কেন বাদ দেয়া হলো মুমিনুলকে?

কেন বাদ দেয়া হলো মুমিনুলকে?

দল গঠন করা হয় সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায়। অথচ সেই সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনা করেও নাকি মুমিনুলকে দলে রাখার জন্য যথেষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাননি কোচ এবং নির্বাচকরা। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দলে রাখাই হয়নি মুমিনুল হককে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে বাদ দেয়া হয়েছে তাকে। দলে ফেরানো হয়েছে নাসির হোসেনকে। রাখা হয়েছে সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাসকেও।

টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুমিনুলেরই গড় সবচেয়ে বেশি। ৪৬.৮৮ করে। তার পেছনে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। গড় ৪০.৯২ করে। সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় যদি দল নির্বাচন করা হয়, তাহলেও মুমিনুলকে বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। কারণ, চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি ম্যাচে তামিমের দলের হয়ে প্রথম ইনিংসে ৭৩ রান করেন তিনি। যেটা দুই ইনিংস মিলিয়ে দু’দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

তবুও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম টেস্টের দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে মুমিনুল হককে। কেন বাদ দেয়া হলো তাকে? এ নিয়ে নানা গুঞ্জন। চারদিকেই প্রশ্ন। মুমিনুলকে বাদ দেয়ার যুক্তি কী? নির্বাচকরা যখন বলছেন, সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায়। তাহলে তো প্রস্তুতি ম্যাচে খুবই বাজে খেলেছেন সৌম্য সরকার এবং সাব্বির রহমানরা। সৌম্য করেছেন ১ এবং সাব্বির করেছেন মাত্র ১০ রান। তাদের বাদ দেয়া হলো না কেন?

মুমিনুলকে বাদ দেয়ার কারণ সম্পর্কে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেছেন, ‘স্বার্বিক ফর্ম বিবেচোনা করেই মমিনুলকে বাদ দেয়া হয়েছে। তার জায়গায় সৌম্য আর ইমরুল কায়েসকে আমরা এগিয়ে রেখছি। সৌম্যের শেষ টেস্ট সিরিজেও চারটি অর্ধশত রয়েছে। এ জন্য বিবেচোনায় তার চেয়ে মুমিনুল নিচে চলে গেছে। আর ইমরুল কায়েস হোমে যথেষ্ট ভাল খেলে।’

প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেন, ‘কয়েকজন খেলোয়াড়কে বাদ দেয়া হয়েছে তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনা করে। কয়েকজনকে বাদ দেয়া হয়েছিল আমাদের সর্বশেষ টেস্ট থেকেও। কারও নাম বলবো না। কারণ দলই হচ্ছে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যারা দল থেকে বাদ পড়েছে, তাদের চিন্তা করা উচিৎ, কেন বাদ পড়েছে। নিশ্চয়ই এর পেছনে কারণ রয়েছে। তারা তো এখনও প্রস্তুতি ক্যাম্পে রয়েছে। কঠোর পরিশ্রমও করছে তারা। তাদের মধ্যে আমরা আত্মবিশ্বাস দেখতে পাচ্ছি। সময় তো শেষ হয়ে যায়নি। ভবিষ্যতের জন্য তারা নিজেদের প্রস্তুত করে তুলুক!’

প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করলেও ‘অফ ফর্মে’র অজুহাতে দল থেকে এই প্রথম বাদ পড়লেন তিনি। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট এবং নির্বাচকরা যদি সর্বশেষ কয়েকটি সিরিজের ফর্ম বিবেচনা করেন, তাহলে সৌম্য, সাব্বিরদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে মুমিনুল। চলতি বছর খেলা চার টেস্টে সৌম্য সরকার চারটি ফিফটিসহ ৪৬.৭৫ গড়ে করেছেন ৩৭৪ রান। সর্বোচ্চ ছিল তার ৮৬ রান, ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। যদিও এখনও পর্যন্ত সৌম্যর ক্যারিয়ারে কোনো ইনিংসই তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারেনি।

সাব্বির খেলেছেন ৬ টেস্ট। ৩৩ গড়ে রান করেছেন ৩৩০। ফিফটি তিনটি। কোনো সেঞ্চুরি নেই তারও। তবে কলম্বো টেস্টে তার দুটো চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংসের মূল্য ফিফটি-সেঞ্চুরির চেয়েও অনেক বেশি।

এ দু’জনের তুলনায় মুমিনুল এই সময়ের মধ্যে পাঁচ টেস্টে ২৩.২ গড়ে করেছেন মাত্র ২৩২ রান। এর মধ্যে ফিফটি মাত্র দুটি। অর্থাৎ, সর্বশেষ পাঁচ টেস্ট বিবেচনায় মুমিনুলের চেয়ে সাব্বির-সৌম্যর রান গড় ভালো। নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে এ তুলনায়ই সবচেয়ে বেশি বিবেচিত হয়েছে এবং অসাধারণ ধৈর্য্যশীল এক ব্যাটসম্যান হওয়া সত্ত্বেও বাদ দেয়া হলো মুমিনুলকে।

খেলাধূলা