1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা ‘বিদেশি’, ‘বাঙালি’, ‘অনুপ্রবেশকারী’!

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৯
  • ২৩ Time View

ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের অস্বীকার করে তাদের ‘বিদেশি’, ‘বাঙালি’ ও ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে উপস্থাপন করার ইঙ্গিত দিচ্ছে মিয়ানমার।

জেনোসাইডবিরোধী সনদ লঙ্ঘন এবং রোহিঙ্গাদের ওপর জেনোসাইড চালানোর দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার প্রথম প্রকাশ্য শুনানি আগামী ১০ থেকে ১৩ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে জাতিসংঘের আদালত আইসিজেতে হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতেও (আইসিসি) মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের গণবাস্তুচ্যুতিসংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধের আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে।

রোম সংবিধি অনুমোদন না করার অজুহাত তুলে মিয়ানমার তার ওপর আইসিসির বিচারিক এখতিয়ার প্রত্যাখ্যান করলেও আইসিজেতে মামলা মোকাবেলার ঘোষণা দিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আইসিজেতে শুনানির প্রাক্কালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এবার একাট্টা হচ্ছে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার ও সামরিক বাহিনী। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট গতকাল শনিবার নেপিডোতে শীর্ষ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আইসিজেতে মামলা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী আইসিজেতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মামলাকে ‘আশীর্বাদ’ হিসেবে দেখছে বলে দেশটির গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। মিয়ানমারের সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন বলেছেন, এই মামলা মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার আনুষ্ঠানিক অবস্থান তুলে ধরার এবং ব্যাখ্যা করার সুযোগ করে দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের বিদেশি হিসেবে ইঙ্গিত করে তিনি দাবি করেন, ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য সামরিক বাহিনী, পুলিশ বা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কেউ দায়ী নয়। মিয়ানমারের জনগণের বড় অংশই মনে করে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে গিয়েছিল। অথচ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টিই আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত হয়েছে।

মিয়ানমার থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, মিয়ানমারের গণমাধ্যমগুলোতে রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।

মিয়ানমার আগে বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে অভিহিত করে এর পক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচারণা চালিয়েছে। এমনকি অং সান সু চিও রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। তবে বাংলাদেশ বরাবরই মিয়ানমারের এসব অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে তথ্য-উপাত্তসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গাদের ইতিহাস তুলে ধরেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, রোহিঙ্গারা যে মিয়ানমারের বাসিন্দা সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক জনমত রয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায় এখন রোহিঙ্গাদের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত। শত শত বছর ধরে মিয়ানমারে নাগরিক হিসেবে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রহীন করার উদ্যোগ জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অনেক দলিলে আছে। বরং তাদের রাষ্ট্রহীন করে দেশছাড়া করার উদ্যোগও জেনোসাইডের আলামত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

এদিকে আইসিসির কৌঁসুলি ফাতু বেনসুদা গত বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আইসিসির বিচারকরা তাঁকে তদন্ত শুরু করার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় বিশ্বাসযোগ্য বলে স্বীকার করেছেন। প্রথমত, বিচারকরা মনে করেন যে অন্তত ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক মাত্রায় বা ধারাবাহিক সহিংসতা, হত্যা, কারাদণ্ড, নির্যাতন, ধর্ষণ, যৌন সহিংসতাসহ অন্যান্য বলপূর্বক কাজের ফলে বড় পরিসরে ‘ডিপোর্টেশন’ (নির্বাসন) হয়ে থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, নৃতাত্ত্বিক বা ধর্মীয় বা উভয় কারণেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর বলপূর্বক নিপীড়ন মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। তৃতীয়ত, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা চালাতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় নীতি থাকতে পারে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য থেকে ইঙ্গিত মেলে যে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলায় মিয়ানমারের কয়েকটি সরকারি বাহিনী ও অন্যান্য সরকারি সংস্থা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জোরালো সম্পৃক্ততায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে।

আইসিসির কৌঁসুলি বলেছেন, তিনি তদন্তকাজে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলাসহ সব নিপীড়নের অভিযোগ আমলে নেবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ