1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন

দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে বিদায় করে ফাইনালে বাংলাদেশ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১২
  • ৯৭ Time View

হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ হোঁচট খেলে যা হয় তাই হলো। সংবিত হারিয়ে ফেললেন সাকিব। মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মতো শক্তিটুকুও অবশিষ্ট নেই। শরীরটাকে কোনোমতে টানতে টানতে সাজঘরের ফিরলেন। মাহমুদউল্লাহকে ক্রস করার সময় ক্রিকেটীয় সৌজন্য দেখাতেও ভোলেন নি।

সচিত্রা সেনানায়েকের বলে এলবিডব্লু হওয়ার পরের দৃশ্য বড্ড করুণ। সাকিবকে এতটা বিমর্ষ হতে সচরাচর দেখা যায় না। তারপরেও ওই মুহূর্তে ৪৬ বলে সাকিবের ৫৬ রান অনেক বড় ইনিংস। তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তামিম আর সাকিবের ৭৬ রানের জুটিতেই খেলার রূপ ফেরে। ৫৯ রান হওয়ার পর তামিম উইকেটটা একপ্রকার ছুড়েই দিলেন। টানা তিন ম্যাচে তামিমকে কখনোই অর্ধশতক করতে দেখা যায়নি। পাকিস্তান, ভারতের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অর্ধশতক পেলেন। তারও হন্তারক সেনানায়েকে।

সেট জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পরও নাসির হোসেন থাকলেন অটল-অবিচল। মাহমুদঊল্লাকে নিয়েই খেলা শেষ করলেন। আগের দুই ম্যাচে খেলা শেষ করতে না পারার দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব হলো নাসিরের। মাহমুদউল্লাহও আগের দুই ম্যাচের অতৃপ্তি ভুলে গেলেন। ষষ্ঠ জুটিতে এলো ৭৭ রান। মাহমুদউল্লাহ, নাসিরের ব্যাটে জয় এলো বাংলাদেশের ঘরে। নাসির ৩৬ এবং মাহমুদউল্লাহ ৩২ রানে অপরাজিত।

ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশের উত্থানের এক নতুন গল্প লেখা হবে। বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিদায় নিশ্চিত করে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ। ফাইনালে আগে থেকেই তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো পাকিস্তান। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও আছে। বিশ্বকাপের আগেই এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন ভারত এবং রানার্সআপও শ্রীলঙ্কা। তাদেরকে হারিয়ে ফাইনাল খেলার আনন্দটাই আকাশছোঁয়া।

তাও কোন অবস্থা থেকে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ ভাবলে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। শ্রীলঙ্কাকে ২৩২ রানে অল-আউট করে দিয়েও স্বস্তি ছিলো না। লঙ্কানদের ইনিংসের শেষ দিকেই বৃষ্টির ছিটে লাগতে থাকে মাঠে। পরে অল্প সময়ের জন্য ভারি বৃষ্টি। নির্ধারিত সময়ে খেলা গড়াতে না পারায় ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৪০ ওভারে বাংলাদেশকে টার্গেট দেওয়া হয় ২১২ রানের। তা-ও জয় করে ফেলে বাংলাদেশ।

সৌভাগ্যবান হয়েই থাকলেন পেসার নাজমুল হোসেন। বদলি খেলার সুযোগ পেয়ে তিনি যত ম্যাচ খেলেছেন তাতে অর্ধেকেরও কাছাকাছি জয় আছে। এনিয়ে ৩৭ ওয়ানডে খেলে ১৮টিতে জিতেছেন নাজমুল।

শ্রীলঙ্কাকে ২৩২ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পেছনে স্লো মিডিয়াম এ পেসারের অবদান সবচেয়ে বেশি। মাহেলা জয়াবর্ধনে, তিলকারত্নে দিলশান ও কুমারা সাঙ্গাকারাকে আউট করে বোলিংয়ে দুর্দান্ত শুরু এনে দিয়েছিলেন তিনিই তো! টসে জেতার পর শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্তটা ঠিকই ছিলো। তাদের চতুর্থ জুটিতে থিরিমান্নে এবং কাপুগেদারা ৮৮ এবং পঞ্চম উইকেটে কাপুগেদারা এবং থারাঙ্গা ৪৯ রানের জুটি গড়তে না পারলে লঙ্কানদের স্কোর লাইন আরও নিচে থাকতো। কাপুগেদারা ৬২, থিরিমান্নে ও থারাঙ্গা সমান ৪৮ রান করে তুলেছেন।

বাংলাদেশ দলের বোলিং স্পেল ছিলো অসাধারণ–এটুকু বললেও বুঝি কম বলা হয়! মাশরাফি ৯.৫ ওভারে ৩০ রান দিয়ে এক উইকেট, নাজমুল আট ওভারে ৩২ রান দিয়ে তিনটি ও সাকিব, রাজ্জাক দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন।

জয়তু বাংলাদেশ! জয়তু, তামিম, সাকিব, নাসির, মাহমুদউল্লাহ—নক্ষত্রের মতো বাংলার আকাশ আলো করা জ্বলজ্বলে কয়েকটি নাম।। বিরল এই কৃতিত্বের দিনে মাঠ প্রদক্ষিণ না করলে পূর্ণতা পায় না। অনেক দিন পর বাংলাদেশ দলের সবাই একসঙ্গে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করলেন। যেন প্রদখ্ষিণ করে ফেললেন গোটা বাংলাদেশের হৃদয়! এখানে কিন্তু সাকিব ছিলেন সবার আগে। বিজয়ের পর উড়তে উড়তে মাঠে ঢুকেছিলেন।

ওহ, বাংলাদেশের ফাইনালের যাওয়া রহস্যটা বলে দেওয়া দরকার। ভারত এবং বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান হওয়ায় দুই দলের মুখোমুখিতে যে দল জিতেছে তারাই ফাইনালে। ভারতকে বাংলাদেশ হারিয়েছে, আর তাই তারই যোগ্যদল হিসেবে ফাইনালে। এখন কেবল বড় এক জয়ের হাতছানি—স্বপ্ন থেকে আরো বড় এক স্বপ্নের দিকে যাত্রা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ