1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৬ অপরাহ্ন

নীল সাদা লালেই কি যত আক্রোশ সন্ত্রাসবাদীদের?

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৫
  • ২২১ Time View

নীল সাদা লালেই কি যত রাগ জঙ্গিদের? হালকা সুরেই প্রশ্নটা পেড়েছিল রানা। রানা দাস, 14কলকাতা২৪ঢ৭-এর সম্পাদক, আমার সহকর্মী। প্রথমে স্বভাবসিদ্ধভাবেই উড়িয়ে দিয়েছিলাম।কিন্তু তার পরেই এল সেকেন্ড থট।

নিখিলেশ রায়চৌধুরী
বিশিষ্ট সাংবাদিক
রানা একেবারেই ভুল বলেনি। সত্যিই নীল সাদা লালেই যত আক্রোশ সন্ত্রাসবাদীদের।তার কারণ, এই রঙের ছটাতেই তো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল মানবসভ্যতার প্রথম মুক্তির বাণী: লিবার্তে, ইগালিতে, ফ্রেতারনিতে (মুক্তি, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব)।
এই নীল সাদা লাল-ই তো প্রথম উড়েছিল আমেরিকার মাটিতে।জর্জ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে।ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীদের ঝেঁটিয়ে বিষ ঝেড়ে দিয়েছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন আর তাঁর সঙ্গীরা।১৭৭৭ সালে সেখানকার ১৩টি ব্রিটিশ কলোনি প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণা করে যে জাতীয় পতাকার জন্ম দিয়েছিল তারও রং আদতে সেই এক।নীল সাদা লাল। কিংবা ঘুরিয়ে লাল সাদা নীল।সেই পতাকা বানানোর পিছনেও এক অসাধারণ কাহিনি। জর্জ ওয়াশিংটনের অনুগামী সেনারা তাঁদের জামা কেটে দিয়েছিলেন সাদা পটির অংশ। মুক্তিযোদ্ধাদের স্ত্রীরা তাঁদের ফ্লানেলের পেটিকোট দান করেছিলেন লাল পটির জন্য।আর নীলের উপরে সাদা তারকাখচিত অংশটি এসেছিল ক্যাপ্টেন আব্রাহাম স্টাওয়ার্টউটের কোট থেকে।তার জন্য জর্জ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস ক্যাপটেন স্টাওয়ার্টউটকে মূল্যও চুকিয়েছিল।ওই বছরের ১৪ জুন এই পতাকা কংগ্রেসে গৃহীত হয়।তার পর তেসরা আগস্ট স্ট্যানউইক্স দুর্গ অবরোধের যুদ্ধে প্রথম ওড়ে সেই নক্ষত্রখচিত বিজয়কেতন। ষড়হবড়িষভ
আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ নিজের চোখে দেখেছিলেন ফরাসি বিপ্লবী লাফায়েত।শুধু দেখা নয়, জর্জ ওয়াশিংটন-টমাস জেফারসন-বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিনের আদর্শে অনুপ্রাণিত লাফায়েত সেই স্বাধীনতার যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন।তার পর মুক্তির সেই আগুন বুকে নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন ফ্রান্সে।লিবার্টি, ইক্যুয়ালিটি, ফ্রেটারনিটি। একজন মানুষের কাছে আর একজন মানুষের একটাই পরিচয়, সিটিজেন।সেতয়্যাঁ। ছেঁড়া ছাতা-রাজছত্র মিলে চলে গেছে একই বৈকুণ্ঠের দিকে।অতঃপর? অতঃপর, বাস্তিল বিজয়। তার পর ফ্রান্স আর ফিরে দেখে নাইৃ..
সেই আলোতেই আলোকিত নীল সাদা লাল। শুধু ফ্রান্স নয়। তার আহ্বান ছড়িয়ে পড়ল দিকে দিকে। মুক্তি মানেই ফরাসি বিপ্লব। কবি সামসুর রাহমানের ভাষায় ‘সকল প্রকার কারাগার থেকে মুক্তিৃ’।যে আগুন লাফায়েত বুকে নিয়ে এসেছিলেন তাতে পুড়েছে শত শত বছরের জঞ্জাল, কুসংস্কার, বিকার আর মোহ। মিরাবো, সিয়েস, দাঁতঁ, ক্যামিই দেমুল্যাঁ, রোবসপিয়েরৃ।ফ্রান্সের হাত ধরে নতুন বিশ্ব জেগে উঠছে, প্রাণ পাচ্ছে। দাঁতঁ তাঁর উদাত্ত কণ্ঠে বলছেন, বিপ্লবের জন্য তিনটি জিনিসের দরকার। সাহস, সাহস, আর সাহস।আটলান্টিকের এক পাড়ের মুক্তি ঝাঁকুনি দিয়ে জাগিয়ে তুলেছে আর এক তটকে।
আমেরিকা পেরিয়ে ফরাসি বিপ্লবের সেই নীল সাদা লাল কি কেবল ইউরোপকেই জাগিয়ে তুলেছিল? ডিরোজিও-র শিক্ষায় অনুপ্রাণিত-উদ্বুদ্ধ ছাত্র-যুবরা তাহলে কেন এই কলকাতা শহরে অক্টারলোনি মনুমেন্টের (এখনকার শহিদ মিনার) তুলল ফরাসি বিপ্লবের পতাকা? স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশ রাজ।
সেই অষ্টাদশ শতকের শেষবেলায় ওড়া নীল সাদা লাল-কে এখনও ভয় পায় অন্ধকার।সূর্যের আলো-অগ্নিকুণ্ড যেমন তমসা ঘুচিয়ে দেয়, নীল সাদা লালেরও তো সেই একই শক্তি, একই ক্ষমতা।এই তমসা কখনও দেখা দিয়েছে রাজতান্ত্রিক আড়ম্বর-আভিজাত্যের আংরাখার ছায়ায়, কখনও ধর্মবেশধারী মোহান্ধের নির্বিচার তাণ্ডবে।
১৪ নভেম্বরেও সেই একই তমসা হিংসার চেহারা নিয়ে হেনেছে নিঃসহায়ে।এবারও তার টার্গেট ঘুরেফিরে সেই নীল সাদা লাল। লিবার্তে ইগালিতে ফ্রেতারনিতে। মানবসভ্যতাকে টিঁকে থাকতে হলে এই অন্ধকারের শক্তির সঙ্গে পাঞ্জা কষেই বাঁচতে হবে।বাঁচতে হবে নীল সাদা লালের ভরসায়।যার উলটো পিঠে রয়েছে ডুমস অব ডেমোক্লেস কিংবা মঁসিয়ে গিলোটিন। সূত্র- কলকাতা২৪ঢ৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ