1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫০ পূর্বাহ্ন

আইভরির লোভে প্রতি বছর খুন ৫০,০০০ হাতি

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৫
  • ১৬৬ Time View

বিশ্ব হাতি দিবসে ঠিক কতটা নিরাপদ রয়েছে জঙ্গলের বিপুলদেহীরা? পরিসংখ্যান বলছে, চোরা শিকারের দাপটে অচিরেই নীল গ্রহ থেকে চিরবিদায় নিতে চলেছে হাতির পাল।image_135218_0

২০১২ সাল থেকে অগস্ট মাসের ১২ তারিখ বিশ্বজুড়ে পালিত হয় হস্তি দিবস। গজদন্তের লোভে নির্বিচারে হাতি বধ রুখতে সচেতনতা প্রচারের উদ্দেশ্যে দিনটি পালন করা শুরু করেন কানাডার দুই চিত্র নির্মাতা প্যাট্রিসিয়া সিমস ও মাইকেল ক্লার্ক। সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে সেই আন্দোলন ক্রমশ গতি পেয়েছে

ঐতিহাসিক কাল থেকেই হাতির দাঁতের প্রতি মানুষের অপরিসীম লোভ। সোনা-রুপো-হীরের পাশাপাশি শৌখিন দামি পণ্যের তালিকার প্রথম দিকে পাকা জায়গা করে নিয়েছে গজদন্ত, বিশ্ববাসী যাকে চেনে আইভরি নামে। শতকের পর শতক জুড়ে সেই মহার্ঘ্যের নেশায় বুঁদ শিকারির গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে হস্তিযূথ। আর নিরীহ প্রাণীর রক্তের বিনিময়ে সেজে উঠেছে সম্রাট থেকে আমির, কোটিপতি থেকে বিজনেস টাইকুনের দরবার। একদা সবুজ পৃথিবীর বুকে দাপিয়ে বেড়ানো অরণ্যের ‘শান্ত দৈত্যরা’ ক্রমে লুপ্তপ্রায় প্রাণীর তকমা পেয়েছে। বসতি বাড়ার মাসুল গুণতে গিয়ে জঙ্গল উচ্ছেদের স্রোতে ভেসে গিয়েছে তাদের বাসস্থান, খাদ্য সম্ভার। বাধ্য হয়ে তাই লোকালয়ে হানা দিতে শুরু করেছে হাতির দল। খেতের ফসল পাকলে দলমা পাহাড় থেকে ফি বছর নেমে আসে তারা। ঢুকে পড়ে পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমান মায় হুগলির জনপদে। কখনও পথভ্রষ্ট দলছুট হস্তি শাবক ঠাঁই পায় বন দপ্তরের জিম্মায়, আবার কখনও মেজাজ হারানো হাতির পায়ের নীচে অকালমৃত্যু ঘটে গ্রামীণ মানুষের। প্রতি বছর এদেশে এমন দৃশ্য যেন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন আফ্রিকায়। জিম্বাবোয়ে, তানজানিয়া, আইভরি কোস্ট, মোজাম্বিক-এ দিনের পর দিন চলেছে নিরবচ্ছিন্ন হস্তিবধ পালা। আফ্রিকার হাতির দাঁতের বহর তার দেহের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ভারতীয় হাতির তুলনায় বড়। স্বাভাবিক ভাবেই চোরা শিকারিদের নিশানায় পয়লা নম্বরে রয়েছে এই প্রাণী। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর অবৈধ আইভরি ব্যবসার কারণে প্রায় ৫০,০০০ আফ্রিকান হাতিকে খুন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক চাপকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, বিভ্রান্ত প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে সেই হত্যালীলায় নেতৃত্ব দিচ্ছে আইভরি মাফিয়া চক্রের চাঁই-রা।

গবেষকদের মতে, মহাদেশে প্রধানত দু’টি অঞ্চল থেকে আইভরি সংগ্রহ করে চোরা শিকারিরা। এই কারণে তানজানিয়া ও মোজাম্বিকের বড় অংশ জুড়ে নির্বিচারে হাতি মারা হয়। এছাড়া গ্যাবন, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র এবং ক্যামেরন-ও আইভরি শিকারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। ১৯৮৯ সালে লুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণ নিয়ে ব্যবসা রুখতে আনা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে অবাধে চলছে বেআইনি শিকার। কারণ যুগ যুগ ধরে হাতির দাঁতের কদর বেড়েছে বই কমেনি।

হস্তি সংরক্ষণের জন্য প্রাথমিক শর্ত সচেতনতা বৃদ্ধি। মানুষের অস্তিত্বের প্রয়োজনেই বন্যপ্রাণ রক্ষা জরুরি- এই উপলব্ধি যত দিন না মনে জন্মাবে, ততদিন পর্যন্ত নির্বিচারে চলবে হস্তিবধ যজ্ঞ। আর ততদিন ধরেই মানুষের লালসার খেসারত গুণে যেতে হবে বনের নিরীহ বাসিন্দাদের।

অতএব, নিছক পণ্যসুখের মোহে অবাধে নিরীহ প্রাণীহত্যা রোখার লক্ষই হোক বিশ্ব হস্তি দিবসের মূল অঙ্গীকার।– সংবাদসংস্থা

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ