1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন

ফল কম খাওয়ায় অকাল মৃত্যু হচ্ছে বাংলাদেশিদের : গবেষণা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৯
  • ১৯ Time View

ফল ও সবজি কম খাওয়াসহ বাজে খাদ্যাভ্যাসের কারণে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৩০০ জনের বেশি মারা যাচ্ছে বাংলাদেশে। আর বিশ্বে মৃত্যু হচ্ছে প্রতি পাঁচ জনের একজনের। বিখ্যাত স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল দি ল্যানসেটের গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

পৃথিবীতে মানুষ একদিকে ক্ষতিকর খাবার বেশি গ্রহণ করছে, অন্যদিকে যা স্বাস্থ্যকর, তা কম খাচ্ছে৷ মাত্রাতিরিক্ত মাংস, লবণ ও চিনি গ্রহণ, পর্যাপ্ত ফল ও সবজি না খাওয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা ধুমপানে মৃত্যুকেও ছাড়িয়ে গেছে। বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১.১০ কোটি মানুষ।

গবেষণার তথ্য
মানুষ প্রয়োজনীয় খাবার কম খেলেও অপ্রয়োজনীয় খাবার খাচ্ছে বেশি৷ যেমন মিষ্টি জাতীয় পানীয় সহনীয় মাত্রার চেয়েও গড়ে ১০ গুণ বেশি পান করছে। নিরাপদ মাত্রার চেয়ে প্রতিদিন গড়ে ৮৬ ভাগ লবণ বেশি খাচ্ছে৷ স্বাভাবিকের চেয়ে লাল মাংস খাওয়া হচ্ছে ১৮ ভাগ বেশি। অন্যদিকে শস্য দানা, ফল, বাদাম, বীজ জাতীয় স্বাস্থ্যকর খাবার নেই বেশিরভাগ মানুষের নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায়।

অর্থনৈতিক বৈষম্যও এর একটি বড় কারণ। দরিদ্র মানুষ অনেক সময় পাঁচদিনে একদিনও ফল বা সবজি গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাতে।

‘নিম্নমানের খাবার মানুষের জন্য অন্য যে-কোনো কিছুর চেয়ে বড় মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করছে, এতদিন এমন কথা কথা বলা হলেও এই গবেষণার মাধ্যমে তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে,’ বলেছেন গবেষণাটির রচয়িতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হেলথ মেটরিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন’এর পরিচালক ক্রিস্টোফার মারে। ‘আমাদের মূল্যায়ন বলছে খাবারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ সোডিয়াম (লবণ) বেশি গ্রহণ আর স্বাস্থকর খাবার কম গ্রহণ’ বলেন তিনি।

গবেষণা অনুযায়ী বিশ্বে খাবার সংক্রান্ত মৃত্যুর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে উজবেকিস্তান। আর সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে আছে ইসরায়েল।

কীভাবে মৃত্যু হচ্ছে
প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে বছরে ১.১০ কোটি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে খাদ্যাভ্যাসের কারণে। এর মধ্যে ১ কোটি মানুষই মারা যায় হৃদরোগ জনিত কারণে। এ ধরণের সমস্যা মূলত তৈরি হয় খাবারে লবণের পরিমাণ থেকে।

অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। একই সাথে লবণ হৃদযন্ত্র ও রক্তনালীর উপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে শস্যদানা, সবজি ও বীজ জাতীয় খাবার হৃদরোগজনিত সমস্যার ঝুঁকি কমায়। বিশ্বে খাদ্যাভ্যাসজনিত বাকি মৃত্যুগুলো হয় ক্যানসার ও টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি
গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৭ থেকে ৩৪ বছর বয়সের ২৬ ভাগ মানুষের মৃত্যু হয় টাইপ টু ডায়াবেটিসের কারণে। বয়স্করা বেশি ভোগেন হৃদরোগের মৃত্যু ঝুঁকিতে৷ ৪৯.১ থেকে ৫৭.৪ বছর বয়সের ৫৩ ভাগের বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই কারণে হচ্ছে। এই সমস্যাগুলোর সবগুলোই খ্যাদ্যাভ্যাসের সাথে জড়িত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,ফল কম খাওয়ার কারণে বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হচ্ছে৷ শীর্ষ ৫টি মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে বাকিগুলো হচ্ছে সবজি কম খাওয়া, অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণ গ্রহণ, শস্যদানা, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার কম খাওয়া।

প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে খ্যাদ্যাভ্যাস জনিত কারণে প্রতি লাখে ৩১৩-৩৯৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এমন দেশের তালিকাতে বাংলাদেশকে দেখানো হয়েছে। ভারত, চীন আফ্রিকার কয়েকটি দেশ রয়েছে এই অবস্থানে।

কী করতে হবে
বিশেষজ্ঞরা সুস্থভাবে বাঁচার জন্য এবং মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের তাগিদ দিয়ে আসছেন অনেক দিন ধরেই। এর আগে জানুয়ারিতে প্রকাশিত ল্যানসেটের আরেক প্রতিবেদনে লাল মাংস ও চিনি খাওয়ার গড় পরিমাণ অর্ধেক কমিয়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিল।

অন্যদিকে সবজি, ফল, এবং বাদাম জাতীয় খাবার বিদ্যমান পরিমাণের চেয়ে দ্বিগুন করার কথা বলছে। যা একদিকে স্থূলকায় হয়ে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করবে, অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাতেও ভূমিকা রাখবে। সেখানেও অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ এবং শস্যদানা ও ফল কম খাওয়াকে খ্যাদ্যাভ্যাসের বড় ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ