চট্টগ্রাম: অর্থনীতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে রফতানিকারক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে উল্লেখ করে সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বলেছেন, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। সবক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন হচ্ছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এসএমই মেলা-২০১৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে তিন দিনব্যাপি এ মেলার আয়োজন করে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু।
দেশের অর্থনীতির মোড় ঘুরানোর জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে উৎসাহিত করতে হবে উল্লেখ করে এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের সহজভাবে ব্যাংক ঋণ দেওয়ার দাবি জানান।
বিএসটিআই সহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সনদের জন্য ঢাকায় যেতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব কারণে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত কার্যক্রম চট্টগ্রাম থেকে যাতে সম্পন্ন করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিল্পমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক এসএমই মেলায় আয়োজন করায় চট্টগ্রাম চেম্বার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বরাত দিয়ে শিল্পমন্ত্রী জানান, ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে স্থির মূল্যে জিডিপিতে সার্বিক শিল্পখাতের অবদান প্রাক্কলন করা হয় ৩৩ দশমিক ৪২ শতাংশ।
২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে এর পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে জিডিপিতে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতের অবদান ২০ দশমিক ১৭ শতাংশ।
খাত বিবেচনায় ক্ষুদ্রায়তন শিল্পখাতে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং বৃহত ও মাঝারি শিল্পে ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।
দেশের কোথায় কোন ধরনের এসএমই শিল্প স্থাপন টেকসই হবে তা নির্ধারণের কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব শিল্প বিকাশে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোক্তাদের কী ধরনের প্রণোদনা ও নীতিগত সহায়তা নিতে হবে তাও চিহ্নিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক তরুণ ও সৃজনশীল উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে সহায়তার ক্ষেত্রগুলোও নির্ধারণের কাজ চলছে।
চট্টগ্রাম ও তিন পার্বত্য জেলা এ সমীক্ষার আওতায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ সমীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে দেশব্যাপী এসএমই খাতের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইন্সপায়ার্ড প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে যুযোপযোগী এসএমই নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চেম্বারের সহসভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, চেম্বার পরিচালক অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), অঞ্জন শেখর, এম এ মোতালেব, জুনিয়র চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও অ্যালবিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রাইসুল উদ্দিন সৈকত, নির্বাহি সহসভাপতি মো.গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দেশিয় পণ্যের প্রদর্শন ও বিপণনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে আয়োজিত এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত।