দেশের সরকার প্রধান বা প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে যেসব আনুষ্ঠানিকতা করার কথা এর কোনোটাই করা হয়নি সৌদি আরবের বাদশা আবদুল্লাহর ক্ষেত্রৈ। সাধারণ সাদা আবরণে অজ্ঞাত এক কবরে শুক্রবার চিরনিন্দ্রায় শায়িত হয়েছেন তিনি। তার পূর্ব পুরুষদের মতোই সাধারণ নাগরিকদের মত তাকে কবর দেয়া হয়েছে। সৌদি আরবের ওয়াহাবি মতবাদ অনুসারে লাশ নিয়ে আড়ম্বর এবং শোক প্রকাশ শিরকের শামিল।
বাদশার মৃত্যুতে সৌদি আরবে সরকারিভাবে কোনো শোক দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়নি, জাতীয় পতাকাও অর্ধনমিত রাখা হয়নি। তার মৃত্যুতে সৌদি আরবের রাজপথে কোনো শোক র্যা লিও হয়নি। শুক্রবার ও শনিবার যথারীতি অফিস বন্ধ থাকার পর রবিবার আবার খুলবে।
তবে জীবদ্দশায় বাদশায় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়ববহুল বিমানে ভ্রমণ করতেন। ২০০৬ সালে ফাঁস হওয়া মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তায় জানা যায় যে তিনি মার্কিন একজন কূটনীতিককে বলেছিলেন যে তার বিমানটিতেও যেন এয়ার ফোর্স ওয়ানের (মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান) মতই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংযোজন করে দেয় বোয়িং। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে বাদশা আবদুল্লাহ তার ভাই এবং ভাতিজাদের মত বিলাসী জীবন যাপন করতেন না। তিনি ছিলেন মিতব্যয়ী। মধ্যপ্রাচ্যের ব্যয়বহুল প্রাসাদে অবকাশ যাপনের পরিবর্তে তিনি মরুভূমির শিবিরে সময় কাটাতেন। ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের ব্যয় হ্রাসের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি প্রিন্সদের টেলিফোন বিল প্রদান এবং রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থায় ভ্রমণের জন্য আগাম বুকিংয়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত একটার সময় ইন্তেকাল করেন বাদশা আবদুল্লাহ। দীর্ঘদিন থেকেই নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন তিনি। আবদুল্লাহর মৃত্যুর পরপরই সৌদি আরবের পরবর্তী বাদশা হিসেবে সালমান বিন আব্দুল আজিজের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া রাজকুমার মাকরিন বিন আব্দুল আজিজকে ক্রাউন প্রিন্স (যুবরাজ) হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সূত্র: এএফপি, আলআরাবিয়া ও খালিজ টাইমস