1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন

বিনম্র শ্রদ্ধায় সিক্ত রায়েরবাজার বধ্যভূমি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫
  • ৯৬ Time View

800রায়েজবাজার অগ্নি শিখা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী দীপা। বধ্যভূমি থেকে প্রায় দুইশ’ গজ দূরে বিদ্যালয়টির অবস্থান। দীপার বাসা বিদ্যালয়ের কাছেই। সহপাঠি, বন্ধুদের সঙ্গে রোজ বিকালে খেলতে আসে বধ্যভূমি চত্বরে। দীপা আজ এসেছে স্কুলের পক্ষ থেকে। অগ্নি শিখা স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতো দীপার হাতেও একটি লাল গোলাপ। শান্ত, বিনম্র চিত্মে দীপা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

কথা হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। দীপা বলে, ‘আজ অন্যরকম লাগছে। প্রতিদিন এখানে খেলতে আসি। এরকম কোনোদিন মনে হয়নি। শিক্ষকরা ক্লাশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের ব্যাপারে গতকাল ধারণা দিয়েছেন। আজ এখানে আসার পর আরো বুঝতে পারলাম।’

দীপার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নুপুর নামের আরেক সহপাঠি বলছিল, ‘আজ এখানে আসার পর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আরও বেড়ে গেছে। স্বাধীনতার জন্যই তাদেরকে জীবন দিতে হয়েছে। যারা জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছিল, তাদের আজ বিচার হচ্ছে, বাকিদেরও বিচার হতে হবে। তবেই শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।’

দীপা বা নুপুরের মতো হাজারো শিক্ষার্থী সোমবার সকাল থেকেই শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। শিক্ষকদের কেউ কালো পাঞ্জাবি, আবার শিক্ষিকাদের মধ্যে কেউ কালো শাড়ি পড়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বুকে কালোব্যাজ ধারণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছে।

rayerbazar
শুধু শিক্ষক বা শিক্ষার্থরাই নয়, সোমবার সকাল থেকেই রায়েরবাজার বধ্যভূমি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। কাক ঢাকা ভোর হতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসে নেতাকর্মীরা। এসব সংগঠনের বাইরে সাধারণ মানুষরাওও ফুল দিতে আসেন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে।

বধ্যভূমি চত্বরে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচিও পালন করা হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, নাটক প্রদর্শন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পরিবেশনা।

সকাল ৯টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র খোকন এসেছেন, শহীদদের স্মরণ করতে। কথা হয় খোকনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি একাই এসেছি। গত চার বছর থেকেই আসি। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। আবেগের তাড়না থেকেই শহীদদের স্মরণ করতে আসি। এতে দেশের প্রতি নিজের দায় উপলব্ধি করার সুযোগ মেলে।’

উল্লেখ্য, ১৯৭১-এর ১০ ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের প্রস্তুতি চলে। মূলত ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয়। এ দিন প্রায় ২০০ জনের মত বুদ্ধিজীবীদের তাদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের চোখে কাপড় বেঁধে মিরপুর, মোহাম্মদপুর (রায়েরবাজার), নাখালপাড়া ও রাজারবাগসহ আরো অনেক স্থানে অবস্থিত নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের উপর বিভৎস নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাদের নৃশংসভাবে রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়।

নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রতি বছর ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে পালন করা  হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ