1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
হাদিকে গুলির ঘটনা নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশ ৩৩৬ জনের গেজেট বাতিলে সুপারিশ জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা জামায়াত কখনো ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আপস করেনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে: ড. সালেহউদ্দিন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত : নৌপরিবহন উপদেষ্টা হাসিনা-কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল ২০২৪-কে ১৯৭১-এর মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করি : মাহফুজ আলম ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে জাতীয় শক্তিতে পরিণত করতে হবে : সালাহউদ্দিন আহমদ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অটিজম বিষয়ক চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সায়মাকে মন্ত্রিসভার অভিনন্দন

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৭
  • ৬৯ Time View

অটিজম বিষয়ক বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি সায়মা ওয়াজেদ হোসেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ‘ডব্লিউএইচও চ্যাম্পিয়ন ফর অটিজম’ অভিধা পাওয়ায় মন্ত্রিসভা সোমবার তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কর্তৃক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ‘ডব্লিউএইচও চ্যাম্পিয়ন ফর অটিজম’ অভিধা লাভ করায় বৈঠকের শুরুতেই মন্ত্রিসভা সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে অভিনন্দন জানায়।’
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের আগের দিন ডব্লিউএইচও’র নয়াদিল্লীস্থ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সংক্রান্ত আঞ্চলিক কার্যালয়ে গত শনিবার সায়মা ওয়াজেদকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ‘ডব্লিউএইচও চ্যাম্পিয়ন ফর অটিজম’ অভিধা দেয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
জাতিসংঘ স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদের নাম ঘোষণার সময় তাকে অটিজম বিষয়ে একজন ‘দৃঢ় সমর্থক’ হিসেবে উল্লেখ করে।
ডব্লিউএইচও’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের আন্তরিক ও নজিরবিহীন প্রচেষ্টায় তার দেশ বাংলাদেশে অটিজম স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে গুরুত্ব লাভ করেছে এবং এটি টেকসই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মনযোগ আকর্ষণেও সহায়ক হয়েছে।
এ দায়িত্বের ফলে সায়মা ওয়াজেদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশে অটিজম বিষয়ক জাতীয় নীতি ও কৌশল প্রণয়নে পরামর্শ সহায়তা দেবেন।
তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্যোগের প্রচারণার পাশাপাশি অটিজম রোগ (এএসডি) সংক্রান্ত গবেষণাকে দৃঢ় অবস্থানে বিশেষ করে এ রোগে আক্রান্ত শিশু, তাদের বাবা-মা ও পরিচর্যাকারীদের বিভিন্ন ভোগান্তি চিহ্নিত করে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কাজ করবেন।
পুতুল ডাক নামে পরিচিত সায়মা বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সূচনা ফাউন্ডেশনেরও সভাপতি। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলেরও সদস্য। তার উদ্যোগেই ২০১১ সালে ঢাকায় প্রথম বারের মতো অটিজম বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অটিজম বিষয়ে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদানের জন্য ডব্লিউএইচও তাকে (পুতুল) ২০১৪ সালে সেপ্টেম্বরে ‘এক্সিলেন্স ইন পাবলিক হেলথ এওয়ার্ড’ দিয়েছে।
এদিকে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন এক প্রবন্ধে অটিজম মোকাবেলায় পরিবারগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী জীবনব্যাপী অধিকতর সাশ্রয়ী, টেকসই ও সহায়ক আন্তঃখাত কর্মসূচি প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস)-এ শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘অটিজম মোকাবেলায় এমন কোন সহজ সমাধান নেই যার মাধ্যমে বিদ্যমান চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে তা বাস্তবায়িত করা যায়। এর পরিবর্তে, পরিবারগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী জীবনব্যাপী অধিকতর সাশ্রয়ী, টেকসই ও সহায়ক আন্তঃখাত কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে।’
প্রবন্ধটি ২ এপ্রিল চলতি বছরের বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আইপিএস ইস্যুকৃত ধারাবাহিক প্রতিবেদনের অংশ।
তিনি বলেন, উচ্চ মূল্য ও কপিরাইট আইনের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো অনেক কর্মসূচি একই রকম বিচ্ছিন্নভাবে হয়ে থাকে। অধিকন্তু যেসব কর্মসূচিগুলোতে চলমান অবকাঠামোর সঙ্গে আন্তঃশৃঙ্খলা সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সেগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ।
সায়মা বলেন, বিগত পাঁচ বছরে রাজনৈতিক সমর্থন ও জাতীয় শিক্ষার নীতির কারণে বাংলাদেশে অটিজমের ওপর সচেতনতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও তহবিল ও সম্পদের অভাবে তাদেরকে যথাযথ সেবা প্রদান করা এখন সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের চলমান অব্যহত অগ্রগতির ফলে আমরা নিশ্চিতভাবেই আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাব।
তিনি বলেন, আমাদের অসামান্য এই সাফল্যের পেছনে জনসচেতনতা ও যেসব পরিবারের সদস্যরা প্রতিনিয়ত অটিজমকে মোকাবেলা করছে তাদের কৃতিত্ব রয়েছে। এই সাফল্যের পেছনে এই সব পরিবারের সদস্যদের ত্যাগ রয়েছে।
১৯৯০ এর দশকে সমন্বিত প্রতিবন্ধী নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই ধরনের পরিবারগুলোর জন্য আমাদের মিশন শুরু হয়। পাশাপাশি জাতীয় ফোরাম ও প্রতিবন্ধী সংগঠন গড়ে তোলা হয়।
সায়মা বলেন, বিশ্বব্যাপী সচেতনতা এবং অটিজম বোঝার ক্ষেত্রে ধারণা বৃদ্ধির ফলে রোগ নির্ণয়ে উন্নতি, চিকিৎসার চাহিদা এবং উদ্ভাবনী পন্থা, বিচ্ছিন্ন এর মধ্যে অনেকগুলো বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার যোগ্য।
সায়মা বলেন, এই এপ্রিলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা-এসইএআরও কে সঙ্গে নিয়ে সূচনা ফাউন্ডেশন ভুটান ও বাংলাদেশ পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যেগে ভুটানে অটিজম বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সংগঠিত করে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করবে।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞ, স্ব-প্রচারণাকারী, পরিচর্যাকারী ও নীতি নির্ধারকরা অটিজম নিয়ে আলোচনার জন্য থিম্পুতে তিন দিনের এক বৈঠকে মিলিত হবেন।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে, বাংলাদেশে অটিজম সচেতনতা অত্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তিনি রাজনৈতিক সমর্থন এবং জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ২ এপ্রিল জাতীয় দিবস হিসেবে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এরপর থেকে প্রতিবছর ২ এপ্রিল বাংলাদেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
‘এ সময় বিশেষ দক্ষতার জন্য সুপরিচিত অটিজম ব্যক্তি ও সংগঠন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখার করার সুযোগ পায়’ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সায়মা বলেন, অটিজম সম্পর্কে জনগণের মাঝে সচেতনতার অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রকৃত টার্নিং পয়েন্ট ছিল ২০১১ সালের ২৫ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত অটিজম বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এ অঞ্চলের অন্যান্য সম্মেলন থেকে ঢাকার এই সম্মেলনের আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। এই সম্মেলনে বৈজ্ঞানিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনেতিক ব্যক্তিত্বরা সমবেত হয়েছিলেন। বিশিষ্ট রাজনেতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে ছিলেন সোনিয়া গান্ধী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশাপাশি আরো অনেক ফাস্টলেডি, বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মন্ত্রীবৃন্দ। এর ফলে এটি অনন্য সাধারণ এক সম্মেলনে পরিণত হয়।
এই সম্মেলনে অটিজম ও প্রতিবন্ধীদের ব্যাপারে সামাজিক আচরণে অভূতপূর্ব পরিবর্তন নিয়ে আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরফলে আগে সংবাদপত্রে যে সব নিবন্ধ গুরুত্ব পেত না সেসব নিবন্ধের প্রতি তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকায় অটিজম বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিবন্ধ নিয়মিত প্রকাশ পেতে থাকে। টকশোগুলোতেও স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনায় অটিজম ও প্রতিবন্ধীতা নিয়ে আলোচনা অন্তর্ভুক্ত হয়। অটিজম শব্দটি আমাদের ভাষার শব্দ নয় এখন এটি ঘরে ঘরে আলোচিত শব্দে পরিণত হয়েছে। শব্দটি অনাকাক্সিক্ষতভাবেই বাংলায় প্রতিবন্ধীতার সমার্থক হয়ে উঠেছে।
সায়মা বলেন, এই সম্মেলনের পরে অভিভাবক ও অটিজম বিশষজ্ঞদের সমন্বয়ে ৪টি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এছাড়া আমি অনেক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে হাজির হয়েছি, সেখানে অটিজম বিষয় বিস্তারিত তুলে ধরেছি এবং বৈষম্য ও অমর্যাদার অবসানে ব্যক্তিগত বার্তা তুলে ধরেছি।
টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৩ সালে সিনিয়র উপদেষ্টা ও কারিগরী বিশেষজ্ঞদের সমর্থনে ৮টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের পরেই প্যারেন্ট’স ফোরাম গঠন করা হয় বলে তিনি জানান।
সায়মা ওয়াজেদ জানান, প্রাথমিক অবস্থায় অটিজম সনাক্তকরণ ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বহুমুখী উদ্যোগের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে, সহায়ক শিক্ষা কার্যক্রম, কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনী কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। এরফলে স্টেকহোল্ডার ও নীতি নির্ধারকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছানো হয়েছে যে অটিজম সমস্যার সহজ সমাধান নেই, এজন্য বিদ্যমান প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, গত চার বছরে ন্যাশনাল স্টিয়ারিং কমিটি সরকারের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রতিবন্ধীদের জন্য বিভিন্ন কর্ম-পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করেছে। পাশাপাশি কর্মসূচি বস্তাবায়নে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সমর্থন পাওয়া গেছে, স্টেক হোল্ডার, নিউরোডেভলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারর্স (এনডিডি) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং তাদের পরিবার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন অব্যাহত রেখেছে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে অটিজম এবং সকল ধরনের প্রতিবন্ধীতার বিষয় সচেতনতা সৃষ্টি নিশ্চিত করতে ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে সায়মা বলেন, বাস্তবভিত্তিক বিশেষ করে সামাজিক খাতে টেকসই কর্মসূচি নিশ্চিত করতে তহবিল বরাদ্দ, দক্ষতার সঙ্গে প্রকল্প তদারকির ক্ষেত্রে কৌশলগত ঘাটতি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে সীমিত প্রবৃদ্ধি আমাদের অভিন্ন ও সমন্বিত কার্যক্রমের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ