1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন

মাকে কথা দিয়ে ফিরে গেলেন জামিনা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১ জুলাই, ২০১৫
  • ১০৪ Time View

jaminaজন্মের পর বিক্রি হওয়া খুলনার মেয়ে জামিলা আজ আমেরিকা প্রবাসী এস্থার জামিনা জডিং। ৩৭ বছর পর সে মাকে খুঁজে পেয়েছেন। আর মাকে দেখার জন্য ছুটে এসেছেন খুলনায়। ৩ দিন মায়ের সঙ্গে কাটিয়ে মঙ্গলবার বিদায় নিয়েছেন তিনি। বিদায় বেলায় অশ্র“সিক্ত নয়নে মা নূরজাহানকে বলে যান, ‘নো মোর ফিশিং।’
১৯৭৭ সালে খুলনার দাকোপ উপজেলার গুণারী গ্রামের নূরজাহান বেগম ও মোহন গাজী দম্পতির ঘরে পঞ্চম সন্তান হিসেবে জন্ম হওয়া মেয়ের নাম রাখা হয় জামিলা। তখন তারা বসবাস করতেন চালনায়। অভাবের সংসারের কর্তা অসুস্থ মোহন গাজী জন্মের ৫ দিনের মাথায় সুযোগ পেয়ে জামিলাকে খুলনার এজি মিশনে নিয়ে যান এবং সেখানে এক আমেরিকান দম্পতির কাছে ৫০০ টাকায় বিক্রি করে দেন। সেদিন নূরজাহান চালনায় খোয়া ভাঙার কাজ করতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে আর মেয়েকে পাননি। স্বামী মোহন তাকে জানান, মেয়েকে বারান্দা থেকে কেউ হয় তো নিয়ে গেছে। এর প্রায় ৮ মাস পর মেরি ও পেট দম্পতি খুলনার এজি মিশনে আসেন এবং তারা জামিলাকে দত্তক নিয়ে আমেরিকা চলে যান। এরপর জামিলা হয়ে যায় এস্থার জামিনা জডিং। লেখাপড়া শেষ করে জামিনা সেখানে চাকরি করছেন। তার রয়েছে তিন ছেলে। স্বামী ল্যান্স জডিং পেশায় কেমিস্ট।
২০১৩ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে জামিনার সঙ্গে পরিচয় হয় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশী নওরীন ছায়রার। সেই সূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগের আরেক মাধ্যম ফেসবুকে নওরীন ছায়রার ছোট বোন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শিক্ষিকা নাহিদ ব্রাউনের সঙ্গে পরিচয় হয় জামিনার। এরপর শুরু হয় শিকড়ের সন্ধান। জামিনার সেই সময়ের বাংলাদেশী পাসপোর্টের সূত্র ধরে তারা নিশ্চিত হন জামিনার বাড়ি ছিল খুলনায়। নাহিদ তার ফুফাতো ভাই খুলনায় কর্মরত আবু শরীফ হুসেন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি (শরীফ) প্রায় ১ বছর চেষ্টা করে জামিনার মা নূরজাহানের সন্ধান পান মংলায়। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জামিনা নিশ্চিত হন নূরজাহান বেগমই তার মা। ২৭ জুন নাহিদ ব্রাউনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে খুলনায় আসেন জামিনা। ২৮ জুন আবু শরীফের বাসায় দেখা হয় মা-মেয়ের। ২৯ জুন জামিনা যান দাকোপে নিজ বসতভিটায়। সেখানে তিনি তিন বোন ও রিকশাচালক ভাইয়ের সঙ্গে সারা দিন কাটান। সেখান থেকে সুন্দরবন বেড়াতে যান জামিনা। বিকালে খুলনার লবণচরা এলাকায় ফিরে আসেন। মঙ্গলবার প্রথম বেলা জামিনা লবণচরার গেস্ট হাউসে সময় কাটান। এখানে তার মাও ছিলেন। এখান থেকে বিকাল ৩টায় যশোর বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেন। ঢাকায় পৌঁছে ৪ জুলাই জামিনা আমেরিকার যাবেন।
নূরজাহান বেগম বলেন, ‘সব সময় মনে হতো আমার মেয়ে বেঁচে আছে। ওর আসার খবর শোনার পর ঠিকমতো খেতে পারিনি। রাতে ঘুমাতে পারিনি। কখন মেয়ের সঙ্গে দেখা হবে সে অপেক্ষায় সময় কেটেছে। এখন মেয়েকে দেখে চোখ জুড়ালাম। মেয়েকে নয়, যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি।’
সোমবার মংলায় মায়ের বাড়িতে এস্থার জামিনা জডিং সাংবাদিকদের বলেন, আমি ভীষণ খুশি। মাকে দেখার অপেক্ষা আর সইছিল না। বারবার গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল। ২ বছর চেষ্টার পর মা-মেয়ের মিলন হয়েছে। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর শিকড়ের সন্ধান পেলাম। মাকে পাওয়ার আনন্দটা সবার সঙ্গে শেয়ার করার জন্য শিগগিরই আমার স্বামী-সন্তানদের নিয়ে মংলায় আসব।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ