1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৪ অপরাহ্ন

বলিউডের মিনাক্ষি হত্যা রহস্য!

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১২
  • ১২৮ Time View

মাত্র এক বছর আগে পরিচালক প্রাওয়াল রামানের ‘৪০৪’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যে ভারতের দেরাদুনে অডিশন দিয়েছিলেন বলিউডের নবীন অভিনেত্রী মিনাক্ষি থাপা। গ্ল্যামার আর যোগ্যতা দিয়ে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত হওয়াই ছিল তার উদ্দেশ্য। চোখে নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই ফিল্মে পা রেখেছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন, দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকায় ছাপা হবে তার ছবি। মিনাক্ষির সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে ঠিকই, তবে তা তার অকাল মৃত্যুর পর।

বলিউড পরিচালক মাধুর ভান্ডারকারের ‘হিরোইন’ ছবিতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়  করছিলেন মিনাক্ষি থাপা। ছবির শুটিংয়ের সেটে বন্ধুত্ব হয় অমিত জসওয়াল আর প্রীতি এলভিনা সুরিন নামে দুজন জুনিয়র আর্টিস্টের সঙ্গে। এলাহাবাদ থেকে তারাও মুম্বাই এসেছিলেন বলিউডে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। তাদের হাতেই প্রাণ হারাতে হয়েছে মিনাক্ষিকে। পুলিশী তদন্তে তাই বেরিয়ে এসেছে।

সম্প্রতি মিনাক্ষি হত্যা রহস্য উদাঘটন করেছে পুলিশ। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, অর্থের জন্যই অমিত আর প্রীতির হাতে খুন হয়েছেন মিনাক্ষি।

অপহরণের প্রায় একমাস পর পুলিশ মিনাক্ষির অপহরণকারীদের সন্ধান পায়। অপহরণের প্রধান দুই হোতা অমিত জসওয়াল আর প্রীতি এলভিনা সুরিনকে গ্রেফতার করে মুম্বাই পুলিশ। জেরার মুখে মিনাক্ষিকে হত্যার কথা স্বীকার করে তারা।

মুম্বাই পুলিশ কর্মকর্তা দেবেন ভারতি সম্প্রতি মিডিয়াকে জানান, অমিত আর প্রীতির সঙ্গে মিনাক্ষির বন্ধুত্ব গড়ে উঠে ‘হিরোইন’ ছবির সেটে। সেসময় মিনাক্ষি তাদের জানিয়েছিল, সে উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়ে। অভিনয়টা তার শখ। অভিনয়ে আসা কেবল শখ পুরণের জন্য। এটা জানতে পেরেই অসচ্ছল পরিবার থেকে উঠে আসা অমিত আর প্রীতি পরিকল্পনা করে মিনাক্ষীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করার।

পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা মিনাক্ষিকে মডেলিংয়ের লোভ দেখিয়ে এলাহাবাদে ডেকে পাঠান। এরপরই মিনাক্ষিকে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছ থেকে ১৫ লাখ রূপি মুক্তিপণ দাবি করে অমিত আর প্রীতির । কিন্তু মিনাক্ষি নিজেকে বিত্তশালী পরিবারের মেয়ে হিসেবে যে পরিচয় দিয়েছিল, তা মোটেও সত্য ছিল না। মেয়ের মুক্তির জন্য মিনাক্ষির মা কেবল ৬০ হাজার রূপি যোগার করতে সক্ষম হন।

অপহরণকারী অমিত আর প্রীতি যখন বুঝলেন মিনাক্ষিকে দিয়ে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না, তখনই আর দেরি না করে মিনাক্ষিকে তারা হত্যা করেন। অপহরণকারীরা মিনাক্ষির দেহ থেকে তার মুন্ডকে কেটে আলাদা করে ফেলে। তার দেহ এলাহাবাদের একটি পানির ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেয় আর চলন্ত বাস থেকে তার মুন্ড জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে।

মিনাক্ষির ভাই নাভরাজ বোনকে খুঁজে না পেয়ে একমাস আগে মুম্বাইয়ের পুলিশ স্টেশনে একটি নিঁখাজের অভিযোগ দায়ের করেন। অন্যদিকে মিনাক্ষির মাও দেহেরাদুন পুলিশ স্টেশনে একই অভিযোগ দায়ের করেন বলে ঐ পুলিশ কর্মকর্তা জানান। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই মিনাক্ষির অনুসন্ধান শুরু করে পুলিশ।

মুম্বাই পুলিশ স্টেশনের অপরাধ বিভাগের ইন্সপেক্টর সঞ্জয় সাতারদেকার জানান, অপহরণকারীরা মিনাক্ষিকে হত্যা করে তার মোবাইল ফোন ও এটিএম কার্ড নিয়ে নেয়। মিনাক্ষির পরিবার ৬০ হাজার রূপি মিনাক্ষির অ্যাকাউন্টে পাঠালে অপহরণকারীরা সে অর্থ তুলে নেন এবং সেখান থেকে তারা  বিষ্ণুদেবী মন্দিরে চলে যায়। অপহরণকারীরা মোবাইলে ম্যাসেজের মাধ্যমে মিনাক্ষির পরিবারকে ভয় দেখাতো আর মুক্তিপণের অর্থ দাবি করতো। সেই সুত্র ধরেই মিনাক্ষির মোবাইল ট্র্যাক করে অপহরণকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়।

তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত অমিত ও প্রীতি এবং তাদের সহযোগীরা  অপরাধ স্বীকার করেছে। বর্তমানে এই মামলায় আরও কিছু তদন্তের কাজ চলছে। ইউপিতে পুলিশের একটি টিম মিনাক্ষির দেহাবশেষ অনুসন্ধানের জন্য কাজ করছে।

বাস্তবজীবনে মিনাক্ষি থাপা ছিলেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন সাধারণ মেয়ে। তার বাবা ভারতের ওয়েল এন্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশনের  একজন সাধারণ কর্মচারী  ছিলেন। মিনাক্ষি ফ্র্যাঙ্কফিন  ইন্সিটিটিউট থেকে বিমান চালানার উপর একটি ডিপ্লোমা কোর্স করেন। কিন্তু নাচের প্রতি তার আগ্রহটা তার বরাবরই ছিল বেশি, তাই পেশা হিসেবে নাচকেই বেছে নিতে চেয়েছিলেস।

বছরখানেক আগে মিনাক্ষি বলিউডে পা রাখেন ‘শহর’ ও ‘৪০৪’ ছবিতে ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। দেহেরাদুনের এসটি জোসেফের অ্যাকাডেমিও ইয়েটি স্কেটসে তিনি নাচের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন অনেকদিন। কিন্তু অভিনয়ের মাধ্যমে সুপারস্টার হওয়ার ঝোঁকটা কমাতে পারেননি। তাই স্বপ্ন পূরনের জন্য মুম্বাইয়ে চলে আসেন। ধনী পরিবারের মেয়ের পরিচয় দিয়ে বন্ধুদের কাছে নিজেকে বড় রাখতে চেয়েছিলেন মিনাক্ষি। তিনি কি জানতেন এই মিথ্যো তার জীবনকে কেড়ে নিবে!

অনেক নতুন অভিনেতা-অভিনেত্রী নিজেদের স্বপ্ন পূরণের জন্য মুম্বাইতে আসেন। যারা বলিউডের ফিল্মে জায়গা করে নিতে চান। মিনাক্ষিও তাদেরই একজন। কিন্তু এই নিমর্ম হত্যাকান্ড শুধু মিনাক্ষির স্বপ্নকে নয়, তাকেও কেড়ে নিল চিরতরে!

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ