1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩২ অপরাহ্ন

মনে হলো বোমা তাকাতেই দেখি দাউদাউ আগুন’

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
  • ১৭ Time View

পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন রিকশাচালক আবদুল মান্নান (৬০)। মাথা আর মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে। চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ বেঁচে গেলেও দেয়াল পড়ে ভেঙেছে ডান হাত। মাথা ফেটে গেছে। পিঠে মারাত্মক জখম। অতিকষ্টে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এক যাত্রী নিউ মার্কেট যাবেন। ভাড়া নিয়ে কথা বলছি। হঠাৎ বিকট শব্দ। মনে করলাম বোমা। পরে দেখি আগুনের ফুলকি। রিকশা থেকে নেমে দৌড় দিই। একটু পরেই শরীরের ওপর একটি দেয়াল ভেঙে পড়ে। তাতেই মাথা ফেটে গেছে। ডান হাত ভেঙে গেছে। আর পিঠে মারাত্মক ব্যথা পেয়েছি।’ মান্নান আরো বলেন, ‘দৌড় দেওয়ার সময় মনে হয়েছে কেয়ামত চলছে। কেয়ামত থেকে ফিরে এসেছি।’

দায়িত্বরত ডাক্তার হাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উনার অবস্থা এখন আশঙ্কামুক্ত। শরীর পোড়েনি। তবে শরীরের ওপর দেয়াল পড়ায় বিভিন্ন স্থানে ক্ষতি হয়েছে। কিছু সময় লাগবে সারতে।’

মান্নান চিকিৎসাধীন এম-২ বেডে। পাশের বেডে (এম-৫) কাতরাচ্ছেন সুজন মিয়া। জেলা চাঁদপুরে। বাঁ হাতের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। বাঁ হাত ভেঙে গেছে। ডান গাল ও কান দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ছে। শরীরে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।

রাতে কী দেখেছেন জানতে চাইলে সুজন মিয়া বলেন, ‘আমি প্লাস্টিকের দানার ব্যবসা করি। ওই রাতে যেখানে আগুনের সূত্রপাত তার পাশে পিকআপ থেকে প্লাস্টিকের দানা নামাচ্ছি। দানা নামানো প্রায় শেষ। এমন সময় হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। তারপর দেখি সবাই যার যার মতো দৌড়াদৌড়ি করছে। প্রথমে মনে করেছি বোমা ফুটেছে। কিন্তু পরে দেখি দাউদাউ আগুন। এরপর দেই দৌড়। ততক্ষণে শরীরে কিছু অংশ পুড়েছে। বাম হাতের কিছু অংশ পুড়েছে।’

গতকাল সরেজমিন সলিমুল্লাহ মেডিক্যালে গিয়ে জানা যায়, এই হাসপাতালে আটজনকে আনা হয়েছিল। দুজন ভর্তি রয়েছেন। তুষার, হেলাল সিকদার, এহসান, সাঈদ, রিপন ও নাসিরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালে মান্নানের ছেলে মিরাজসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের চোখেমুখে চিন্তার ভাঁজ। কারণ মিরাজের আয়েই সংসার চলে। আর দুই মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে সুজন মিয়াও চিন্তিত। আহত সুজন মিয়া ও মান্নান জানালেন, ব্যাপক হতাহতের মূল কারণ যানজট ও দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়া। কেউ বের হতে পারছিল না। কেউ ছিল মোটরসাইকেলে, কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে, কেউ রিকশায়। গলি ছিল অত্যন্ত সরু। গলিতে মোটরসাইকেল, রিকশা, ভ্যান, প্রাইভেট কার ও ঠেলাগাড়ি ছিল। ফলে অনেকেই পালিয়ে বাঁচার পথ পায়নি। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ড, মৃতদেহ এসব সারা জীবন চোখের সামনে ভাসবে বলেও জানান মান্নান ও সুজন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ