জাতিসংঘের ৭০তম অধিবেশনে যোগদান শেষে শনিবার দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশে
ফেরার পর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে শনিবার ব্যাপক সংবর্ধনা দেয়ার বিশাল প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন পর্যরন্ত সড়কের দুই পাশে বিপুল জনসমাগম ঘটাতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ১৪ দল ও সমমনা বিভিন্ন সংগঠনও উদ্যোগ নিয়েছে।
জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ পাওয়ায় শনিবার বেলা দেড়টায় এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে বেলা একটায় ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছাবে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি।
বিমানবন্দরে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং সেখানে প্রথম সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনাকে ঘিরে রাজপথে সর্বস্তরের জনতার ঢল নামানোর সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি ঘটাতে একাধিক প্রস্তুতি ও যৌথ সভা করেছে ক্ষমতাসীন দলটি।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই সংবর্ধনা আয়োজিত হলেও ১৪ দলসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব দল ও সংগঠন এবং সব শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার ১৪ দলের এক যৌথ সভা থেকে সব রাজনৈতিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে সব শ্রেণীপেশার মানুষের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যান। সেখানে বিভিন্ন অধিবেশনে যোগদান ছাড়াও দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ এবং ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ গ্রহণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বিরল অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতেই তাকে বিমানবন্দরে বিশাল সংবর্ধনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
৫ অক্টোবর সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজায় ঢাকার দুই মেয়র রাজধানীবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেবেন।
সংবর্ধনার আট রুট
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাকলী-মহাখালী হয়ে গণভবন পর্যন্ত এ সংবর্ধনার আটটি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা ছাড়াও এমপিদের নেতৃত্বে দল ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ এসব রুটের রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।
এর মধ্যে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, জাহিদ আহসান রাসেল, আজমত উল্লাহ, জাহাঙ্গীর হোসেন ও ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত; রাশেদ খান মেনন, এ কে এম রহমত উল্লাহ ও সাবের হোসেন চৌধুরী খিলক্ষেত থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার; হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সানজিদা খানম কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে র্যা ডিসন হোটেল; কামাল আহমেদ মজুমদা র্যা ডিসন হোটেল থেকে কাকলি মোড় (বনানী); সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা কাকলি মোড় থেকে জাহাঙ্গীর গেট; আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আসলামুল হক আসলাম জাহাঙ্গীর গেট থেকে র্যাং গস ভবন; অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও হাজি মো. সেলিম র্যাং গস ভবন থেকে জাতীয় সংসদ ভবন এবং ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস জাতীয় সংসদ ভবন থেকে গণভবন পর্যন্ত এলাকায় সংবর্ধনার নেতৃত্বে থাকবেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সফল করার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আয়োজিত শুক্রবারের যৌথ সভায় ১৪ দল নেতারা ছাড়াও পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, কৃষিবিদ, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সাংস্কৃতিক কর্মী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ, নারী সংগঠন এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নেতারা যোগ দেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফলতার জন্য জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিকদের দুই ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও তাকে সংবর্ধনা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শনিবার দুপুরে দেশে এসে পৌঁছবেন। লন্ডন থেকে ঢাকা ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করবেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডনের সময় রাত প্রায় ৮টা ৩৫ মিনিটে দেশের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।