মরে গেলে… আমি সুইসাইড করি নাই, সবাই জেনে রাখেন। আর আমাকে যদি কেউ মারে, আমি যদি মরে যাই; ভাইয়ারা আপনারা বিচার কইরেন, আল্লাহর কসম।’

সংবাদ সম্মেলনে পরীমণি যা বললেন-

‘চার দিন ধরে একদম সাধারণ মেয়ের মতো মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কিন্তু আমাকে কেউ সাহায্য করেনি। পরীমণি হিসেবে যখন স্ট্যাটাসটা দিলাম তখনই সবাই (সাংবাদিকরা) আসলেন’— এভাবেই নিজের ক্ষোভ ও আক্ষেপের কথা জানালেন সদা হাস্যোজ্জ্বল পরীমণি।

বনানীর নিজ বাসায় রোববার রাত সাড়ে ১০টায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় এ নায়িকা। তিনি বলেন, বুধবার রাতে উত্তরার বোট ক্লাবে ঘটনাটি ঘটে। নাসির উদ্দিন নামে একজন তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে এ ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন।’

পরীমণি বলেন, এমন ঘটনায় সাধারণ মেয়েরা প্রথমে কোথায় যায়? থানায় যায়। আমিও থানায় গিয়েছি। আমি বারবার বলেছি, ঘটনাটা যদি নিজের সঙ্গে না ঘটে তাহলে কেউ বুঝবে না। ওইদিন পর্যন্ত কি তবে অপেক্ষা করবেন?

কী ঘটেছিল সেটা জানতে চাই, আপনি নির্ভয়ে বলুন— উপস্থিত সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পরীমণি বলেন, ‘আমার মুখটা সাদা কাপড়ে ঢাকা পড়লেই কেবল বুঝতেন। আমি চার দিন ধরে কারও সাপোর্ট পাইনি। আপনারা সত্যিটা খোঁজেন।’

পরীমণি আরও বলেন, ‘সাধারণ কোনো মেয়ের হলে সে খবর হয়তো আপনাদের কাছে পৌঁছায় না। সাংবাদিকদের কাছে খবর পৌঁছানো হয় না। আমার মতো যখন কোনো মেয়েকে ভয় দেখানো হয় তখন সাধারণ মেয়ের খবর তো পাবেন না!’

তিনি বলেন, বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তার এক বন্ধু (অমি) বাসায় আসেন। বাসা থেকে তাকে উত্তরার বোট ক্লাবে (ঢাকা বোট ক্লাব) নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জিমি (ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী)। বোট ক্লাবে যাওয়ার পর সেখানে সাত/আটজনের একটা গ্রুপ ছিল। তাদের মুরব্বি ছিলেন নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ)। তিনি বোর্ড ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন।

‘নাসির উদ্দিনসহ (নাসির ইউ মাহমুদ, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী) উপস্থিত সাত/আটজন আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করতে থাকে। আমাকে আটকে ফেলে। জোর করে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে অজ্ঞান করার চেষ্টা করে। জিমিকে মারধর করা হয়। অশ্লীল নানা কথাবার্তা বলা হয়। মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।’

নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ) তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ করেন পরীমণি।

‘ঘটনার পরপরই বনানী থানায় অভিযোগ করতে যাই’ উল্লেখ করে পরীমনি বলেন, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা অভিযোগ রেকর্ড করেননি। বরং সকালে এসে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।’ এ সময় পুলিশের সাহায্যে হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েও আতঙ্কবশত চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন বলে উল্লেখ করেন পরীমণি।

রাতে বনানীর নিজ বাসায় ডাকা সংবাদ সম্মেলনে পরীমণি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন। তাকে হেনস্তাকারী ব্যক্তির পরিচয় এবং তিনি (পরীমণি) কী চান— ঘুরেফিরে এ প্রশ্নই সামনে চলে আসে। এ সময় সারাক্ষণ তাকে কান্না করতে দেখা যায়।

পরীমণি বলেন, আমি ভাই বলতে পারছি না। ভাই, আমার বলতে ইচ্ছা করছে না। আপনারা পাঁচটা মিনিট কান্না দেখতেছেন (সাংবাদিকদের উদ্দেশে), আমি চার দিন… আমি পাগল হয়ে গেছি ভাইয়া, আমি সুস্থ নই, আমি না ভাইয়া পাগল হয়ে গেছি… পাগল। আমার জায়গায় থাকলে আপনারা কেউ এখানে বসে কথা বলতে পারতেন না।

নাম কী, ফেসবুকে কী নাম তার… বুড়া লোকটার…

নাসির উদ্দিন আহমেদ। সে ঘুরে এসে প্রথমে আমারে দুটা থাপ্পড় মারছে। আমি তো এমনিতে কোনো কথা বলতে পারছিলাম না, জিমিকে দেখে চুপ করে আছি… ওয়েটার যারা ছিল, লাইট অফ করে দিতে বলছে, লাইট অফ করে দিছে। তারপর টিভির মনিটর ছিল…। আর একটা লোক ছিল শার্টটা এভাবে খুলে, বোতাম-টোতাম সরে গেছে… তারপর জিমির গলায় এভাবে প্যাঁচায় দিছে শার্টটা। প্যাঁচায় দিয়ে বলে কী মাধুরি দীক্ষিতের গানে এখন নাচবি তুই। আমি এই হরিবল (ভয়াবহ) দৃশ্য ভুলতে পারছি না। এরম-ওরম করতেছিল, আমার চোখের সামনে ভাসতেছে।

আমি পাগল হয়ে গেছি ভাইয়া, সেভ মি। আমি মরতে চাই না এভাবে।

ওখান থেকে আপনি বের হয়েছেন কখন…

আমি জানি না। যখন আমাকে এতগুলো… আমার গলা এখান থেকে এখান থেকে পুরো জ্বলে যাচ্ছিল… আমি তো জানি ভাইয়া আমি ওই সময় মরে যাব। আমি সত্যি জানি না, এখন আমি আপনাদের সাথে কথা বলতে পারব। আমি সত্যি জানি না। আমি জানতাম আমি মরে গেছি, একটু পর মরে যাব।

ওই লোকটার বয়স কত হতে পারে… আনুমানিক…

খুঁজে দেখেন না। আমি জানি না। আমায় যখন খাওয়ায় দিছে আমি তখন ওইখানে বমি করছি। আমি নাকি সেন্সলেস হয়ে গেছিলাম। আমার অক্সিজেনের… প্রবলেম আছে, সবাই জানে। আমার বাসায় তিনটা সিলিন্ডার থাকে অনেক আগে থেকে, সাড়ে তিন বছর চার বছর হয়ে গেছে। আমি যখন নাকি অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম ওয়েটাররা আমাকে ধরে আমাকে নামাইছে… পুরো বিষয়টা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে। আমি যাওয়ার সময় দেখেছি সেখানে ক্যামেরা আছে। সেখানে সিকিউরিটি অনেক কড়া।

নাসির উদ্দিন ওই ক্লাবের কিছু হয় কি না…

উনি বলছে, আমি এখানকার প্রেসিডেন্ট। আমি শব্দগুলো বলতে পারছি না ভাইয়া। অকথ্য ভাষায় কী জানি বলছে… তোর এখানে এই করব, সেই করব, দেখি কে তোকে…

অমির ভূমিকাটা কী ছিল…

সে প্রথমে চুপ থাকছে, নট ট্রাই। তখর আমার মনে হইছে, এটা একটা প্লানিং ছিল। আনসার্টেন প্লানিং, হঠাৎ করে প্লানিং হয়ে যায় না…

পরি তুমি কখন ওখান থেকে ফিরছ, সময়টা মনে আছে কি না…

আমি যখন ফিরছি, তখন দেখি আমার গাড়ির গ্লাস সব খোলা। উপরের হুড খোলা। আমি দেখতে ছিলাম আমার কাপড় ঠিক আছে কি না। জিমি বলছিল, মায়ের কসম আপি তুমি ঠিক আছ। আমি ৯৯৯ এ কল দিছিলাম। আমি বলেছি, উত্তর থানা নাকি দক্ষিণ থানা আমি জানি না ভাই, এটার নাম হচ্ছে বোট ক্লাব, তখন ওই লোকটার সাথে আরও দুই-তিনজন ছিল ওরা বের হয়ে যায়। এটুকু মনে আছে, পরে আর কিছু মনে নাই।

বাকি দু-তিনজনকে চেনেন আপনি, নামগুলো জানেন কি না…

আমি চিনি না, জানতামও না। এখন জানি। বের করেছি।

কোনো ছবি বা গ্রুপ ছবি আছে…

না গ্রুপ ছবি নাই। কারণ তারা আমার ফ্রেন্ড না, তাদের সাথে কীভাবে আমি ছবি তুলি, আপনি হলে তুলতেন?

আনুমানিক তখন সময়টা কত হতে পারে…

আমারে দুই ঘণ্টা-আড়াই ঘণ্টা আটকে রাখছে…

তার মানে তখন দুইটা-আড়াইটা বাজে…

আর একটু বেশি হবে…

যেহেতু আপনাকে জোরপূর্বক ড্রিংকস করানো হয়েছে। আপনি কি ব্যালান্স (ভারসাম্য) নিয়ে নামতে পারছিলেন…

আমাকে নামানো হইছে ভাই, আমি তখন সেন্সলেস ছিলাম। আমি যখন ৯৯৯ কল দিতেছিলাম তখন ওরা বলাবলি করছিল কী হয়ে গেল…দুই-একজন লোক এসে মাফও চাইতেছে… আমার এটুকু মনে আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ