1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ন

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে শামিম-নুর উদ্দিনের জবানবন্দি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৯
  • ২১ Time View

মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত ও অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহদাত হোসেন শামিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল রবিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এদিন দুপুর ২টা ৫৫ থেকে রাত ১টা পর্যন্ত চলে রেকর্ড।

পরে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশান (পিবিআই) এর স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহেরুল হক চৌহান।

এ সময় তিনি বলেন, পিবিআই এ মামলার দায়িত্ব পাওয়ার চার দিনের মধ্যে (১০-১৪ এপ্রিল) আমরা ঘটনার মূল নায়ক যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আইনের মধ্যে থেকে বিজ্ঞ আদালতের কাছে তাদের হাজির করেছেন। আদালত দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সিআরপিসির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আসামীদ্বয় স্বতস্পূর্তভাবে বিজ্ঞ আদালতের কাছে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। আসামীদ্বয় পুরো বিষয় খোলাসা করেছেন। হত্যাকাণ্ডটি কারা ঘটিয়েছে, কিভাবে ঘটিয়েছে, কি প্রক্রিয়ায় ঘটিয়েছে বিস্তারিত বলেছেন কিন্তু তা আপনাদের সামনে পেশ করব না মামলার তদন্তের স্বার্থে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, আসামিরা অপরাধ স্বীকার করেছেন, তারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তারা জেলখানা (সিরাজ উদ দৌলা) থেকে হুকুম পেয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, এখনো পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ১৩ জনের নাম এসেছে। এছাড়াও বিক্ষিপ্তভাবে কিছু নাম এসেছে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত খতিয়ে দেখে সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারব।

পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত যে চারজন তাদের সকলকে আমরা গ্রেপ্তার করতে পারিনি। দুইজন গ্রেপ্তার আছে, বাকী দুইজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। যেকোনো সময় আপনাদের একটি ভালো খবর দিতে পারব।

এর আগে গত বৃস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহ ভালুকা থেকে নুর উদ্দিন ও পরদিন শুক্রবার সকালে মুক্তাগাছা থেকে শাহাদাত হোসেন শামীমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনবেস্টিগেশন (পিবিআই)। নুর উদ্দিন নুসরাত হত্যা মামলার ২ নম্বর ও শাহাদাত হোসেন শামিম ৩ নম্বর আসামি।

আদালতের পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) গোলাম জিলানী বলেন, মাদরাসাছাত্রীর গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনায় গ্রেফতার নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম আদালতে নেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওসি মো. শাহ আলম। তিনি আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ছয় আসামি এবং এজাহারবহির্ভূত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১১ জন আসামি রিমান্ডে রয়েছে।

এর আগে ৯ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালত নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড দেন।

পরদিন ১০ এপ্রিল অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলাকে সাত দিন, আবছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড দেন একই আদালতের বিচারক। এরপরে ১১ এপ্রিল উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড দেন একই আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহম্মেদ।

এ ছাড়াও ১৩ এপ্রিল শনিবার মামলার আরেক আসামি জাবেদ হোসেনকে ৭ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন।

উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে সে ওই বিল্ডিংয়ের তিন তলায় যান। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫ জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকেলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। পরে এ ঘটনায় সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

এর আগে ২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় শ্লীলতাহানি মামলা করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ