1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন

মডেল-অভিনেতা অলির আত্মহত্যা নিয়ে বিভ্রান্তি

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১২
  • ৩৩৯ Time View

‘লাইফবয়’ খ্যাত মডেল ও অভিনেতা মইনুল হক অলির আত্মহত্যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আত্মহত্যার সময় জলন্ত সিগারেটের আগুন থেকে তার পরিহিত পোশাকে আগুন লাগে। কাপড় পোড়ার গন্ধ বাসায় ছড়িয়ে গেলে পরিবারের সদস্যরা অলির রুম গিয়ে তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। অন্যদিকে ময়না তদন্তে আগুনে দগ্ধ হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি। তবে তার পায়ে একটা পোড়া দাগ আছে। এটি অনেক আগের পোড়া দাগ।

মডেল ও অভিনেতা মইনুল হক অলি গত ২৭ মার্চ মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর রমনা থানার পশ্চিম মালিবাগের ৬০ নম্বর বাসার নিচতলায় নিজকক্ষে ফ্যানের সঙ্গে কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। বুধবার সকাল ১০টায় রমনা থানার এসআই নাজমুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করেন।

এদিকে অলির আত্মহত্যা ঘিরে বিভিন্ন বিভ্রান্তি ও রহস্য দেখা দিয়েছে। কারণ, তার পরিবারের সদস্যদের একেকজন অলির আত্মহত্যা নিয়ে একেকরকম কথা বলছেন। অলির বড় ভাই মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ পোড়া গন্ধে অলির মা-বাবা তার ঘরে ছুটে যান। সেখানেই তারা অলির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর ভোরে লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। পারিবারিক আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, অলির মৃতদেহ আগুনে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ময়না তদন্তে আগুনে দগ্ধ হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি। ময়নাতদন্তে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে।

ময়নাতদন্তের পর ২৮ মার্চ বুধবার দুপুরে মইনুল হক অলির মরদেহ মালিবাগের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সিদ্ধেশ্বরী জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় তার প্রথম জানাজা। সেখান থেকে অলির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। সেখানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে গভীর রাতে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

নাম না প্রকাশের অলির এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানান, তিন ভাই-বোনের মধ্যে অলি ছিলেন সবার ছোট। বড় ভাই পেশায় চিকিত্সক। আর একমাত্র বোন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। তিনি আরো জানান, শোবিজে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও আলাদা অবস্থান গড়ে তুলতে না পারায় অলি ছিলেন হতাশাগ্রস্থ। ভালো একাডেমিক ফলাফল করার পর মিডিয়ায় কাজ করার জন্য অলি চাকরি বা অন্য কোনো পেশায় মনোযোগ দেন নি। একাধিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিলেও কোনোখানে তা স্থায়ীত্ব পায় নি। এই নিয়ে তার পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি চলছিল বলে জানা গেছে। ক্যারিয়ারের পাশাপাশি পারিবারিক জীবন নিয়ে হতাশা থেকেই অলি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবী করেছেন অলির এই বন্ধু।

তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সালে ৯ সেপ্টেম্বর অলি পারিবারিক পছন্দ বিয়ে করেন। স্ত্রী অনন্যার সংগে তার দাম্পত্যজীবন মোটেও সুখের হয় নি। অলি মিডিয়ায় কাজ করায় অনন্যা অকারণেই তাকে সন্দেহ করতো। এই নিয়ে তাদের সংসারে বিরোধ তৈরি হয়। কিছুদিন আগে একটি নাটকের শুটিং শেষে দেরি করে বাসায় ফেরায় অনন্যা রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে যায়। অলি তাকে ফিরিয়ে আনতে গেলে তিনি আসেন নি। উল্টো অনন্যা জানিয়ে দেন, অলির সংগে তিনি সংসার করবেন না। শিগগিরই ডিভোর্সের কাগজ পাঠিয়ে দেবেন। এই ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন অলি।

অলির স্ত্রী ফাতেমাতুজ্জোহরা অনন্যার বাবার বন্ধু মইনুদ্দিন জানান, অনন্যার সঙ্গে অলির ৩ বছরে আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়েতে তিনি ছিলেন একজন মধ্যস্থতাকারী। বিয়ের সময় অলি বিবিডিএলে চাকরি করতেন বলে জানতেন তিনি । তিনি আরও জানান, মইনুলের বাবা হাজী মো: শামসুল হক। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জে। ঢাকার মালিবাগের বাসায় তারা ভাড়া থাকতেন। স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সংগে তার অলির একাধিকবার মনোমালিন্যের কথাও বিভিন্ন সময় তার কানে এসেছে বলে তিনি জানান।

মইনুল হক অলি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী। তিনি ছিলেন অভিনেতা ও মডেল। অলি অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আছে ‘একটু রোদের ছোঁয়া’, ‘হিজাব’, ‘ঊনমানুষ’, ‘নীরব পথের যাত্রী’, ‘নীল রক্ত’, ‘আকাশ ছোঁয়া’ প্রভৃতি । মডেল হিসেবে অলি কাজ করেছেন লাইফবয় সাবান, ক্লোজ আপ টুথপেস্ট, লিজান হারবাল প্রভৃতি প্রডাক্টের বিজ্ঞাপনচিত্রে। মঞ্চে অলি কাজ করতেন লোকনাট্য দলের হয়ে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ